রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে
রাউজানের ১৪টি ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। তবে এখানে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এখনো দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়নি। এলাকায় তাদের প্রকাশ্যে বিচরণ না থাকায় সাধারণ মানুষের ধারণা বিএনপির প্রার্থীরা হয়তো আড়াল থেকে তাদের প্রার্থিতার খবর জানিয়ে দিচ্ছেন সমর্থকদের। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন রাউজানের সরকারি দল। ইউপি নির্বাচন নিয়ে যত উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে এখানকার আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঝে। ১৪ ইউনিয়নে অর্ধ শতাধিকের বেশি প্রার্থীর তৎপরতায় এলাকার সাধারণ ভোটারদেরও ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। নৌকা প্রতীক পাওয়ার আশায় এখন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। স্থানীয় ১৪ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রায় সভাপতি, সম্পাদক ও বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ দল থেকে নৌকা পাওয়ার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। তাদের এই লড়াইয়ে তৃণমূলের নেতাদের কদর বেড়ে গেছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৃণমূলের নেতাদের ভোটে প্রথমে উপজেলা থেকে নির্ধারিত হবে দলীয় প্রার্থী। এরপর জেলা নেতৃবৃন্দের সুপারিশে কেন্দ্র থেকে নৌকা পাবেন-এই আশায় আপাতত তৃণমূলের সমর্থন আদায়ের জন্যে ইউনিয়ন নেতা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ বিভিন্ন নেতাদের ধারে ধারে ঘুরছেন। অনেকে নিজের পক্ষে দলীয় সমর্থন আদায়ের কৌশল নিয়ে নেতাদের ঘরে ঘরে ধর্না দিচ্ছেন। একারণে আপাতত এখানকার সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন ভোটারদের ধারে ধারে নয়, ঘুরছেন নেতাদের খুশি রাখতে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুধু তৃণমূলের নেতাদের নয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের সাথেও নৌকা প্রতীক পাওয়ার আশায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। এদিকে একটি সূত্র মতে ইতিমধ্যে বর্ধিত সভার মাধ্যমে তৃণমূলের ভোটে স্থানীয় এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নোয়াপাড়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ দিদারুল আলম, পশ্চিম গুজরায় বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দীন আরিফ, কদলপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাহেদ উদ্দীন চৌধুরী লিংকন, উরকিরচরে সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেলকে ইউপি নির্বাচনের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রায় ১৪ ইউনিয়নেই একাধিক প্রার্থী দলীয় প্রতীক পেতে তৃণমূল থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা নেতাদের কাছে ধর্ণা দিয়ে নিজের বায়োডাটা প্রদান করছেন। অনেকে নিজের পারিবারিক, রাজনীতিক ও সামাজিক অবস্থান তুলে ধরে লিফলেটও বিতরণ করছেন এলাকাবাসীর কাছে। মোদ্দাকথা রাউজানের ইউপি নির্বাচন নিয়ে এলাকা থেকে শুরু করে জেলা নেতৃবৃন্দ পর্যন্ত চলছে নির্বাচনী উত্তাপ। এদিকে নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্যে ১৪টি ইউনিয়নে যারা তৎপর রয়েছে, তারা হলেন, ১নং হলদিয়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন চৌধুরী, ডিউ গ্রুপের সেলিম উদ্দিন, এস এম বাবর ও জিয়াউল হক সুমন। ২নং ডাবুয়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান চৌধুরী, কৃষক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলমগীর। ৩নং চিকদাইর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী দিদারুল আলম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ চৌধুরী, উপজেলা ছাত্রলীগের জসিম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর আহমদ তালুকদার, আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোবারক উল্লøাহ, আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম উদ্দিন। ৪নং গহিরা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আবছার বাশি, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. ইফতেখার উদ্দিন দিলু, ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য নাজিম উদ্দিন তালুকদার, শাহাজাদা মোহাম্মদ নুরুল বখতেয়ার, ছাইদুল আলম মনছুর, জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন দাবিদার জেলা জাতীয় পার্টি নেতা নাছির উদ্দিন সিদ্দিকী। ৬নং বিনাজুরি ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান সুকুমার বড়–য়া, আওয়ামী লীগ নেতা রবিন্দ্র লাল চৌধুরী, সাধন মুহুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা মো. আলমগীর, মোহাম্মদ খালেদ, কামরুল ইসলাম বাচ্চু। ৭নং রাউজান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সভাপতি বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী সৈয়দ হোসেন কোম্পানি, সাবেক চেয়ারম্যান শাহা আলম চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা দিদারুল আলম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নুরুল আমিন, শিক্ষানুরাগী মোজাম্মেল হক খোকন, যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন, সারজু মো. নাছের, শওকত হোসেন। ৮নং কদলপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাহেদ উদ্দিন চৌধুরী লিংকন, সমাজসেবক তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, সাইফুল হক চৌধুরী লাভলু, ছাত্রনেতা সাইফুল্লাহ আনছারী। ৯নং ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দোস্ত মোহাম্মদ খান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. নুরুন নবী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেন। ১০নং পূর্ব গুজরা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন আহমদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন দে, সাবেক ছাত্রনেতা জসিম উদ্দিন, মাহামুদ হোসেন। ১১নং পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নে একমাত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দীন আরিফ। ১২নং উরকিরচর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার চৌধুরী, দক্ষিণ রাউজান ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল। ১৩নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ দিদারুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা শান্তিপদ বৈদ্য, সাবেক চেয়াম্যান মনিরুল ইসলাম। ১৪ নং বাগোয়ান ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভূপেশ বড়–য়া, যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন ছোটন, সাবেক ছাত্রনেতা এস এম শফি। ১৫ নং নোয়াজিষপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরোয়ার্র্র্দী সিকদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ ইসলাম, বিপুল সিকদার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।