Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দারিদ্র্য কবলিত আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম

| প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মুক্তবাজার বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাতিন আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন মরিসিও মাকরি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দারিদ্র্যের বেড়াজাল থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করবেন। ক্ষমতার দেড় বছর অতিবাহিত হয়েছে, অথচ এখন পর্যন্ত দেশটির এক-তৃতীয়াংশ মানুষের ভাগ্য দারিদ্র্যে বন্দি। ২০১৫ সালে পর পর দু’বার ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ কির্চনারের সুদীর্ঘ ১২ বছরের ক্ষমতার অবসানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেন কোটিপতি ব্যবসায়ী ও সাবেক ফুটবলার মরিসিও মাকরি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের যে লক্ষ্য নিয়ে মাকরি ক্ষমতায় এসেছেন, তা এখনো বাস্তবে রূপ নেয়নি। অর্থনৈতিক পুনরুত্থান চলছে খুব ধীরগতিতে। স¤প্রতি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মাকরির প্রধান কর্মকর্তা মারকোস পেনা। তিনি বললেন, স্বর্গ অনায়াসেই হাতের মুঠোয় চলে আসবে, এমন ভাবনা ঠিক নয়। আমাদের সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর মাকরি সরকারি খাতে স্থিতিশীলতা এনে হারানো সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেন। রফতানি ও মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ বাতিল করেন। আর্জেন্টিনাকে আরো প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে পেসোর অবমূল্যায়ন করেন। মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার জোর প্রচেষ্টাও চালান। গত বছর দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ৪০ শতাংশ, ফলে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছিল দেশটির জনগণ। মে মাসে পেনা বলেন, আর্জেন্টিনা মন্দা থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা এতে সন্তুষ্ট নন। সরকারের ১৮ মাসের মেয়াদে আর্জেন্টিনা বিনিময় হারের বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। তা সত্তে¡ও সামগ্রিক অর্থনীতির কোনো বদল হয়নি, পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে। এদিকে আর্জেন্টিনীয় ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, এখনো দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দারিদ্র্যের চাপে পিষ্ট। ইউনাইটেড নেশন্স চিলড্রেন ফান্ডস বা ইউনিসেফ এক পরিসংখ্যানে দেখায়, আর্জেন্টিনার অর্ধেক শিশু দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। শুধু তাই নয়, ইউনিয়নগুলো বলছে, মাকরি আসার পর থেকে ১১ হাজার সরকারি এবং দুই লাখ বেসরকারি খাতের কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়েছে। এর প্রমাণ মেলে ব্যবসা-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ম্যারিয়ানো মেয়ারের কথাতেও। তিনি বলেন, গত বছর ছয় হাজারের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া গত মাসে বহুজাতিক খাদ্য এবং পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পেপসিকো বুয়েন্স আয়ার্সে তাদের কারখানা বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে কারখানার শ্রমিক স্বার্থ সংরক্ষণকারী ইউনিয়নের একজন প্রতিনিধি ক্যামিলো মন্তেস বলেন, আমাদের ছয় শত শ্রমিক একেবারে রাস্তায় বসে গেছে। আমাদের সব পাওনা মিটিয়ে দেয়া হোক তা চাই না, কেননা এক বছর পরে হয়তো আমাদের হাতে খাওয়ার মতো কোনো অর্থ থাকবে না। এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ