Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গেইলের ‘মিশন ২০১৯’

ফেরার দ্বারপ্রান্তে পোলার্ড-ব্রাভোরা

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : একদিকে যখন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে ঘোর অন্ধকার, সেই একই কারণে সৃষ্ট কালো মেঘ কাটিয়ে আলোর পথে ফিরছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট। দেশটির ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের সঙ্কট এখন ইতিবাচক সুরাহার পথে। ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডবিøউআই) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডবিøউআইপিএ) সমঝোতা আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আগামী মাসের ইংল্যান্ড সফরেই দেখা যেতে পারে সব তারকা ক্রিকেটারসহ পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। তিন টেস্ট, ৫ ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলবে উইন্ডিজ।
আবারও তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সব সংস্করণে নির্বাচনের জন্য বিবেচিত হতে যাচ্ছেন ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, সুনিল নারাইন, ডোয়াইন ব্রাভোরা। এই ক্রিকেটারদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে নির্বাচনের পথে বড় বাধা ছিল বোর্ডের একটি নিয়ম। কোনো সংস্করণে জাতীয় দলে খেলতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেটেও সেই সংস্করণে খেলতে হবে। ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগ খেলে বেড়ানো গেইল-পোলার্ডরা ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন না। তবে প্লেয়ার্স ইউনিয়নের প্রস্তাবে রাজি হয়ে সেই নিয়ম শিথিল করতে যাচ্ছে বোর্ড।
সাবেক অধিনায়ক জিমি অ্যাডামস বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালক হওয়ার পর থেকেই সঙ্কট সমাধানের পথ খুঁজছিলেন। প্রধান নির্বাহী জনি গ্রেভেরও ছিল বড় ভূমিকা। ঘরোয়া ক্রিকেটে না খেলা ক্রিকেটারদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, এই সপ্তাহেই প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাব মেনে নেবে বোর্ড। ড্যারেন ব্রাভোর সঙ্গেও সমঝোতায় পৌঁছেছে বোর্ড। গত নভেম্বরে বোর্ড সভাপতি ডেভ ক্যামেরনকে সমালোচনা করে টুইট করার পর জিম্বাবুয়ে থেকে ফেরত পাঠানো হয় বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। নিষিদ্ধ হয়ে আছেন সেই থেকেই। সমঝোতা অনুযায়ী সেই টুইটগুলি মুছে ফেলবেন ব্রাভো।
সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটও দুঃসময়ের সুড়ঙ্গ থেকে অনেক দিন পর আলোর পথে।
এই আলো পথ পাড়ি দিতে যেতে হবে বহুদূর। ওয়ানডেতে এখন তারা ৯ নম্বরে, টেস্টে ৮। অতি নাটকীয় কিছু না হলে ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য তাদের খেলতে হবে বাছাইপর্ব। সেই দূরপথ অতিক্রমের স্বপ্ন দেখছেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিস গেইল। দুই বছরের বেশি হলো ওয়ানডে খেলেন না। বয়স ৩৭ পেরিয়ে গেছে বেশ আগেই। ২০১৯ বিশ্বকাপ নাগাদ বয়স হবে ৪০ ছুঁইছুঁই। বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত নয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবু সে বিশ্বকাপ খেলাই এখন গেইলের স্বপ্ন। যে স্বপ্নে নতুন রঙ চড়িয়েছে এই সমঝোতার খবর।
কদিন আগে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন গেইল। সেটি ছিল ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলে তার প্রথম ম্যাচ। ওয়ানডে সবশেষ খেলেছেন ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেদিন করেছিলেন ৮ ছক্কায় ৩৩ বলে ৬১ রান। টেস্ট সবশেষ খেলেছেন ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
জাতীয় দলে কোনো সংস্করণে খেলতে হলে সে সংস্করণে ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলতে হবে, বোর্ডের এই নিয়ম টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে দূরে রেখেছে গেইলদের। টি-টোয়েন্টির যাযাবর গেইল-ব্রাভোরা ঘরোয়া ক্রিকেটে শুধু টি-টোয়েন্টিই খেলেন।
এতেই নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন গেইল। বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, লক্ষ্য করছেন ২০১৯ বিশ্বকাপকে, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আমাকে মাঠে ফিরতে দেখে (টি-টোয়েন্টিতে) ভক্তরা খুশি হয়েছিল। আশা করি, সবকিছু আরও ভালো হবে। আশা করি, আরও কিছু ম্যাচ আমি খেলতে পারব। অবশ্যই ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলতে চাই আমি। খেলোয়াড় ও বোর্ডের মাঝে সঙ্কট কাটতে শুরু করেছে। আপাতত সবকিছু ভালো মনে হচ্ছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে, সেরা ক্রিকেটারদেরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মাঠে নামা নিশ্চিত করতে হবে।’
গেইলের স্বপ্নে বড় বাধা নিজের ফিটনেস। গত বেশ কিছুদিন ধরেই বিধ্বংসী চেহারায় নেই তিনি। মনে হচ্ছে, রিফ্লেক্স কমে গেছে বিস্ফোরক এই ওপেনারের। গেইল জানালেন, ফিটনেস নিয়ে খাটছেন তিনি, ‘এখনও আমি জিমে বেশ সক্রিয়, কাজ করে যাচ্ছি। চেষ্টা করছি শরীর ঠিকঠাক রাখতে। অনেক অনেক ভ্রমণ করতে হয় আমার। তাই চেষ্টা করছি সূচি ও ট্রেনিং ঠিকমত দেখভাল করতে।’
গেইল যে ম্যাচে ফিরলেন, সেই ম্যাচেই বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি করেছেন তার ওপেনিং জুটির সঙ্গী এভিন লুইস। ভারতের বিপক্ষে আগের টি-টোয়েন্টিতেও বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। লুইসের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ গেইলও, ‘ভারতের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি দুটি সেঞ্চুরি দারুণ ব্যপার। সে দেখতে ছোটখাট, কিন্তু দারুণ শক্তিশালী। এখনও তরুণ ও খুব ক্ষুধার্ত। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় একজন। আরও যখন ধারাবাহিক হবে, তখন সে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।’
এই সমঝোতার পর পারফরম্যান্সের উন্নতিও আশা করাই যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ