Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যবহারে ঝুঁকছে কোকা কোলা

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভোক্তাদের সামনে সবুজের বার্তা নিয়ে কে কার আগে হাজির হবে, এ দৌড়ে নিজেকে সবার আগে রাখতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বিশ্বের বহুল জনপ্রিয় পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কোকা কোলা। প্যাকেজিংয়ে আরো বেশি পুনর্ববহৃত প্লাস্টিক ব্যবহার এবং আরো বেশিসংখ্যক বোতলের পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করতে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে তারা। এরই মধ্যে ২০২০ সাল নাগাদ কোকা কোলার সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইউরোপ শাখায় পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যবহার বাড়ানো কিংবা বোতলে আরপিইটি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের আগে সংসদ সদস্যদের কাছে বোতল ডিপোজিট স্কিমের বিষয়ে মতবিরোধ আছে বলে সাক্ষ্য দিলেও এখন তারা মত পাল্টেছে। বর্তমানে এ স্কিমকে পূর্ণ সমর্থন করছে তারা। এমনকি আসছে বুধবার বোতলে পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা এবং পুনর্ব্যবহারের বিষয়ে সহায়তা বাড়ানোর প্রসঙ্গে কোম্পানির পক্ষ থেকে ঘোষণা আসবে বলে খবরও মিলেছে। মূলত প্লাস্টিক ব্যবহারে পরিবেশবিদদের অব্যাহত চাপ এবং সা¤প্রতিক সময়ে প্রকাশিত নতুন এক পরিসংখ্যান যেখানে প্রতি মিনিটে বিশ্বজুড়ে ১০ লাখেরও বেশি প্লাস্টিকের বোতল কেনা হয় এমন তথ্যের ভিত্তিতে কোম্পানিটি এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। চলতি মাসে বার্তা সংস্থা গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিশ্বজুড়ে প্রতি মিনিটে ১০ লাখ প্লাস্টিক বোতল কেনে ভোক্তারা। প্রতি সেকেন্ডের হিসাব করলে সংখ্যাটি দাঁড়াবে ২০ হাজারে। ২০২১ সাল নাগাদ তা আরো বাড়বে, ২০ শতাংশ। এমনকি বছরে প্লাস্টিক বোতলের বিক্রি বাড়বে এক ট্রিলিয়নের অর্ধেকেরও বেশি। ফলে প্লাস্টিকের বোতল থেকে সৃষ্ট সঙ্কট জলবায়ু পরিবর্তনে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা অনেকের। এক দশক আগে যেখানে বার্ষিক প্রায় ৩০ হাজার কোটি পানীয় ভর্তি প্লাস্টিকের বোতল বিক্রি হতো, সেখানে গত বছর বিক্রি হয়েছে ৪৮ হাজার কোটিরও বেশি। ২০২১ নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৫৮ হাজার ৩৩০ কোটিতে। ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালসের গেøাবাল প্যাকেজিং ট্রেন্ডসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। আমস্টারডামভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিনপিস ইউকের জ্যেষ্ঠ সমুদ্র-বিশেষজ্ঞ লুইস এজ বলেন, কোকা কোলার মতো কোম্পানি তাদের বোতলগুলো শতভাগ পুনর্ব্যবহৃত উপাদান থেকে তৈরি করবেÑ মানুষের কাছে এটাই কাম্য। কিন্তু বিশুদ্ধ প্লাস্টিক হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো, কোকা কোলা যে পরিমাণ প্লাস্টিকের বোতল উৎপাদন করে সেগুলো কীভাবে কমিয়ে আনবে। প্রতি বছর এককভাবে ১০ হাজার কোটিরও বেশি প্লাস্টিকের বোতল তৈরি করে কোম্পানিটি। ফলে এ ধরিত্রীর জলবায়ুর ক্ষতিতে অবিরত নিজেদের ছাপ রেখে চলেছে তারা। গত মাসে বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি নির্জন দ্বীপে জমে থাকা প্রায় ১৮ টন প্লাস্টিকের সন্ধান পান। উল্লেখ্য, পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী দ্বীপগুলোর মধ্যে এটি একটি। যদিও কোকা কোলা বরাবরই বৈশ্বিক প্লাস্টিক ব্যবহারের গ্রিনপিসের দেয়া তথ্য অস্বীকার করে আসছে। পরিবেশগত প্রচারাভিযান পরিচালনাকারী এ গ্রæপটির দেয়া হিসাব অনুযায়ী, কোকা কোলা প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি প্লাস্টিকের বোতল উৎপাদন করে। সেকেন্ডের হিসাবে ৩ হাজার ৪০০-র মতো প্লাস্টিকের বোতল তৈরি করে। গ্রিনপিসের মতে, বিশ্বের শীর্ষ ছয় পানীয় প্রস্তুতকারী কোম্পানি যৌথভাবে গড়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক (পিইটি) তাদের পণ্যে ব্যবহার করে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যবহার বাড়ানোর কোনো লক্ষ্য নেই। প্লাস্টিকের পানীয় বোতলগুলো শতভাগ পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা সম্ভব, যা আরইপিটি হিসেবে পরিচিত। আর পরিবেশবাদীরা বড় পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে তাদের বোতলে পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্র্যান্ডগুলো এ বিষয়ে অনবরত তাদের অনীহা প্রকাশ করে আসছে। তবে পরিবেশবাদীদের দাবি, ভোক্তাদের চাপ এবং আমাদের সৈকতে যেভাবে প্লাস্টিকের পরিমাণ বাড়ছে, তাতে এ বিষয়গুলো আরো ভাবিয়ে তুলছে। গার্ডিয়ান, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ