নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় উপহারটা কি মঈন আলীর কাছ থেকেই পেয়ে গেলেন জো রুট? হয়তোবা। টেস্টের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী দল ইংল্যান্ডে দায়ীত্ব পেয়ে প্রথম ম্যাচেই পেলেন জয়ের দেখা। তাও আবার দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলকে দুমড়ে-মুসড়ে দিয়ে। এজন্য সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ প্রপ্তির দাবিদার মঈন। লর্ডসে অনুষ্ঠেয় ৪ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টটি পঞ্চম দিনে যেতে দিলেন না তো মঈন আলী একাই। ডানহাতি স্পিন-অলরাউন্ডার ৫৩ রানের খরচায় ৬ উইকেট তুলে নিয়ে প্রেটিয়াদের গুটিয়ে দিলেন মাত্র ১১৯ রানে। ইংলিশরাও পেয়ে যায় ২১১ রানে বিশাল জয়।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতেও রুটের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মঈন। ষষ্ঠ উইকেটে রুট-মঈনের ১৭৭ রানের জুটিতেই তো ৪৫৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় ইংলিশরা। ১৪৭ বলে মঈন করেন ৮৭ রান। পরে বল হাতেও সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের ৩৬১ রানে বেঁধে রাখতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন। সব মিলে এই প্রথম ইনিংসে দশ উইকেট পেলেন মঈন। পঞ্চম দ্রæততম খেলোয়াড় হিসেবে এই টেস্টেই প্রবেশ করেন ২০০০ রান ও ১০০ উইকেটের ক্লাবে। তাছাড়া ১৯৮০ সালে ইয়ান বোথামের পর এই প্রথম কোন ইংলিশ হিসেবে একই টেস্টে ফিফটি ও দশ উইকেটের কৃতিত্ব দেখালেন ৩০ বছর বয়সী।
ফলে দল তো জয় পেয়েছেই, ব্যাক্তিগতভাবেও অনেক এগিয়ে গেলেন মঈন। স্বদেশী বেন স্টোকসকে টপকে উঠে এসেছেন টেস্ট অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ের চারে। প্রথমবারের মত বোলার র্যাংকিংয়েও উঠে এসেছেন সেরা দশে (নয় নম্বরে)। প্রথম ইনিংসে ১৯০ রানের ব্যাক্তিগত ইনিংস খেলে সামনে থেকে নেতৃত্ব শুরু করেন রুট। পুরস্কারস্বরুপ কেন উইলিয়ামসনকে টপকে উঠে এসেছেন ব্যটিং র্যাংকিংয়ের দুইয়ে।
লর্ডসের চতুর্থ দিনে পড়েছে মোট ১৯ উইকেট। ১ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে ২৩৩ রানে শেষ হয় স্বাগতিক দ্বিতীয় ইনিংস। কেশভ মহারাজ নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। তখনই বোঝা গিয়েছিল ভয়ঙ্কর সময়ই অপেক্ষা করছে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যে। এমনিতেই স্পিন বলে বার বার খাবি খেতে দেখা যায় প্রেটিয়াদের। এরপর বাউন্সের সাথে ভয়ঙ্কর সব টার্ন তাদের জন্যে কাজটা আরো কঠিন করে তোলে। ৩৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিনিয়ে আনতে ১৫০ ওভারেরও বেশি সময় ছিল ডেন এলগারদের হাতে। কিন্তু তারা গুটিয়ে গেল মাত্র ৩৬.৪ ওভারে। ইংল্যান্ড সফরে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় হারের সাক্ষিও হতে হল আমলা-ডুমিনিদের।
এমন হারের পর বাড়তি দন্ড হিসেবে এসেছে রাবাদার নিষেধাজ্ঞা, চোটজর্জর দলে বোলিংয়ের আরেক প্রধাণ ভরসা হয়ে থাকা ভারনন ফিল্যান্ডারেরও ইনজুরির কারণে পরের ম্যাচে খেলা নিয়ে রয়েছে শংশয়। সব মিলে নির্মম হতাশাময় একটা ম্যাচই পার করলেন এলগার। অথচ অধিনায়কত্বের অভিষেকটা জয়ে মুড়ে রাখার সুযোগ ছিল তার সামনেও। এখন তিনি সান্ত¦না খুজছেন নিয়মিত অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে ফিরে পাওয়াতে, ‘যেভাবে আমরা হেরেছি তাতে আমরা হতাশ। তবে একটাই খুশির বিষয়, ফাফকে আমরা ফিরে পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘রাবাদার মত বোলারকে হারানো দলের জন্য বড় ধাক্কা, আশা করি ভারনন পরের ম্যাচে ফিট থাকবে।’
ম্যাচ শেষে রুটের প্রথম বাক্যই ছিল, ‘অসাধারণ শুরু। বুঝতেছি না খুশিটা কিভাবে প্রকাশ করব তবে সবকিছুতেই আমি খুশি।’ ব্যাটিংয়ে পাশে থাকার পর ফিল্ডার ও বোলার মঈনকেও কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি রুট, ‘আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটা জুটি হেয়েছিল। পরে ফিল্ডিং ও বোলিংয়েও মঈন আক্রমনাত্বক মনোভাব দেখিয়েছে।’ অবশ্য জয়ের কৃতিত্ব দলের পুরো সদস্যদেরই দিলেন নতুন ইংলিশ দলপতি, ‘ছেলেদের কাছে আমি যেমনটা চেয়েছিলাম তারা সেভাবেই সাড়া দিয়েছে।’
আগামী ১৪ জুলাই নটিংহামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৪৫৮ ও ২য় ইনিংস : ২৩৩।
দ.আফ্রিকা ১ম ইনিংস : ৩৬১ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৩১) ৩৬.৩ ওভারে ১১৯ (এলগার ৯, আমলা ১১, ডুমিনি ২, ডি কক ১৮, বাভুমা ২১, ফিল্যান্ডার ১৯*; অ্যান্ডারসন ১/১৬, মঈন ৬/৫৩, উড ১/৩, ডসন ২/৩৪)।
ফল : ইংল্যান্ড ২১১ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মঈন আলী (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ : ৪ ম্যাচে ইংল্যান্ড ১-০ তে এগিয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।