মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিন দিনের সফরটি ঐতিহাসিক। কারণ, ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর এটিই প্রথম ইসরাইল সফর। তাই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও প্রোটোকল ভেঙে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ভারত ইসরাইলের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৯২ সালে। স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি এবং সুপার পাওয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উত্থানে দিল্লি বুঝতে পারে, তেল আবিবের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে ওয়াশিংটন থেকে বাড়তি সুবিধা আদায় করা যেতে পারে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক থাকায় তাদের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় দিল্লি আরও বেশি সচেষ্ট হয়। মোদির সফরে উভয় দেশই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছে। প্রতিরক্ষার জন্য ইসরাইল, ভারতকে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। ভারতের অস্ত্রভাÐারে সরবরাহকারীর তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে এই দেশ। অপরদিকে, ভারত হলো ইসরাইলি অস্ত্রের সবচেয়ে বড় বাজার, এক হিসাবে ইসরাইলি অস্ত্রের বাজারের অর্ধেকই ভারতে। পুরনো যুগের রুশ প্রতিরক্ষা অস্ত্রগুলো প্রতিস্থাপনে নতুন উৎস খুঁজছিল ভারত। কিন্তু পরমাণু অস্ত্র বিস্তার নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (নন-প্রোলিফিকেশন ট্রিটি) ভারতের অনাগ্রহের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ দেশটিতে অস্ত্র রপ্তানির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সেক্ষেত্রে, অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহের ক্ষেত্রে ইসরাইলকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে পায় ভারত। ২০১৬ সালে এসে ভারত-ইসরাইল এই অস্ত্র বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, বর্তমানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হচ্ছে ইসরাইল। ভারতে ব্যবহৃত ইসরাইলি অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে আছেÑ বোয়িং ই-থ্রি সেন্ট্রি (কৌশলগত সামরিক বিমান), ড্রোন, রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং লেজার-নিয়ন্ত্রিত বোমা। ইসরাইলের মহাকাশযান প্রস্তুতকারক সংস্থাটি স¤প্রতি ভারতের সঙ্গে ৬৩ কোটি ডলারের নতুন একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় ভারতীয় নৌবাহিনী ভূ-পৃষ্ঠ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পেতে যাচ্ছে। আরও বেশ কয়েকটি চুক্তি এখন প্রক্রিয়াধীন। জম্মু ও কাশ্মির থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ভারতে জঙ্গি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও ইসরাইলের প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করছে দিল্লি। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে ভয়াবহ হামলার পর এসব ক্ষেত্রে ভারতের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপরও বেশ কয়েকবার হামলার শিকার হয় দেশটি। ফলে ইসরাইলের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদবিরোধী পদক্ষেপে সহযোগিতা শুরু করে ভারত। ইসরাইল ও ভারতের জঙ্গি কার্যক্রমে পার্থক্য থাকা সত্তে¡ও এই সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে দেশ দুটি। নব্বইয়ের দশক থেকেই ইসরাইল থেকে সামরিক ও বেসামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য অস্ত্র আমদানি করে আসছে ভারত। এ কারণে ওয়াশিংটনের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয় দিল্লিকে। তবে ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের পরমাণু চুক্তির পর পারমাণবিক অস্ত্র বাণিজ্যের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। ভারত-ইসরাইল সম্পর্কের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দেশ দুটির মধ্যে অর্থনৈতিক বন্ধুত্ব। স¤প্রতি মোদির ইসরাইল সফরে ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে ছয়টি চুক্তি হয়। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ছাড়াও চুক্তিগুলোর আওতায় আছে উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন। সাবেক কূটনৈতিক দেবনাথ শ জানান, মোদির এই সফরে যে চুক্তিগুলো হয়েছে, তা দুই দেশের উন্নয়নেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর মনে করেন, ইসরাইলি প্রযুক্তির ফলে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের দ্বিগুণ আয়ের যে লক্ষ্য সরকার ঠিক করেছে, তা পূরণ হবে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইন্দো-ইসরাইলি সম্পর্ককে স্বর্গীয় উল্লেখ করেছেন। ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে তারা আরও উন্নত হতে পারে। ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।