নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মোঃ আলতাফ হোসেন : আত্মবিশ্বাস গড়তে কারাতের কোনো বিকল্প নেই। সব বাবা-মা’ই তার সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সুস্থ, সবল ও স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তাই সচেতন বাবা-মা সুন্দর, সুস্থ, সবল ও স্বাবলম্বী করে সন্তানদের গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন খেলাধুলার পাশাপাশি মার্শাল আর্ট বা কারাতে প্রশিক্ষণে সন্তানদের আগ্রহী করে তুলছেন। শিশু-কিশোরদের যদি বিভিন্ন খেলাধুলার পাশাপাশি কারাতে চর্চায় উৎসাহী করে তোলা যায় তাহলে ওরা একটি সুস্থ, সুন্দর, স্বাবলম্বী জাতি উপহার দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে নারীদেরও আনতে হবে এই খেলায়। যদিও আগের চেয়ে নারীরা অনেক বেশি কারাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। মানসিক চাপ দূর করে নিজের কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে নিয়মিত মার্শাল আর্ট চর্চার কোনো জুড়ি নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্শাল আর্ট শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিসহ মানসিক হতাশা দূর করে। যেটা সারাদিন চনচমে মেজাজ রাখবে এবং আপনাকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলবে। প্রিয় পাঠক ‘আত্মরক্ষায় কারাতে’ ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ১৪তম পর্বে আজ আমরা ‘ছোটকী’ ইভেন্ট নিয়ে আলোচনা করবো।
ছোটকী............
ছোটকী প্রশিক্ষণের পূর্বে প্রশিক্ষনার্থীকে অবশ্যই ওয়ার্মআপ ও ব্যায়াম করে নিতে হবে। ব্যায়ামের আগে কিছুক্ষণ ওয়ার্মআপ করে নিলে ভালো হয়। আগে ওয়ার্মআপের মাধ্যমে পেশি গুলোকে প্রস্তুত করে না নিলে আহত হবার সম্ভাবনা থাকে। আমরা অনেকেই ব্যায়াম করার পূর্বে ওয়ার্মআপ করতে চাই না। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ওয়ার্মআপের মাধ্যমে আমাদের শরীরের পেশিগুলো ব্যায়াম করার উপযোগি হয়। আর সঠিক ওয়ার্মআপ করলে ব্যায়ামের সময় ইনজুরি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ব্যায়াম করার পর যখন শরীরটা নমনীয় হবে অর্থাৎ প্রশিক্ষণে উপযোগি হবে তখনই মূল কার্যক্রম শুরু করতে হয়।
আজ আমরা শিখবো কিভাবে ‘ছোটকীর’ মাধ্যমে আচমকা অর্থাৎ বøকের মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা করা যায়। ছোটকী করতে হলে শুরুতে আগের বøকগুলো করে নিতে হবে। পূর্বে করা হয়েছিল ১নং বøকে ‘ডোডকী’ ও ২নং বøকে ‘খাসিডাসী’। ‘ছোটকী’ শিখতে গিয়ে শিক্ষার্থীকে কিবাডাসী পজিশন থেকে প্রথমে দু’হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় কোমড়ে রাখতে হবে। এরপর হোইচ শব্দের মাধ্যমে প্রথম বামহাতে ও পরে ডান হাতে ‘ডোডকী’ করে পরে একই সঙ্গে ‘খাসিডাসী’ করার পর ছোটকী করতে হবে। খাসিডাসী পজিশন থেকেই ছোটকী করতে হবে। খাসিডাসী ডানটি ডান হাটুর উপরে বøক অবস্থায় ছিল সেই সঙ্গে বাম হাতটি ছিল মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় বাম কোমড়ে। এবার মুষ্টিবদ্ধ বাম হাতটি চলে যাবে পেটের সামনে বøক অবস্থায় এবং ডান হাতটি মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় ডান কোমড়ে চলে যাবে। পেট বরাবর মুষ্টিবদ্ধ বাম হাতের কনুই থাকবে সোজা নিচের দিকে। আর মুষ্টিবদ্ধ আঙ্গুলগুলোর অংশ পেটের বরাবর সোজা অবস্থায় ঠিক চোয়ালের নিচে অবস্থান করবে। এবার বাম হাতটি চলে যাবে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় বাম কোমড়ে আর ডান হাতে ‘ছোটকী’ করতে হবে হোইচ শব্দের মাধ্যমে। ঠিক একই কায়দায় বাম হাতে যেভাবে ছোটকী করা হয়েছিল ডান হাতেও ঠিক একই ভাবে তা করতে হবে। বাম হাতে ছোটকী করার সময় ডান হাত ছিল কোমড়ে। বাম হাতটি ছিল মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় সোজা বুক বরাবর। এবার ডান হাতে হোইচ শব্দের মাধ্যমে ছোটকী করতে হবে এবং বাম হাতটি মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় বাম কোমড়ে থাকবে। ডান হাতটি সোজা বুক বরাবর এবং কনুইর নিচের দিকে থাকবে। মুষ্টিবদ্ধ হাতটির যেদিকে আঙ্গুল রয়েছে সেটা বুক বরাবর সোজা থাকবে। এভাবে একবার বাম হাতে ও পরের বার ডান হাতে ছোটকী করে নিলে ভালো হয়। হাত বদল করে একাধিকবার ছোটকী করা যেতে পারে। তবে শিক্ষার্থীকে মনে রাখতে হবে আচমকা অর্থাৎ বøক হলো কারাতে প্রশিক্ষণের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ লেসন। আর এ লেসনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী নিজেকে আরো কৌশলী করে গড়ে তুলতে পারবে। তবে একসঙ্গে সবগুলো বøক, অর্থাৎ ডোডকী, খাসিডাসী এবং ছোটকী করে নেয়াটাই ভালো। ছোটকী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী শত্রæর কবল থেকে নিজেকে রক্ষার করার কৌশল রপ্ত করতে পারবে। আর এ ইভেন্ট প্রশিক্ষণে হাতের পেশির শক্তি যেমন বৃদ্ধি করে তেমনি প্রতিপক্ষের ছুরি কিংবা ঘুসির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়। আঘাত সামলে প্রতিপক্ষকে পাল্টা আক্রমণ করার মক্ষম সুযোগ থাকে ‘ছোটকী’ প্রশিক্ষণে।
লেখক: সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ, কারাতে কোচ ও
চেয়ারম্যান গ্রীণ ক্লাব, মানিকগঞ্জ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।