পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে গতকাল সকাল ৯টায় তাকে ভর্তি করা হয়। এর আগে গত সোমবার রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের একটি এ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকায় আনা হয়। শিশু মুক্তামনির বাবা সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেন জানান, মেয়েকে তিনি ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছেন। সকাল ৯টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ডা. সামন্ত লাল সেনের তত্ত¡াবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এ জন্য আট সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।
শিশু মুক্তার মা আয়েশা খাতুন জানান, ডা. সামন্তলাল তাদের মেয়ের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। বর্তমানে তার রক্তশূন্য দেহে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া উন্নত মানের খাবার খাইয়ে তাকে সুস্থ করে তুলবার পর মূল চিকিৎসা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার। এখন মেয়ের রোগমুক্তি নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন মুক্তামনির মা। চিকিৎসক জানিয়েছেন, শুধু অবহেলার কারণেই আজ মুক্তামনির করুণ পরিণতি। তবে মুক্তামনি দ্রæত সেরে উঠবেন বলে জানান ডা. সামন্তলাল সেন।শিশুটির চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। শিশুটির এমন অবস্থার জন্য শুধু অবহেলাকেই দায়ী করেন চিকিৎসক। খুলনার আবুল বাজানদারের মতো মুক্তামনিও সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এ রকম জটিল রোগীরা গ্রামে সামান্য চিকিৎসা পায়। অর্থ না থাকায় ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না। এমনকি এসব রোগীদের বিষয়ে প্রশাসন সঠিকভাবে জানে না। তিনি বলেন, মুক্তামনি এবং পেটে বিশাল টিউমার নিয়ে বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের সবুজের বিষয়টি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আর তাই সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তামনির চিকিৎসা চলছে। ইতোমধ্যে খোঁজ নিয়েছি। সঠিক চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দু’একদিনের মধ্যেই টিউমার আক্রান্ত সবুজকেও ঢাকায় এনে চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়া তিনি জানান, এ রকমই মুখে বড় আকারের টিউমার হওয়া সিরাজগঞ্জের ৩০ বছর বয়সী এক নারীর চিকিৎসা চলছে রাজধানীর ডেন্টাল কলেজে। মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত এ ধরণের রোগীদের তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেলে সবসময়ই পাশে দাড়াবে। এটা আমাদের দায়িত্ব।
প্রসঙ্গত, ১২ বছরের শিশু মুক্তামনির দেহে জন্মের দেড় বছর পর একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত ডানহাত এখন ছোট আকারের গাছের গুড়ির রূপ নিয়ে প্রচন্ড ভারি হয়ে উঠেছে। এতে পচন ধরেছে। পোকাও জন্মেছে। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকে মুক্তামনি। আক্রান্ত স্থান থেকে বিকট গন্ধ ছুটছে। এ রোগ তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স¤প্রতি মুক্তামনির এই বিরল রোগ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সরকারিভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। গত সোমবার দুপুরে তিনি খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন। একই সঙ্গে যত দ্রæত সম্ভব সাতক্ষীরার সিভিল সার্জনের মাধ্যমে কিশোরী মুক্তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেন। আর তাই সরকারি ব্যবস্থাপনায় মুক্তামনির চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।