নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : ‘সিরিজে জিম্বাবুয়ে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। তারা যে এতটা ভালো খেলবে, তা আমরা ভাবিনি। হয়তো জিম্বাবুইয়ানরাও ভাবেনি’- শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের করা ভবিষ্যদ্বানীই ফলে গেল অক্ষরে অক্ষরে।
শুরুতে বল হাতে পথ দেখিয়েছিলেন সিকান্দার রাজা। পরে ব্যাটিংয়ে দলের বিপদে ত্রাতা তিনিই। রাজার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে ৩ উইকেটে জিতে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কাকে কোনো সিরিজে হারালো জিম্বাবুয়ে। গতকাল হাম্বানটোটার মাহিন্দা রাজাপাকসা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২০৩ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৩৮ ওভার ১ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে। ৩-২ ব্যবধানে এই সিরিজ জেতার আগে টেস্ট খেলুড়ে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে শেষবার জিতেছিল সেই ২০০১ সালে বাংলাদেশের মাটিতে। এছাড়া ৮ বছর পর দেশের বাইরে কোনো সিরিজ জিতল দেশটি।
দুই দশকেরও বেশি সময় পর শ্রীলংকায় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছে জিম্বাবুয়ে। তাছাড়া লঙ্কানদের বিপক্ষে কখনো সিরিজ জিততে পারেনি তারা। সফরটা তাই স্বরনীয় করে রাখার সুযোগ ছিল তাদের সামনে। সেই পথটা কি খুব সহজ ছিল?
ফেভারিট হিসেবেই যে সিরিজ শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু খর্বশক্তির জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দেয়ার মিশন মুখ থুবড়ে পড়ে প্রথম ম্যাচেই। শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম দল হিসেবে তিনশ তাড়া করে ম্যাচ জেতে জিম্বাবুয়ে। পরের দুই ম্যাচে লংকানরা ঘুরে দাঁড়ালেও চতুর্থ ম্যাচে আবার নিজেদের সামথ্যের জানান দেয় সফরকারীরা। বৃষ্টি আইনে ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজে ২-২ সমতা আনে ক্রেইগ আরভিনের দল। সিরিজের শেষ ম্যাচটি তাই রূপ নিয়েছিল ‘অঘোষিত ফাইনালে’। সেটিই জিতে শুধু ইতিহাসই সৃষ্টি করেনি, বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের অস্তিত্বরও জানান দিল জিম্বাবুইয়ানরা।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় গৌরবের মুহূর্ত এসেছিল ২০০০-০১ মৌসুমে। সেবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ফ্লাওয়ার ভাই, ক্যাম্পবেল-স্ট্রিকদের জিম্বাবুয়ে। কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল ২০০১-০২ মৌসুমে। সে সময়ের ‘নবীন’ টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেই এসেছিল সেই বিজয়।
এরপর কেটে গেছে ১৬ বছর। ২০০৮ সালে ক্রিকেটের ‘প্রায় হারিয়ে যাওয়া শক্তি’ কেনিয়ার বিপক্ষে একটি সিরিজ জেতা ছাড়া বিদেশে সিরিজ জয়ের স্বাদ আর পাওয়া হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে কিছুদিন আগে তো আফগানিস্তানের কাছেও সিরিজ হারের লজ্জা পেতে হয়েছে তাদের। এর আগে-পরে ২০১৫ ও ২০১৭ সালের ফেব্রæয়ারিতে ঘরের মাটিতে আফগানদের কাছে তারা সিরিজ হারে।
৯০ এর দশকের অপ্রতিরোধ্য জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট হঠাত করেই দুমরে মুচড়ে যায় বোর্ডের রাজনীতেই! এরপর থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর অনেক চেষ্টাতেও সফল হতে পারেনি সেভাবে, তবে হাল ছাড়েনি কখনোই। অভিজ্ঞ হ্যামিলটন মাসাকাসজা, ক্রেমার, আরভিন, এমপফুদের সাথে এই দলটাতে এখন আছে একঝাক তরুণ প্রতিভা। তাদের সম্বলিত প্রচেষ্টতেই হয়তো ঘুরে দাঁড়াবে আফ্রিকা মহাদেশের এই দলটি। নিজেদের হারিয়ে খোঁজা জিম্বাবুয়ের তবে কি এবার সুদিন আসছে?
শ্রীলঙ্কা : ৫০ ওভারে ২০৩/৮ (গুনাথিলকা ৫২, ম্যাথিউস ২৪, গুনারতেœ ৫৯*, চামিরা ১৮*; রাজা ৩/২১, চটারা ১/৪৯, ক্রেমার ২/২৩, উইলিয়ামস ১/৪১, ওয়ালার ১/২১)।
জিম্বাবুয়ে : ৩৮.১ ওভারে ২০৪/৭ (মাসাকাদজা ৭৩, মিরে ৪৩, মাসাকান্দা ৩৭, রাজা ২৭*, ক্রেমার ১১*; মালিঙ্গা ২/৪৪, গুনারতেœ ১/২৩, দনাঞ্জয়া ৪/৪৭)।
ফল : জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)।
সিরিজ : ৫ ম্যাচে ৩-২ ব্যবধানে জয়ী জিম্বাবুয়ে।
সিরিজ সেরা : হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (জিম্বাবুয়ে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।