Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গো-রক্ষার নামে সহিংসতার বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিতে ব্যাপক বিক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে গরুকে কেন্দ্র করে উন্মত্ত জনতার সহিংসতার বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিতে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রোববার যন্তর মন্তরের ওই বিক্ষোভ সমাবেশে হরিয়ানার মেওয়াতি সমাজের মানুষজনের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা অংশগ্রহণ করেন।
স্বরাজ অভিযানের আহ্বায়ক যোগেন্দ্র যাদব ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলেন, ‘এদেশের মাটি আরএসএসওয়ালাদের বেশীদিন সহ্য করবে না। এ ধরণের নৃশংস কাজকর্মের বিরুদ্ধে আমরা জয়ী হবো। ভারত জয়ী হবে।’
যাদব বলেন, ‘গরুকে কেন্দ্র করে হত্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিতে কোনও সত্যতা, সমবেদনা বা সংকল্প কিছুই ছিল না। যদি সত্যতা থাকতো তাহলে প্রধানমন্ত্রী মেনে নিতেন আমাদের দেশে বিজেপি রাজত্বে হত্যা হচ্ছে। যদি সমবেদনা থাকতো, হৃদয়ে বেদনা অনুভব করতেন তাহলে প্রধানমন্ত্রী নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেতেন, দুঃখ প্রকাশ করতেন। যদি কোনও সংকল্প থাকত তাহলে তিনি বলতেন যারা এ ধরণের কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে সাজা দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে বিবৃতিতে কোনও সত্যতা নেই, সমবেদনা নেই, কোনও সমাধান নেই তা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির কাছে কীভাবে মলমের কাজ করবে?’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি গো-রক্ষার নামে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি বিজেপিশাসিত হরিয়ানার বাসিন্দা হাফেজ জুনাঈদ খান (১৬) ঈদের বাজার নিয়ে ট্রেনে করে ফেরার পথে হিন্দুত্ববাদী উগ্র ধর্মান্ধদের গণপিটুনি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন। পাশবিক ও ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন অংশে প্রতিবাদ আন্দোলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রোববার দিল্লির বিক্ষোভকারীরা পরপর গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার হন। বিক্ষোভে গণপিটুনিতে নিহত হাফেজ জুনাঈদ খান এবং পহেলু খানের পরিবারের লোকজন ছাড়াও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিখোঁজ হওয়া নাজিব আহমেদের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা গো-রক্ষার নামে সহিংসতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সা¤প্রতিক মন্তব্যকে লোক দেখানো বলে অভিহিত করেছেন।
একটি ভিডিও চিত্রে প্রকাশ, বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ‘মোদি সরকার, মুর্দাবাদ’ শ্লোগান দেন। তারা ‘মুসলিমদের উপরে অত্যাচার বন্ধ করো’ ইত্যাদি শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া হাজার দুয়েক প্রতিবাদীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন যুব স¤প্রদায়ের। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওই যুবকরা বলেন, ‘এবার মুসলিমদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। যদি এ ধরনের ঘটনা চলতে থাকে তাহলে দেশের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।’
এক যুবক বলেন, ‘যদি ক্ষুব্ধ মুসলিমরা হামলাকারীদের মতোই জবাব দেয়া শুরু করে তাহলে কী হবে?’ প্রতিবাদকারীদের কাশিম মেওয়াতি নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘গো-রক্ষার নামে সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী যে বিবৃতি দিয়েছেন তা আসলে রাজনৈতিক স্ট্যান্ট। আমরা প্রতীকিভাবে যন্তর মন্তরে প্রতিবাদে শামিল হয়েছি। যদি এসব ঘটনা বন্ধ না হয় তাহলে গোটা দেশ জুড়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে।’
এদিকে, সম্প্রতি ঝাড়খন্ডের রামগড়ে গরুর গোশত বহনের অভিযোগে মুহম্মদ আলিমুদ্দিন নামে যে ব্যক্তিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গণপিটুনিতে হত্যা করে উগ্র হিন্দুত্ববাদী একদল উন্মত্ত জনতা সেই ঘটনায় বিজেপির রামগড় ইউনিটের মিডিয়া ইনচার্জ নিত্যানন্দ মাহাতসহ তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।



 

Show all comments
  • Miah Muhammad Adel ৪ জুলাই, ২০১৭, ১০:৫১ এএম says : 0
    এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে মানষ কি বুঝে গরুকে মাতা বলতে পারে তা কেউ যদি সবাইকে বুঝাতে পরতো। চেহারায় মিলল থাকায় বিবর্তনবাদী প্রাণীবিজ্ঞিনীরা বানরকে মানুষের পূর্বপুরুষ ধারণা করে থাকেন।ধর্মও বিজ্ঞানে গরুকে কি করে মানুষের সম্পর্কের মধ্যে আনা যায় তা বুঝা দুষ্কর। মনে হয় গো-রক্ষার নামে মুসলমান নিধনের পরিকল্পনা। একটা মানুষের জীবন থেকে একটা পশুর জীবন বড় করে দেখার মস্তিস্ক এখনও এই সভ্য সমাজে রয়েছে।
    Total Reply(1) Reply
    • M. M. Adel ৪ জুলাই, ২০১৭, ৫:৪৭ পিএম says : 4
      India needs another Raja Ram Mohan Roy.
  • Shahinoor Rahman ৪ জুলাই, ২০১৭, ১১:৪৩ এএম says : 3
    India is our best friend. So no commands.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ