পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন করে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটারের সংখ্যাকে প্রাধান্য দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে বড় বড় শহরের সংসদীয় আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করার কথাও ভাবছে ইসি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংলাপে রাজনৈতিক দলসহ সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের মতামতকে নিয়েই সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির মতামত জানানোর পর জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যাকে বিবেচনায় নিয়ে এবার সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি কমিটি রয়েছে। আমরা এ লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করব শিগগির। সেক্ষেত্রে জনসংখ্যা ও ভোটার অনুপাতকেও প্রাধান্য দিয়ে কাজ করব। নির্বাচন কমিশনের খসড়া কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা প্রতি বছর হালনাগাদ হওয়ায় সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি না করে ভোটারসংখ্যা বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। এর সঙ্গে বড় বড় শহরের আসনসংখ্যা সীমিত করে দিয়ে আয়তন, ভৌগোলিক অখন্ডতা ও উপজেলা ঠিক রেখে এবার সীমানা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে সোয়া ১৫ কোটি জনসংখ্যা রয়েছে। এর মধ্যে ১০ কোটি ১৮ লাখেরও বেশি নাগরিক ভোটার হয়েছেন। সেক্ষেত্রে প্রতি আসনে গড়ে ৫ লাখেরও বেশি জনসংখ্যা এবং ৩ লাখ ৪০ হাজারের মতো ভোটারসংখ্যার কম-বেশিকে বিবেচনায় কাজ করতে হবে। এর আগে ২০০১ সালের আদমশুমারির জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচন প্রাক্কালে সংসদীয় সীমানার ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের সীমানা বেশিরভাগ বহাল রাখা হয়। তবে নবম ও দশম সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসন পুনর্বিন্যাসের সমালোচনা করে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের আসন বিন্যাস পুনর্বহাল করার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর বলেন, আমরা যৌক্তিক বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে চাই। জনসংখ্যা ও ভোটার বাড়লেও আসনসংখ্যা তিনশ’র বেশি হচ্ছে না। তবে অতীতে কোনো জেলায় আসন বেড়েছে, আবার কমেছেও। কেন কমানো-বাড়ানো হয়েছে তা পর্যালোচনা করে যতদূর সম্ভব অখন্ডতা বজায় রেখে আসন পুনর্বিন্যাস করা হবে। এর আগে সবার মতামতও নেয়া হবে।
অক্টোবর পর্যন্ত সংলাপের মধ্যেই আগস্ট থেকে সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। কমিশন বলছে, সময়ের পরিবর্তনে এবং জনমানুষের শহরমুখী প্রবণতার কারণে বড় বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যা বেড়েছে। জনসংখ্যার আধিক্য অথবা ঘনত্ব বিবেচনা করা হলে শহুরে এলাকায় সংসদ সদস্যের সংখ্যা বাড়বে; পল্লী অঞ্চলে আসনসংখ্যা কমে যাবে। ফলে শহর এবং পল্লী অঞ্চলের সংসদীয় আসনের বৈষম্য সৃষ্টির সুযোগ হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান সীমানা পুনর্নির্ধারণ অধ্যাদেশে প্রশাসনিক সুবিধা এবং ভৌগোলিক এলাকা যতখানি সম্ভব অখন্ড রাখার কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী সংশোধনীতে জনসংখ্যার কথা বলা হলেও ভোটারদের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২০১১ সালের আদমশুমারির প্রকাশিত প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরির মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে কমিশন।
প্রথম সংসদ ও দ্বিতীয় সংসদের আসন বিন্যাস : ১৯৭৩ সালে দিনাজপুরে ১০, রংপুরে ২২, বগুড়ায় ৯, রাজশাহীতে ১৭, পাবনায় ১২, কুষ্টিয়ায় ৭, যশোরে ১৩, খুলনায় ১৪, পটুয়াখালীতে ৭, বাখরগঞ্জে ১৭, টাঙ্গাইলে ৯, ময়মনসিংহে ৩২, ঢাকায় ৩০, ফরিদপুরে ১৯, সিলেটে ২১, কুমিল্লায় ২৬, নোয়াখালীতে ১৪, চট্টগ্রামে ১৮ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ২টি আসন করা হয়। ১৯৭৯ সালে এসে একটি করে আসন বাড়ে দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা; ২টি আসন বাড়ে ঢাকা ও ফরিদপুরে। একটি করে কমেছে পটুয়াখালী, বাখরগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও সিলেটে এবং ২টি আসন কমে কুমিল্লায়। ময়মনসিংহের ৩২টি আসনের মধ্যে ময়মনসিংহ ২৪ ও জামালপুর ৮টি করা হয়।
তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন বিন্যাস : রাজশাহীতে ৫, সিরাজগঞ্জে ৭, সাতক্ষীরায় ৫, বরগুনায় ৩, পিরোজপুরে ৪, কিশোরগঞ্জে ৭, মানিকগঞ্জে ৪, মুন্সীগঞ্জে ৪, ঢাকায় ১৩, ফরিদপুরে ৫, কুমিল্লায় ১২, চাঁদপুরে ৬ ও চট্টগ্রামে ১৫টি আসন ছিল। পার্বত্য এলাকায় দু’টি আসন করা হয়।
নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে আসন বিন্যাস : একটি করে আসন বাড়ে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে। পার্বত্য চট্টগ্রামেও একটি আসন বাড়ানো হয়; খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান। সেই সঙ্গে ঢাকায় ৭টি আসন যুক্ত হয়। এর বিপরীতে সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পিরোজপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, কুমিল্লা ও চাঁদপুরে একটি করে আসন কমেছে। পঞ্চগড়ে ২, ঠাকুরগাঁয়ে ৩, দিনাজপুরে ৬, নীলফামারী ৪, লালমনিরহাট ৩, রংপুর ৬, কুড়িগ্রাম ৪, গাইবান্ধা ৫, জয়পুরহাট ২, বগুড়া ৭, নবাবগঞ্জ (নওয়াবগঞ্জ) ৩, নওগাঁ ৬, নাটোর ৪, পাবনা ৫, মেহেরপুর ২, কুষ্টিয়া ৪, চুয়াডাঙ্গা ২, ঝিনাইদহ ৪, যশোর ৬, মাগুরা ২, নড়াইল ২, বাগেরহাট ৪, খুলনা ৬, পটুয়াখালী ৪, ভোলা ৪, বরিশাল (বাখরগঞ্জ) ৬, ঝালকাঠি ২, টাঙ্গাইল ৮, জামালপুর ৫, শেরপুর ৩, ময়মনসিংহ ১১, নেত্রকোনা ৫, গাজীপুর ৪, নরসিংদী ৫, নারায়ণগঞ্জ ৫, রাজবাড়ী ২, গোপালগঞ্জ ৩, মাদারীপুর ৩, শরীয়তপুর ৩, সুনামগঞ্জ ৫, সিলেট ৬, মৌলভীবাজার ৪, হবিগঞ্জ ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬, ফেনী ৩, নোয়াখালী ৬, ল²ীপুর ৪ ও কক্সবাজারের আসনসংখ্যা ৪ হুবহু থেকে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।