পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাময়িক বরখাস্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আলোচিত কর্মচারী জয়নাল আবেদিনকে এবার চট্টগ্রামে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের ঘটনায় নগরীর খুলশী থানার একটি মামলায় সোমবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এর আগে তাকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গ্রেফতার জয়নাল আবেদিনের (৪২) বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালে গ্রেফতারের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন জানিয়েছেন, ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের ঘটনায় গত ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন সহকারী আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নগরীর খুলশী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সর্বশেষ জয়নাল আবেদিনসহ এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সংস্থার পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, গ্রেফতার চারজনের কাছ থেকে আমরা তথ্য পেয়েছি- জয়নাল আবেদিন তাদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে লোকজন সংগ্রহ করেন জন্ম নিবন্ধনের জন্য। এরপর যে প্রক্রিয়া সেটি জয়নালই সম্পন্ন করেন। আমাদের ধারণা, মূল সার্ভারে প্রবেশ কিংবা হ্যাক করার বিষয়ে তার কাছে তথ্য আছে। এজন্য আমরা তাকে গ্রেফতার করে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছি।
গত ২৪ জানুয়ারি আব্দুর রহমান আরিফ (২৫), দেলোয়ার হোসেন সাইমন (২৩), মোস্তাকিম (২২) এবং তার শ্যালক ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছিল কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। খুলশী থানার মামলায় সাইমন, মোস্তাকিম ও আরিফ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এরপর গত ২৫ জানুয়ারি নগরীর ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করানোর অভিযোগে মনি দেবী নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর ইপিজেড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাকিব হোসেন হিমেল (২৭) নামে এক কম্পিউটার দোকানিকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি ওই নারীকে অবৈধভাবে জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করে দিয়েছিলেন।
গত ৮ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নগরীর ৬টি ওয়ার্ডে ৭৯৭টি ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের প্রমাণ পাবার তথ্য দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা, ১৪ নম্বর লালখান বাজার, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা এবং ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে এসব জালিয়াতির ঘটনায় তিনটি মামলা ও একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। নগরীর খুলশী থানায় দু’টি ও হালিশহর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলা তদন্ত করছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এর আগে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও এনআইডি পাইয়ে দেয়া নিয়ে প্রথম জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটন হয়। ২০১৪ সালে মিয়ানমার থেকে আসা রমজান বিবি নামে এক নারী ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়ে তৈরি করেন জাল এনআইডি। স্মার্ট কার্ড নিতে চট্টগ্রামের জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে সন্দেহবশতঃ তাকে জেরা করা হয়। দেখা যায়, তার জন্মসনদ জাল। অথচ সেই জন্মসনদ ব্যবহার করে তৈরি করা পরিচয়পত্রের তথ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাÐারে সংরক্ষিত আছে। এ ঘটনার পর নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিন, এনআইডি উইংয়ের কর্মী শাহনূর মিয়া, অস্থায়ী কর্মী মোস্তফা ফারুক, মো. শাহীন, মো. জাহিদ হাসান এবং পাভেল বড়ুয়াসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছিল কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তাদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
জয়নাল আবেদিনের কাছ থেকে পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে প্রকাশ হয়, ইসি’র হারিয়ে যাওয়া ল্যাপটপ ব্যবহার করে ২০১৫ থেকে ২১০৯ সাল পর্যন্ত মোট ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং তাদের এনআইডি পাইয়ে দেয়া হয়। এদের প্রায় সবাই রোহিঙ্গা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।