বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আনোয়ারুল হক আনোয়ার ও আকতার হোসেন হাতিয়া থেকে : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাতিয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে- চরকিং ইউনিয়ন, চরঈশ্বর ইউনিয়ন, তমরদ্দি ইউনিয়ন, বুড়িরচর ইউনিয়ন, সোনাদিয়া ইউনিয়ন, জাহাজমারা ইউনিয়ন ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রার্থীরা প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে। এর মধ্যে কোথাও দ্বিমুখী আবার কোথাও ত্রিমুখী প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে বলে বিভিন্ন এলাকার সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের পাশাপাশি ধানের শীষ ও আনারস মার্কা নিয়ে বেশ কয়েকজন ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষে দেড় শতাধিক আহত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। চরঈশ্বর ইউপির নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী চেয়ারম্যান ঘাটে হামলার শিকার হন। এছাড়া চরকিং ইউপিতে আনারস মার্কা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বৃদ্ধ পিতা প্রতিপক্ষের হাতে গুলিবিদ্ধ হন। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হামলায় অন্তত ১০ জন মেম্বার প্রার্থী আহত হয়। এছাড়া রাতের বেলায় চোরাগোপ্তা হামলা, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী কর্মকাÐ শুরু হয়। গত দুইদিন বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কোন সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
বিগত কয়েকটি নির্বাচনের আলোকে হাতিয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচন উপলক্ষে ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও কোন কোন এলাকায় হুমকি ধমকসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় ঘরমুখো নিরীহ লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত থাকে। কখন কার উপর চোরাগোপ্তা হামলা পরিচালিত হয় তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। ফলে সন্ধ্যার পর গৃহকর্তা ও পরিবারের সদস্যরা আতঙ্ক অবস্থায় সময় অতিবাহিত করছে। অপরদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা গুজবের কারণে ভোটের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। রাতের বেলায় গুজব রটিয়ে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকদের উপর চোরগোপ্তা হামলা যেন সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফলে গত কয়েকদিনের সংঘটিত কর্মকাÐে সচেতন মহল অতিষ্ঠ। ৭টি ইউনিয়নে নৌকা, ধানের শীষ ও আনারস প্রতীকের প্রার্থীদের সাথে আলাপকালে তারা সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মনোভাব ব্যক্ত করলেও ভোটররা বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বললেও এখনো তাদের অন্তরে পরিষ্কার হয়নি। তাদের ভাষায়, হাতিয়ার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সর্বাগ্রে প্রয়োজন উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকল প্রার্থীকে মুক্ত মঞ্চে হাজির করে জনসাধারণের সম্মুখে প্রতিশ্রæতি প্রদান করতে হবে। তাহলে অন্তত দ্বীপবাসী নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ওসি (তদন্ত) ইনকিলাবকে জানায়, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের দিক-নির্দেশনা মোতাবেক কাজ চলছে। সুতরাং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে স্থানীয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারী হিসাব অনুযায়ী হাতিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে নলচিরা ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ড এবং সুখচর ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ড মেঘনা নদীগর্ভে বিলীন হয়। অথচ এ দু’টি ইউপিতে সরকারী বরাদ্দসহ অব্যাহত থাকলেও জনসাধারণ সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে হরনী ইউনিয়ন ও চানন্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।