Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পলিতে ভরাট হওয়া চলনবিলাঞ্চলের নদ-নদী পানিশূন্য সেচ সংকটসহ নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা

প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফতাব হোসেন, চাটমোহর (পাবনা) থেকে
নদী বিধৌত চলনবিল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলো প্রতি বছর প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে এবং বড়াল নদীর উৎস মুখে রেগুলেটর স্থাপনের কারণে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় দিন দিন নাব্যতা হারিয়ে সংকীর্ণ হচ্ছে। ফলে শুকনো মৌসুমের শুরুতেই নদীগুলো শুকিয়ে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কৃষি নির্ভর এই চলনবিল অঞ্চলে সেচ সংকট দেখা দেয়ার পাশাপাশি নদী কেন্দ্রীক ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। মাছ সমৃদ্ধ চলনবিল অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ও অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষা করার জন্য বড়াল নদীর ঊৎস মুখে একটি স্লুইচগেট নির্মাণ করা হয়। অথচ ভুল পরিকল্পনার কারণে এই স্লুইচগেট নিমার্ণে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে দীর্ঘকাল যাবৎ পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বড়াল নদীতে বদ্ধ থাকায় নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। এতে করে চলনবিল অঞ্চলে ৯টি উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলার প্রায় ২৫ লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। পদ্মার স্রোত ধারা এখন আর বড়াল, নন্দকুঞ্জা, গুমানী ও আত্রাই নদীতে প্রবাহিত হয় না। ফলে গুরুদাসপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর হয়ে প্রায় ২শ’ কিলোমিটার নদী পথ ও চলনবিল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে সেচ কাজের জন্য কাটা ক্যানেল প্রায় ৫০ কিলোমিটার নদী পথ পলি পড়ে প্রশস্থতা ও গভীরতা হারিয়ে ফেলেছে। নদী পয়স্তী এলাকার দু’পাড়েই গড়ে উঠেছে বসত বাড়ি। এ সকল নদী পয়স্তী এলাকার মানুষ নদী চরে চাষ করছে নানা ফসলের। অন্যদিকে নদীগুলোর প্রশস্থতা ছিল দেড় থেকে দুই হাজার ফুট। সেখানে প্রশস্থতা ও গভীরতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বর্তমানে বর্ষাকাল ছাড়া বাকি সময় এসব নদ-নদীতে পানি থাকে না। আবার শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্বেচ্ছা শ্রমে বাধ নির্মাণ করে ক্যানেলের মাধ্যমে পানি প্রবাহিত করে ইরি-বোরো ধানের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা হতো। ১৯৮৪ সালে বড়াল নদীর উৎস মুখে রেগুলেটর স্থাপন করায় এখন এসব নদী ইতিহাস মাত্র। নদীর ধারে ও নদীর চরে ধান ও বিভিন্ন ফসলের চাষ হচ্ছে। অন্য দিকে নৌপথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে নদী ভিত্তিক ব্যবসা বাণিজ্যে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শুকনা মৌসুমে শ্যালো ও হস্তচালিত নলকূপে পর্যাপ্ত পানি উঠে না। সেচ কার্যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নদ-নদীর নাব্যতা হারোনোর ফলে প্রতি বছর অকাল বন্যার কড়াল গ্রাসে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। মৎস্য সম্পদ বিলুপ্ত হচ্ছে। পরিবেশ হয়ে উঠছে রুক্ষ। উল্লে­খিত নদ-নদী ও কাটা খালগুলো (ক্যানেল) পুনঃখনন ও অভিশপ্ত বড়াল রেগুলেটরটি অপসারণ করে পদ্মার পানি প্রবাহ বাড়ানো হলে চলনবিল অঞ্চলের ২৫ লক্ষাধিক মানুষের প্রভুত উপকার সাধিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প

৭ মার্চ, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ