মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভেনেজুয়েলার সুপ্রিম কোর্টে হামলার মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। পুলিশ হেলিকপ্টার থেকে সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা অস্কার পেরেজ ভেনেজুয়েলার সর্বোচ্চ আদালতে দু’টি গ্রেনেড নিক্ষোপ করেন। প্রেসিডেন্ট মাদুরো একে সন্ত্রাসী হামলা বলতে চাইছেন। তবে হামলার কিছু সময় আগে এক ভিডিও বার্তায় সেনাবাহিনী-পুলিশ ও জনতার নামে সরকার উৎখাতের ডাক দিয়েছিলেন পেরেজ। আর যে হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয়েছে, সেটি সরকারের আনুগত্য মানতে অস্বীকৃতি জানানোর ব্যানার বহন করছিলো। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে। ভেনেজুয়েলায় চলছে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কট। ৫৪ বছর বয়সী সোশালিস্ট নেতা নিকোলাস মাদুরোর পদত্যাগ দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ হচ্ছে রাজধানী কারাকাসে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী গত ১ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন সেখানে রাজনৈতিক সহিসংতায় নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের হামলার পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি হেলিকপ্টার নিয়ে কারাকাসে সর্বোচ্চ আদালতে হামলা চালিয়েছেন। আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে তাকে অস্কার পেরেজ নামের গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসা ভিডিওতে হেলিকপ্টারটিকে শহরের ওপর দিয়ে চক্কর কাটতে দেখা যায়। এর পরপরই বড় ধরনের বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়। তবে সেখানে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। ভেনেজুয়েলার সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্ট মাদুরোর ক্ষমতাকে পোক্ত করার কাজে লিপ্ত বলে দেশটির বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ। সেই সুপ্রিম কোর্টে হামলার প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, এক গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা হেলিকপ্টার থেকে দুটি গ্রেনেড হামলা চালায় এবং পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে হামলাটির মধ্য দিয়ে স্পষ্টত সরকার উৎখাতের বিদ্রোহের সূচনা হয়েছে। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে সুপ্রিম কোর্টে হামলার চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকে গুলি বিনিময় হয়। অস্কার পেরেজ নামের কর্মকর্তা হামলার কিছু সময় আগে ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেই ভিডিও বার্তায় সরকার উৎখাতের ডাক দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ভেনিজুয়েলাবাসী, ভাই আমার। আমি রাষ্ট্রের পক্ষ হয়ে তোমাদের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সাধারণ মানুষের জোট। আমরা এই জুলুমবাজ সরকারের থেকে রেহাই চাই। আমাদের দুটি পথ রয়েছে, আগামীকালের জন্য বসে থাকে অথবা এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার থেকে আজই নিজেদের মুক্ত করা। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ভিডিও বার্তায় দাবি করেন পেরেজ। তিনি বলেন, সত্য ও যিশু খ্রিস্টের প্রতি শুধু তিনি অনুগত। তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল থেকে জানা যায়, তিনি একজন ক্রাইম ইউনিট গোয়েন্দা, একজন বিমান চালক ও কে-৯ ইন্সট্রাক্টর। দেশটির সংবাদমাধ্যম এল ন্যাসিওনালের মতে, অস্কার পেরেজ নামে ওই ব্যক্তি ভেনিজুয়েলার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসিপিসি এর সাবেক ক্যাপ্টেন। হামলার আগে এক ভিডিও বার্তায় সরকারের নিন্দা করেছিলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তার ভিডিওতে আরও কয়েকজন ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তি ছিলেন। তবে তারা সবাই মুখোশধারী। যে হেলিকপ্টার দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানো হয়েছে, সেটিতে ‘লিবার্টি. আর্টিকেল ৩৫০’ লেখা ছিলো। ভেনেজুয়েলার সংবিধানের এই ধারা অনুযায়ী কোনও সরকার গণতন্ত্রের অবজ্ঞা ও মানবাধিকার ক্ষুণœ করলে জনগণ সেই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থার ডাক দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে। হামলার কিছুক্ষণ আগেই মাদুরো ঘোষণা দিয়েছিলেন অগণতান্ত্রিক শক্তি রুখতে তিনি ও তার সমর্থকরা অস্ত্র হাতে তুলে নিতে পারেন। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মাদুরো বলেন, গ্রেনেডগুলো বিস্ফোরিত হয়নি এবং তারা এই হামলার পেছনে দায়ীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমি চাই বিরোধী জোট এমইউডি এই হামলার নিন্দা জানাক এবং সাহায্যার্থে এগিয়ে আসুক। এই হামলায় অনেকে হতাহত হতে পারতেন। এরপরে তথ্যমন্ত্রী আর্নেস্টে ভিলেজাস বলেন, হেলিকপ্টার থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১৫টি গুলি করা হয়। সেসময় সেখানে প্রায় ৮০ জন উপস্থিত ছিলেন। এরপর সুপ্রিম কোর্টের খুব কাছ দিয়েই এটি উড়ে যায়। এসময় চারটি গ্রেনেড ছোড়া হয়। হাইকোর্টের প্রেসিডেন্ট জানায়, এই হামলায় কেউ হতাহতের শিকার হয়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।