পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুলনা ব্যুরো : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের খুলনার প্রতিনিধি সম্মেলনে নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য দল ভারী করবেন না। সদস্য সংগ্রহ অভিযানকালে সা¤প্রদায়ি, গণবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী নয় এমন লোকদের দলে ভিড়াবেন না। ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন। তাহলে ভবিষ্যতে নিজেরা ভালো থাকবেন। তিনি আরো বলেন, এটাই সত্য যে নেতাদের মধ্যে রয়েছে খাই খাই আর নিজেদের পকেট ভারী করার প্রবণতা রয়েছে। অথচ তৃণমূলের কর্মীরা কষ্ট করে জীবিকা নির্বাহ করছে। যাদের মাথার উপরে ছাদ পর্যন্ত নেই। নেতাদেরকে হুশিয়ার করে তিনি বলেন, আমি মন্ত্রী। আমার স্ত্রী ভাই বোন পিএস এপিএস আত্মীয়-স্বজন যদি দুর্নীতিবাজ হয় তাহলে আমি সৎ থাকব কিভাবে? তাই আপনারা আপনাদের নিজস্ব ভাই বোন আত্মীয়রা যদি অসৎ দুর্নীতিবাজ হয় তাদেরকে বর্জন করুন।
তিনি আরো বলেন, দলের কর্মীদের মধ্যে বিভেদ নেই, বিভেদ নেতাদের মধ্যে। নির্যাতিত কর্মীরা স্বীকৃতি চায়। আর নেতাদের মানষিকতা খাই খাই। নেতাদের অপকর্ম সংশোধন না হলে তাদের বর্জন করুন। দল ভারী করার জন্য কোন খারাপ লোকদের নেয়ার প্রয়োজন নেই। বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ নালিশ পার্টিতে রূপান্তিরত হয়েছে। দেশে বিদেশে শুধু নালিশ আর নালিশ। ঈদের পরে তারা আন্দোলন করার হুমকি দিয়েছিল। এরপর বলবে, কুরবানী ঈদের পর আন্দোলন করব। তারপর বলবে শীতকালে করব। এটাই কি তাদের আন্দোলন? আন্দোলনের নামে তো ৮টি বছর কেটে গেল। আসলে তারা আন্দোলনের নামে যে মিথ্যা প্রহসন করতে চেয়েছে তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। আর যারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয় তারা নির্বাচনেও পরাজিত হয়। তাই ব্যর্থ আন্দোলনকারী বিএনপি আগামী নির্বাচনে পরাজিত হবে এটা নিশ্চিত। বিএনপির আন্দোলনের ডাক আষাঢ়ের তর্জন-গর্জনের মতোই। তিনি আন্দোলনের নাম উচ্চারণ না করে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আমন্ত্রণ জানান। তিনি আরো বলেন, আমরা আমন্ত্রন না জানালেও বিএনপি এবার নির্বাচনে অংশ নেবে তাতে কোন ভুল নেই। কারণ নির্বাচনে অংশ না নিলে আরো গণবিকৃত হবে।
তিনি নেতাকর্মীদেন উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করুন। সামনে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। মানুষের দ্বারে দ্বারে যান। ভুল হলে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করুন। জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আ’লীগের প্রতিপক্ষ আ’লীগ না হলে জাতীয় নির্বাচনে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। মাদককে না বলার জন্য তিনি গোটা তরুণ সমাজকে অঙ্গীকার করান। ইয়াবার মরণ ছোবল সম্পর্কে তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। মটর সাইকেলে ৩জন না চড়ার এবং হেলমেট পড়ার আহবান জানান তিনি।
গতকাল রবিবার দুপুরে জেলা স্টেডিয়ামে খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় আ’লীগ এ সভার আয়োজক। বেলা ১১টায় এ সভা শুরু হয়।
প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্য পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি’র বক্তৃতা করেন শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি, আব্দুর রহমান এমপি, বস্ত্র ও পাটপ্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, বাংলাদেশ আ’লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি, হুইপ সোলাইমান জোয়াদ্দার সেলিম, বীরেন্দ্র শিকদার এমপি, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর, খুলনা জেলা সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, নগর সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি, সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি মনসুর আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যশোর জেলা সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার, মাগুরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পঙ্কজ ভট্টাচার্য, নড়াইল জেলা সভাপতি সুভাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন খান নিলু, বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি ডা: মোজাম্মেল হোসেন এমপি, সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি সরফুদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি আব্দুল হাই এমপি, মেহেরপুর জেলা সভাপতি ফরহাদ হোসেন, এ্যাড: সাইফুল ইসলাম ও খুলনা মহানগরীর ১৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি শেখ আবিদ উল্লাহ।
এসময় শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে শেখ হাসিনাকে পূনরায় নির্বাচিত করতে হবে। তার পূর্বশর্ত হচ্ছে তৃণমূলের বিভেদ ভূলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আ’লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হলে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি চীর দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। দেশের উন্নয়নের ৮ বছর তুলে ধরে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। সেই সাথে উৎপাদনের জন্য অন্যতম শক্তি বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। এদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
এছাড়া আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকার ৮ বছরে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছে। সফল সরকারকে আগামী দিনে নির্বাচিত করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে বিভেদ ভূলতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে সু-সংগঠিত কর্মী বাহিনীর জন্যই আজকের এই বিভাগীয় প্রতিনিধি সভার আয়োজন। বাংলাদেশের মানুষ বিএনপি-জামায়াতের যে অন্ধকারে পৌছে দিয়েছিল আজ সেই দেশকে শেখ হাসিনা সরকার মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। শেখ হাসিনা সরকার ধ্বংসের স্তুপের ওপর সুখী সমৃদ্ধশীল করেছে। এ সরকার ক্ষমতায় এসে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট এখন উৎপাদন হচ্ছে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য তৃৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি আহŸান জানান।
তিনি বলেন, যারা অপরাধ করবেন তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে। বিএনপি নেতারা বলছেন, বিএনপি নির্বাচনের কথা শুনে আ’লীগের কম্পন শুরু হয়েছে। এটি একটি হাস্যকর বিষয়। নির্বাচনে আসতে আ’লীগ ভয় পায় না। ২০১৪ সালে দেখা গেছে ভয় কারা পেয়েছিল। আ’লীগের ক্ষমতার উৎস জনগন।
অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন আ’লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আমিরুল আলম মিলন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, ১৫ আগস্টে শহীদ এবং মহানমুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন আলিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু হুসাইন মোহাম্মদ জাকারিয়া। গীতা পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নিমাই চন্দ্র রায়। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলের নেতাকর্মীরা প্রতিনিধি সভায় অংশ নিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।