Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

টাকা নিয়ে তোলপাড়

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের আমানতের হিড়িক

| প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

টাকা পাচার অস্বীকার করার উপায় নেই : ড. ফরাস উদ্দিন
অবৈধ অর্থ লুকাতেই সুইস ব্যাংকে রাখছে : ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকৃত কারণ বলতে পারবে : অধ্যাপক আবু আহমদ
দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকাই দায়ী : অধ্যাপক ড. প্রিয়ব্রত পাল
টাকা পাচারের প্রকৃত কারণ শনাক্ত জরুরী : অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন
আর্থিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাই দায়ী : ড. ইফতেখারুজ্জামান
স্টালিন সরকার : বাংলাদেশীদের সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে টাকা জমা রাখার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার খবরে সর্বত্রই তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যপক হৈচৈ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নানা তীর্যক মন্তব্য আসছে। দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী নেতারা টাকা পাচার করে সুইস ব্যাংকে রাখার প্রবণতায় বিষ্ময় প্রকাশ এবং কারণ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। সুশীল সমাজের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দেখা যাচ্ছ। তারা বৈধ-অবৈধ পথে দেশ থেকে টাকা নিয়ে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে রাখার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার জন্য দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনা, আস্থাহীনতা, ব্যাংকগুলোতে অর্থ রেখে মুনাফা না পাওয়া, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব, বিনিয়োগ করলেও নিরাপত্তার অভাব, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংক আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করাকেই দায়ী করেছেন। ব্যবসায়ী নেতাদের মতে দেশে বিনিয়োগ অবকাঠামোর উন্নয়ন হলে অর্থপাচার কমে যাবে। অর্থনীতিবিদদের মতে, অবৈধ অর্থ আড়ালের পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতা ও আস্থাহীনতাও সুইস ব্যাংকে টাকা রাখার কারণ। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ, সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, জগন্ন্াথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অর্থনীতির বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. প্রিয়ব্রত পাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ প্রসঙ্গে সুচিন্তিত বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ কমে গেলেও এক বছরে বাংলাদেশ থেকে জমা রাখার পরিমাণ বেড়েছে। এই সময়ে জমার পরিমাণ বেড়েছে শতকরা ২০ শতাংশ। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদন ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৬’ তথ্য হলো- এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশীদের এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ জমা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে। দেশটির ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ ২০১৫ সালে ছিল ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ। সেটা ২০১৬ সালে বেড়ে হয়েছে ৬৬ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ (এক সুইস ফ্রাঁ = বাংলাদেশের ৮৬ টাকা)। শুধু সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের টাকা জমা রাখাই নয়; বাংলাদেশীরা বিদেশে যে বিপুল পরিমান অর্থ পাচার করছে তা গত বছর পানামা পেপারস কেলেঙ্কারীতেও উঠে আসে। গত বছর পানামা ভিত্তিক আইন প্রতিষ্ঠান মোসাক ফোনসেকোর অভ্যন্তরীণ পৌনে তিন টেরাবাইট নথি ফাঁস হয়ে যায়। জার্মানির একটি স্থানীয় পত্রিকা সে তথ্য প্রকাশ করে। পত্রিকাটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনমূলক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসর (আইসিআইজে) অর্থ পাচারে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করে। অর্থ পাচারের তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে বাংলাদেশের ২৬ জন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ পায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে এ নিয়ে নাকানিচুবানি খেতে হলেও তালিকায় থাকা বাংলাদেশী কারো বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে বলে শোনা যায়নি। বরং সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের টাকা জমার রাখার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবর প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশীদের যে অর্থ জমা রাখার পরিমাণ বলা হচ্ছে তার পুরোটাই বাংলাদেশ থেকে গেছে বিষয়টি এমন নয়। দেশের বাইরে বৈধ ভাবে যারা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী ও সুইজারল্যাÐে বসবাসকারী বাংলাদেশীরাও সে দেশের ব্যাংকে অর্থ জমা রাখেন।
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থ জমা রাখা প্রবণতা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, সুইচ ব্যাংকে টাকা পাচার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে বক্তব্য দিয়েছে তারা কিসেই ভিত্তিতে তা দিয়েছে আমি জানি না। তবে বিগত ১১ বছরে দেশ থেকে যে ৬ হাজার ৫শ কোটি ডলার পাচার হয়েছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে বাংলাদেশী যারা প্রবাসে থাকেন তাদের অনেকেই সম্পদশালী। তারা আগ থেকেই সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখেন। সেখানে অর্থ টিআইএম দিয়ে রাখলে শতকরা ১০ সুদ এবং এমনিতেই রাখলে শতকরা ১৫ সুদ দেয়। ব্যাংকে অর্থ জমা রেখে এই মুনাফা হয়। এটাও ঠিক ২০১৪ সালে আÐারইনভয়েসিং এবং ওভারইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ৯শ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলোতে টাকা রেখে খুব বেশি মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে না। বরং আমানতকারীদের মূলধন লোকসান হচ্ছে। এ কারণে যাদের সুযোগ আছে তারা টাকা বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া দেশের একটি শ্রেণী অবৈধ অর্থ লুকানোর জন্য বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করছে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে পণ্যের কম অথবা অতিমূল্য ঘোষণার মাধ্যমে টাকা পাচার করা হয়। বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এগুলো খতিয়ে দেখা উচিত। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থ জমার বিষয়টির প্রকৃত কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক ভাল বলতে পারবে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশীদের এ ধরণের অর্থ পাচার করে সুইস ব্যাংকে জমা রাখার কথা অস্বীকারও করছে না। বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত আইন রয়েছে তাতে বাংলাদেশীদের এই অর্থ প্রবাসীদের উপার্জিত অর্থ কেন বাংলাদেশ থেকে গেলেও কিছুই করার নেই। অতীতে আইন দিয়ে টাকা পাচার আটকানো সম্ভব হয়নি; হবেও না। জগন্ন্াথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অর্থনীতির বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. প্রিয়বত পাল ইনকিলাবকে বলেন, দেশের অর্থ যদি বিদেশের ব্যাংকে চলে যায়, এটা অবশ্যই দু:খজনক। এটা দেশের জন্য ক্ষতিকর। কারণ ওই অর্থ যদি দেশের বিনিয়োগ হতো তাহলে দেশের অর্থনীতি ভাল হতো। এতে বুঝা যায় দেশে বিনোয়োগ পরিবেশের অভাব। যেখানে পার্শ্ববতী দেশে ভারতেও বিদেশের ব্যাংকে অর্থের পরিমাণ কমছে; সেখানে আমাদের মতো গরীব রাষ্ট্রের অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াটা অর্থনীতির জন্য উদ্ধেগের। তবে সব টাকা কিন্তু বৈধ উপায়ে যাচ্ছে না। বড় বড় ব্যবসায়ীরা দেশে বিনোয়োগ না করে দেশের বাইরে করছেন। ক্ষমতাসীনরাসহ অনেকে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা অপব্যবহার করে বাড়ি গাড়ি কিনছেন। এজন্য সরকারের উচিত সর্বপ্রথম দেশে বিনোয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করা। সরকারের বির্ভিন্ন পর্যায়ে জবাবদিহেতা না থাকায় ক্ষমতা অপব্যবহার করে বিদেশের ব্যাংকের টাকার পাহাড় গড়ছেন। অর্থ মন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ ব্যক্তিরা জানেন ব্যাংক খাতসহ সকল পর্যায়ের অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়; কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেন না। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ অবকাঠামোর উন্নয়ন হলে অর্থপাচার কমে যাবে। তখন আর কেউ বিদেশের ব্যাংকে অর্থ রাখতে আগ্রহী হবে না। অনেকেই বিদেশের ব্যাংকে টাকা রাখার পর আর তার হদিস পান না। সরকার এখন ব্যবসায়ীদের বৈধভাবে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দিচ্ছে। ফলে অর্থপাচার কমে যাবে। শুধু আইন করে, সাজা কার্যকর করে অর্থপাচার প্রতিরোধ সম্ভব নয়। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিনিয়োগের পরিবেশে ঘাটতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে দেশ থেকে বিদেশে অর্থ নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশীদের অর্থ জমার পরিমান বৃদ্ধি বিশ্বের অন্যদেশগুলোর অন্যতম। দেশের অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনিয়ম বন্ধ করা না গেলে এর পরিমান বাড়তেই থাকবে। সরকার চাইলে আÐার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যারা বিদেশে অর্থ পাচার করছে তাদের সম্পর্কে তথ্য জানতে পারে।
বিএফআইইউয়ের মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রসাদ দেবনাথ এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, এই টাকার পুরোটাই কিন্তু দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা নয়। এ নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি আছে। সুইজারল্যান্ডসহ অন্যান্য অনেক দেশে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি আছে, যারা বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা অনেকেই বৈধভাবে উপার্জিত অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে রাখেন। এদের সবার তথ্য আমাদের পক্ষে কেন, কোনো দেশের পক্ষেই বের করা সম্ভব নয়। আমরা কেবল যাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ বা সন্দেহ করছি, তাদের তথ্য চাইতে পারি। এরই মধ্যে অনেকের তথ্য আনাও হয়েছে। বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে বসে সুইজারল্যান্ডের কোনো ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ থেকে যারা সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করছে, তারা সুইজারল্যান্ডে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে এসে অর্থ পাচার করছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এভাবে বিদেশে অ্যাকাউন্ট খোলাও অবৈধ। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দুর্নীতি আর লুটের টাকা বিদেশে পাচার করেছে ক্ষমতাসীনরা। জনগণ বিশ্বাস করে টাকা পাচারের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়ের লোকেরা জড়িত। তা না হলে অর্থমন্ত্রী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অসহায়ের ভুমিকায় অবর্তীণ হতেন না। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা রাখার পরিমাণ আরো বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ জমা হয়েছে সুইচ ব্যাংকে। অথচ সারা দুনিয়া থেকে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ কমেছে। জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের কারও বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচারের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনীতি করে কেউ এমন কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর এবং কোনও আপোস হবে না। অর্থ পাচারের রেকর্ড বিএনপির আছে দাবী করে তিনি বলেন, তাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এফবিআই সাক্ষী দিয়ে গেছে। কোকোর টাকার কথা সিঙ্গাপুরে প্রমাণিত। তাদের মানি লন্ডারিং বিষয়টি সবার কাছে সুপরিচিত এবং আদালতে প্রমাণিত। অর্থ পাচারকারীদের খুঁজে বের করতে সরকারী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বলেন, স্বচ্ছতার প্রয়োজনে যা করার দরকার তা করতে আমরা রাজি আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি দেখবে। সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার উদ্বেগজনক কথাটা অসত্য নয়। উদ্বেগজনক বলেই তো আমরা তদন্ত করতে বলেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, যারা অবৈধ, অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে অর্থ আয় করেন তারা অর্থ বিদেশে পাঠায়। কানাডার বেগম পাড়া বা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ট হোম করে এমন ব্যাক্তিরাও বিদেশে টাকা পাচার করছে। আবার অর্থ সম্পদশালী যারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে চায় অথচ দেশে সেটা সম্ভব হয় না তারা বিদেশে টাকা পাচার করে। সুইচ ব্যাংকের বাংলাদেশীদের রাখা সব টাকা যে অবৈধ আয়ের তা বলা মুশকিল। তাছাড়া রাজনৈতিক ভাবে হয়রানীর কারণে অনেকেই নিজেদের অর্থ নিরাপদে রাখতেই বিদেশে পাচার করে। ভারত সরকার যেমন সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ্যের সঙ্গে চুক্তি করেছে তাদের দেশের কারা অর্থ জমা রাখে তাদের তালিকা দেয়ার ব্যাপারে। বাংলাদেশ সরকারও সে ধরণের উদ্যোগ নিতে পারে। তবে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় ভারত থেকে বিদেশে টাকা পাচার কমে গেছে এমন নয়। কেন বিদেশে টাকা পাচার হয় এর কারণগুলো খুঁজে বের করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।



 

Show all comments
  • মিরাজ ১ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৬ এএম says : 0
    টাকা পাচারের কারণটা আগে খুঁজে বের করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Rahman Sadman ১ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩৫ এএম says : 0
    সময় আসলে সব বের হবেনে--->> জনগণের টাকা মেরে অট্রালিকায় বসবাস তা জনগণই বের করবেনে।
    Total Reply(0) Reply
  • Najim ১ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩৭ এএম says : 0
    এই ভাবে তোলপাড় করতে থাকবে কাজের কাজ কিছুই হবে না। এর নাম সাবাস বাংলাদেশ সাবাস এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার আগে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টাকা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ