Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগের কারো টাকা সুইস ব্যাংকে নেই -ওবায়দুল কাদের

| প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছেন-এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কোনো নেতার টাকা নেই। এমন তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের কারো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থপাচারের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিভিন্ন উন্নত দেশে টাকা পাচার বরাবর এক আলোচিত বিষয়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) এর একটি প্রতিবেদন আবার আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে।‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৬ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশিদের হিসাবে এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ জমা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে। ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হয় প্রায় পাঁচ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। আগের বছর এই জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ বা চার হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া এই টাকা ক্ষমতাসীনদের। ব্যাংক থেকে লুট হওয়া টাকাই সুইস ব্যাংকে জমা হয়েছে-এমন অভিযোগও করেন তিনি।
বিএনপি নেতার এই অভিযোগের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অর্থপাচারের রেকর্ড বিএনপির আছে। তাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এফবিআই সাক্ষী দিয়ে গেছে। কোকোর টাকার কথা সিঙ্গাপুরে প্রমাণিত। তদের মানিলন্ডারিং বিষয়টি সবার কাছে সুপরিচিত এবং আদালতে প্রমাণিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে যুক্তরাজ্যের লয়েডস টিএসবি অফসোর ব্যাংকে বাংলাদেশি মুদ্রায় নয় কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা পাচার করেছেন বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে। ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি তার বিরুদ্ধে দুদক অর্থপাচারের মামলা করার পর তার আইনজীবীরা যুক্তরাজ্যে টাকা পাঠানোর কথা আদালতে স্বীকারও করেছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচারের সাথে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই। রাজনীতি করে কেউ এমন কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর এবং কোন আপস হবে না।
কারা কারা অর্থপাচার করছে তা বের করতে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, স্বচ্ছতার প্রয়োজনে যা করার দরকার আমরা রাজি আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি দেখবে। আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার উদ্বেগজনক, কথাটা অসত্য নয়। এখনো হচ্ছে। ভারতেরও অনেক টাকা পাচার হচ্ছে। উদ্বেগজনক বলেইতো আমরা তদন্ত করতে বলেছি। এখানে আমরা স্বচ্ছতা চাই।
হলি আর্টিজান হত্যাকান্ডের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, হলি আর্টিজানের হত্যাকান্ডের পর জঙ্গিবাদ নিরসনে সরকার অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তবে আমরা তাতে সন্তুষ্ট নই। তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রশাসনিক ফোর্স অনেক দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে, জঙ্গিবাদ নিরসনে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের শুধু ফোর্সের ওপর নির্ভর কর থাকলে হবে না। আমরা সন্তুষ্ট সেদিনই হবো যেদিন দেশের সর্বস্তরের মানুষকে জঙ্গিবাদ নিরসনের ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ করাতে পারবো। সেটাই হবে কার্যকরী পন্থা। জঙ্গিবাদ নিরসনের প্রশ্নে বিএনপির মতো রাজনৈতিক দলকে আহŸান করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের জানান, যারা জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের আহŸান করে লাভ নেই। তাদের আহŸান করে আরেকটা বিপদ ডেকে আনবো না কি? ঈদের পর বিএনপি আন্দোলনে যাবে দলটির পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এই ঘোষণাকে কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ-এই প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আট বছরে বিএনপির কোনো নেতাকে আট মিনিটের জন্যও নামতে দেখিনি। তারা আন্দোলন এই বছর না ওই বছর করে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সেই বছর তো আর আসে না।
পাস হওয়া বাজেট প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ভ্যাট আইন বাতিল ও আবগারি শুল্ক কম আদায়ের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাজেট পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপি হতাস হয়েছে। তারা ভেবেছিল বাজেট ইস্যুতে তারা ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথকে রূদ্ধ করবে কিন্তু সারাদেশের মানুষ যখন বাজেটে ঘোষণায় আনন্দ, উচ্ছ¡াস প্রকাশ করছে তখন বিএনপি চুপসে গেছে, আবুল-তাবুল বকছে। যারা আবুল-তাবুল বকছে তারা প্যাথলজিক্যাল লাইয়ার। ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের উপ-কমিটি ঘোষণা ও আট জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে এসময় আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরেকটি মিটিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। উপকমিটিতে একশ’র বেশি সম্পাদক হবে না। তবে সদস্য ৩০ পর্যন্ত হতে পারে। যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন কমিটিতে আছে তারা যদি অনিবার্য হন তবে সদস্য হতে পারবেন কিন্তু সম্পাদক পদে আসবেন না। এই কমিটিতে যে কেবল দলের সক্রিয়কর্মীরাই যুক্ত থাকবেন এমন নয়। আওয়ামী-মনস্ক অন্য যে কেউ থাকতে পারেন।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ, দিপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, সুজিত রায় নন্দী, রোকেয়া সুলতানা, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুস সবুর, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আমিনুল ইসলাম, বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • নাজিম ১ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৮ এএম says : 0
    এত টাকা কাদের সেটা খুঁজে বের করার দায়িত্ব তো আপনাদের । কারণ আপনারা সরকারে আছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • শেখ আমিনুল ইসলাম টুটুল ১ জুলাই, ২০১৭, ৮:২৯ এএম says : 0
    সুইটজারল্যান্ডের সংবিধান এবং ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী সেখানে ব্যাংক গ্রাহকদের গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করা হয়।তাই হয় তো বা মাননীয় মন্ত্রী এতো বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। বাংলাদেশে যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা জনসাধারণকে সবসময়ই বোকা মনে করে থাকেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Shaon Mahamud Bepary ১ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩০ এএম says : 0
    ঠিক কথা বলছেন,,কারন যার নামে টাকা গুলা আছে সে আওয়ামিলীগের কেউ নয়,,কোন পদে ও সে নেই
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Horairah ১ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩৪ এএম says : 0
    তাহলে ব্যশ অতিসত্যর টাকাগুলো দেশে এনে যাদের আছে তাদের মুখোস জনগনের কাছে খুলেদিতে আপনাদের আপত্যি থাকার কথা নয়, তাড়া তাড়ি নির্বাচনের আগে ওসব টাকা পাচার কারিদের আইনের কাছে সোপর্দ করাই সরকারের দায়িত্য ও কর্তব্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Murtuza Chowdhury ১ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩৫ এএম says : 0
    আপনি কেমনে জানেন? ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনি।
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১ জুলাই, ২০১৭, ১০:০৭ এএম says : 0
    মাননীয় মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সদস্য সকলের ডাটা কি আপনার কাছে আছে? দেশের বিরাট একটি অংশ আঃ লীগ করে। এদের মধ্যে ভাল মন্দ মিশ্রিত আছে। মন্দ অংশটির দায় কেন আপনি নিবেন। তাই ঢালাও ভাবে সকলের সাফাই না গাওয়াই ভাল। তারেক কোকোর কথা বললেন। কোকো নেই। তার কথা না বলাই ভালো। রাজনৈতিক নির্যাতনের কথা ভেবে জনাব তারেক দেশে আসতে পারছে না। তারেক সাহেবকে দেশে আসার পূর্ণ নিরাপত্তা দেন। তার পর এই সব কথা বলেন। ডঃ মোশারফের কথা বললেন। উনি ছিলেন বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক। প্রেসিডেন্ট জিয়ার কৃপায় ১৯৭৯ সালে দাউদকান্দির আসনে নির্বাচন করলেন।নির্বাচনী সমাবেশে ডঃ মোশারফ বল ত, আমি শিক্ষক আমার টাকা পয়সা নেই, আমি সৎ, প্রেসিডেন্ট জিয়া আমাকে দয়া করছে, আপনারা ও আমাকে দয়া করে ভোট দিন। কিন্তু জনগণ ডঃ মোশারফকে নয় প্রকৃত সৎ নেতাকেই ভোট দিয়েছিল। ঐ সময়ে জনপ্রিয় নেতা আবদুর রশিদ ইন্ঞ্জিনিয়ারের কাছে ডঃ মোশারফ শোচনীয়ভাবে পরাজয়বরণ করে। একসময় জনাব মোশারফ মন্ত্রী হলেন।বিরাট ধন সন্পদ ভিত্তের মালিক হলেন। গরীব শিক্ষক অনেক সন্পদের মালিক হলেন। দাউদকান্দিতে নিজ নামে কলেজসহ অনেক কিছু করলেন। মাননীয় মন্ত্রী, আমাদের অধিকাংশ এমপি মন্ত্রীদের ইতিহাস টানলে হয়ত অনেক কিছু পাওয়া যাবে। কিন্তু দলীয় টানে কেহ ই টানে না। ডঃ মোশারফ বিপক্ষ মন্ত্রী ছিলেন, তাই আপনি টানলেন। দয়া করে নিজ দলের কিছু নেতা এমপি মন্ত্রীর সিভি টানেন তা হলে আনেক কিছু পেয়ে যাবেন। তখন বুকে হাত রেখে দৃঢ়তার সাথে কথা বলিয়েন। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১ জুলাই, ২০১৭, ১০:২৬ এএম says : 0
    মাননীয় মন্ত্রী, এটা ত ঐ মন্ত্রীর কথার মত হলো। বিশ্বজিৎকে হত্যার পর ঐ মন্ত্রী বলছিল, এরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের কেহ নয়। এরা বিএনপি ও জামায়েত শিবির। ঐ মন্ত্রী বলতে পারে, কিন্তু আপনি পারেন না। কারণ আপনি একজন খাঁটি রাজনৈতিক কর্মী। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। সৎ নেতারা টাকা প্রাচার করে না। করে অসৎ ও দূর্বিত্ত লোকেরা। এদের চেহারা উন্মচিত করুন। দেশ প্রেমিকেরা এগিয়ে আসুন। আপনার মত এক জন দেশ প্রেমিক মন্ত্রী এগিয়ে আসলে সবই সন্ভব। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১ জুলাই, ২০১৭, ১১:৫০ এএম says : 0
    এভাবে বললে ত নিজের কথার পেঁচে নিজে পরে যাবেন। রিজবী সাহেবকে পঃ লায়ার বললেন। তা হলে আপনি ও এর আওতায় পরে যাবেন। জনগণ আপনাকে পলিটিকেল লায়ার দেখতে চায় না। আপনার কাছ থেকে সঠিক কথা প্রকাশ পাউক, এটাই আমরা চাই। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ