পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এই বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলাদেশ। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দশম জাতীয় সংসদের ১৬তম এবং বাজেট অধিবেশনের সমাপনি বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের বাজেটের ¯েøাগান ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ সময় এখন আমাদের’। আজকের বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাজেট থেকে ভ্যাট স্থগিত করা হয়েছে। ভ্যাট ধরে মোবাইল ফোন থেকে আয় হবে সেটা ধরে নিয়েই ২০ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হবে। ব্যাংক থেকে লোন নিতে হবে।
তিনি বলেন, তার সরকার মোট ১৪টি বাজেট দিয়েছে। এবারের মতো এত বড় বাজেট এর আগে কখনও দেয়া হয়নি। ২০০৫-০৬ সালে বাজেটের পরিমাণ ৬১ হাজার কোটি ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট। এডিপি ১ লাখ ৫৩ হাজার। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাজেট দিয়েছিলাম কাটছাট করিনি। পরিমাণ ব্যয় করে এডিপি ছিল ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকাই ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছি, বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি।
সংসদ নেতা বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনেকে ভুল ব্যাখ্যা করেন। বাজেট সম্পর্কে সরকারি দলের সদস্যরা সব চেয়ে বেশি সমালোচনা করেছেন। সরকারের সমালোচনা করেছেন। সংসদ সদস্যরা জনপ্রতিনিধি। তারা স্বাধীনভাবে বক্তব্য রেখেছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে এটা প্রমাণিত সত্য।
তিনি বলেন, বড় বড় পত্রিকা বড় হেডলাইন করে। ১ লাখ কোটি টাকার উপরে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কোনো সরকার করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ করেছে। একটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। এবারও ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এটাও পূরণ করতে পারব। সেই বিশ্বাস আছে। মন্ত্রী এমপিদের অনুরোধ করব। নিজ নিজ এলাকায় যে সব প্রকল্প আছে সেগুলোতে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেগুলো যেন যথেচ্ছভাবে খরচ না হয়।
ভেড়া চাষে কৃষককে ঋণ দেয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
ভেড়ার উৎপাদন বাড়িয়ে তা বাজারজাতকরণের সুবিধার জন্য সমবায় গঠনের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ভেড়ার উৎপাদন বাড়াতে এ খাতে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোরও আশ্বাস দেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশি ভেড়ার পশম, পাট ও সুতার মিশ্রণে তৈরি বিভিন্ন পণ্য হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে ভেড়ার পশম ও পাট মিলিয়ে এসব পণ্য তৈরি করেছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্যান্ট ও বেøজারের কাপড়, শাল, কম্বল, জায়নামাজ, পাপোষ, ডাইনিং ও ফ্লোর ম্যাট। পণ্যগুলো তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে এগুলো বাজারজাতকরণের নির্দেশ দেন। দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও পাঠানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ভেড়ার মত অন্যান্য গৃহপালিত পশুর মাংস ছাড়াও হাড় ও চামড়া থেকে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিরও আহŸান জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধুর সময় সমবায়ের ভিত্তিতে ‘মিল্ক ভিটা’ প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সমবায় ভিত্তিতে করলে তারা বাজারজাতকরণের সুবিধা পাবে। যদি আমরা কো-অপারেটিভের মাধ্যমে দিতে পারি, তাহলে সেটার বাজারজাতকরণের সুবিধাটাও তারা পাবে। কাজেই আমি মনে করি ওভাবে আমাদের একটা উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ। তাতে মানুষ আরো উৎসাহিত হবে।
ভেড়ার মাংসে ছাগলের চেয়ে চর্বির পরিমাণ কম থাকার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকিও কম। এছাড়া ছাগলের চেয়ে কষ্টসহিঞ্চু পরিবেশে বেড়ে উঠা ভেড়ার লোম ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভেড়ার মাংসের চাহিদা বাড়লেও বাংলাদেশে এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়নি। ভেড়ার চাষও তুলনামুলকভাবে কম। অনুষ্ঠানে মৎস ও প্রাণী সম্পদ সচিব মাকসুদুল হাসান জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৪ লাখ ভেড়া রয়েছে, যা থেকে বছরে প্রায় ৩২শ থেকে ৩৪শ টন পশম পাওয়া যায়। দেশের বরেন্দ্র, যমুনা ও উপকূলীয় নামে তিন প্রজাতির ভেড়া রয়েছে। এসব ভেড়া ১৫ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। সচিব জানান, বিদেশ থেকে বেশি ওজনের তিন প্রজাতির ভেড়া আনা হয়েছে। এসব ভেড়া থেকে ২৮টি বাচ্চাও হয়েছে। গরু পালনের মত ভেড়া পালনেও ৫ শতাংশ হারে ঋণ দিলে ভেড়া পালন আরো বাড়বে বলে জানান সচিব।
সহজ ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাভী পালনে আমরা যদি ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারি তাহলে ভেড়া, ছাগল, মোষ এগুলিতে দিতে পারব না কেন? দিলে মানুষ আরো উৎসাহিত হবে। তবে শুধু উৎপাদন করলেই তো হবে না। সেগুলি যদি সাথে সাথে বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা যদি না করে দেই, তাহলে কিন্তু কোনোটাই টিকবে না। স্থায়ী হবে না। তিনি বলেন, আমাদের কিন্তু গরু ও ছাগল কোরবানি দেওয়ারই রেওয়াজটা আছে। এখনো ভেড়া কোরবানির ব্যাপারে কোনো আগ্রহ কারো নেই, দেয়ও না। এগুলো আস্তে আস্তে উৎসাহিত করা যায়। ধান, মাছসহ বিভিন্ন ফসল ও খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর পেছনে গুবেষণার ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা ১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এসে গবেষণার ওপর গুরুত্ব না দিলে এগুলো কিন্তু হত না। গবেষণাটার মাধ্যমে আমরা কিন্তু অনেক কাজ করতে পারি। একইসঙ্গে কালো ছাগল উৎপাদনসহ অন্যান্য দুগ্ধ ও প্রাণিজ আমিষ উৎপাদন বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের পদক্ষেপের কারণে দেশ সবদিক দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। একসময় পুষ্টিহীনতায় ভুগত। মানুষ একবেলাও খাবার পেত না। এখন বাংলাদেশে তা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।