রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) থেকে
প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে লেগেছে ভোটের হাওয়া। নিয়ম অনুযায়ী এখনই আনুষ্ঠানিভাবে ভোট চাওয়ার সুযোগ না থাকলেও নানা কৌশলে ভোটারদের মন জোগাতে মাঠে সরব সম্ভাব্য প্রার্থীরা। পাড়া-মহল্লার ক্লাব, সংঘ আর চায়ের দোকানগুলো মুখর হয়ে উঠেছে নির্বাচনী আলোচনায়। রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যালয়ে বেড়েছে নেতাকর্মীদের আনাগোনা। সব মিলিয়ে উৎসব আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো উপজেলায়। এবারই প্রথম চেয়ারম্যান পদে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭মে চতুর্থ ধাপে চৌদ্দগ্রামের ১৩টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে আ.লীগ ও বিএনপি দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রার্থীদের অনেকে শোডাউন করেছেন, জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন নানাভাবে। আ.লীগ ও বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল, ওয়াজ মাহফিল ও নামাজে জানাযায় অংশ নিয়ে মানুষের দোয়া চাচ্ছেন। সরেজমিন বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জানা গেছেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ ঘরে বসে নেই। সরাসরি ভোট না চেয়েও নানাভাবে জনসংযোগে নেমে পড়েছেন তারা। পাড়া-মহল্লার প্রতিটি ক্লাব, সংঘ বা সংগঠনের অফিসে হাজির হচ্ছেন। খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এলাকাবাসীর। কোথায় রাস্তা দরকার, কোন এলাকার কি সমস্যা এসব নিয়েও আগ বাড়িয়ে কথা বলছেন তারা। এ ছাড়া এলাকার বিয়েশাদিসহ সামাজিক অনুষ্ঠানের দাওয়াত পেলেই দলবলে হাজির হচ্ছেন। চোখে পড়ার মতো উপহার দেয়ার প্রতিযোগিতাও যেন চলছে এসব অনুষ্ঠানে। এদিকে, সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষের কিছ লোকজন কৌশলে হাটে বাজারে, চায়ের দোকানে নির্বাচনী আলোচনা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আলোচনা জমিয়ে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করছেন ভোটারদের ঝোঁক কোন কার দিকে। কার মন যোগাতে কি করতে হবে তাদের ইত্যাদি। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমকেও ব্যবহার করছেন। এখানেও ভোট না চেয়ে কৌশলের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। ভোটের এই আমেজে এলাকার প্রবীণ ও গুণীজনদের কদর বেড়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোট না চেয়ে এখন দোয়া চাচ্ছেন। অন্যদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে প্রতীক পাওয়ার জন্য আ.লীগ ও বিএনপির দলীয় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জেলা ও উপজেলা নেতাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এরই মধ্যে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি আ.লীগ ১৬৬ জন ও ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত বিএনপি তাদের ৩৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর মাঝে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেন। এর মধ্যে কনকাপৈত ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনয়ন পেতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৪৩ জন। চৌদ্দগ্রামের ১৩ ইউনিয়নের আ.লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন ফরম নেয়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- কাশিনগর ইউনিয়ন : উপজেলা আ.লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আ’লীগের সদস্য শামছুল আলম মজুমদার, উপজেলা যুবলীগ নেতা মাহবুবুল হক ও মাহবুবুর রহমান। বিএনপির আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ মজুমদার, ওমর ফারুক মজুমদার মামুন, মোস্তাফিজুর রহমান। উজিরপুর ইউনিয়ন : আ.লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন খোরশেদ মেম্বার, যুবলীগ নেতা জসিম উদ্দিন সর্দার, নিজাম উদ্দিন মিঞা, শহিদুর রহমান রতন, আলী আশ্বব, জহির উদ্দিন পিন্টু, মো. ফজলুল হক, মীর জালাল উদ্দিন দুলাল ও মফিজুর রহমান। কালিকাপুর ইউনিয়ন : আ.লীগ নেতা মাহবুব হোসেন মজুমদার, জসিম উদ্দিন মজুমদার, জাফর আলম, ইছাক মজুমদার, হাজী নুরুল হক খন্দকার, আলা উদ্দিন মজুমদার, যুবলীগ নেতা সেলিম আহমেদ শামস্, গোলাম রসুল ও আবদুল মালেক। শ্রীপুর ইউনিয়ন : আ.লীগের শাহজালাল মজুমদার। বিএনপির এম জহির উদ্দিন, আবু তাহের মজুমদার, আহসান হাবিব। শুভপুর ইউনিয়ন : ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মজুমদার, অধ্যাপক মফিজুর রহমান, মমতাজ উদ্দিন, এবিএম ভুলু, কবির আহম্মদ, আনিছুর রহমান, মো. শাহজাহান, একরামুল হক ও দ্বীন মোহাম্মদ মজুমদার। বিএনপির আহসান হাবিব জিয়া, সফিকুর রহমান ডালিম। জাপার আলমগীর কবির মজুমদার। ঘোলপাশা ইউনিয়ন উল্লেখ্য যোগ্যরা হলেন- আ’লীগ আবুল কালাম ভূঁইয়া, কাজী জাফর, একে এম মজিবুর রহমান, জিএম জাহাঙ্গীর আলম, শেখ কামাল, কাজী মোজাম্মেল হক লাওশান, দ্বীন মোহাম্মদ দিলু, আবদুল কাদের, মাহবুবুল হক মজুমদার ও নুরুল হক ভুঁইয়া। বিএনপির কামরুল হাসান, সফিকুল ইসলাম। মুন্সিরহাট ইউনিয়ন উল্লেখ্য যোগ্যরা হলেন- যুবলীগ নেতা কামরুল আলম মোল্লা, জসিম উদ্দিন মুহুরী, হেলাল উদ্দিন মজুমদার, মাহফুজ আলম, আলহাজ্ব একে ফারুক আহম্মেদ ভুঁইয়া। বিএনপির আবদুর রাজ্জাক, আবদুল কাদের মোল্লা, মাওলানা জিয়াউর রহমান মজুমদার। কনকাপৈত ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনয়ন পেতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৪৩ জন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বর্তমান চেয়াম্যান বেলাল হোসেন, ভ ম আফতাবুল ইসলাম, ইউসুফ মজুমদার, নজরুল ইসলাম মজুমদার, জিয়াউর রহমান, মজিবুল হক ভুঁইয়া, ইকরামুল হক দুলাল, জাফর ইকবাল, মাস্টার ওয়ালী উল্যাহ, আবুল কাসেম, ইসমাঈল চৌধুরী, নুরুল ইসলাম, মো. সোহরাওয়ার্দী, ওমর ফারুক, মফিজুর রহমান, আফজালুর রহমান। বিএনপির গাজী কবির, আবদুল মতিন মজুমদার, খালেদ সাইফুল্লাহ বাচ্চু, ইয়াছিন ভূঁইয়া, ফারুক হোসেন মজুমদার। বাতিসা ইউনিয়ন উল্লেখযোগ্যরা হলে- আ.লীগ নেতা জাহিদ হোসেন টিপু, আবদুল হাই কানু, বিএনপির ইয়াসিন, মনির হোসেন, আবদুল করিম সাজু, আবু বক্কর ছিদ্দিক। জাপার রেজাউল হক মজুমদার খোকন। চিওড়া ইউনিয়ন : আ’লীগ নেতা একরামুল হক, আবদুল কাদের ভুঁইয়া, আতিকুর রহমান, যুবলীগ নেতা জিয়াউর রহমান চৌধুরী শিপন, জিয়াউর রহমান খান, গোলাম সরোয়ার মিজান, কামাল উদ্দিন দুলাল, নুরুল আমিন ভুঁইয়া। বিএনপির আবুল কালাম আজাদ জালাল, রাসেল আহম্মদ মজুমদার, কাজী রকিব, দেলোয়ার হোসেন মজুমদার মাসুম। গুণবতী ইউনিয়ন উল্লেখযোগ্যরা হলেন-আ.লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, সৈয়দ আহম্মদ খোকন, রফিকুল ইসলাম রফিক, শাহ হেলাল খুরশিদ, আব্দুল খালেক। বিএনপির মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। জগন্নাথদীঘি ইউনিয়ন উল্লেখযোগ্যরা হলেন- আ’লীগ নেতা মুহিবুল আলম মজুমদার কানন, যুবলীগ নেতা জান ই আলম, মাহবুবুল হক খান, কামাল পাটোয়ারী, আবদুর রউপ, বিএনপির আবদুল হালিম। আলকরা ইউনিয়ন, একেএম গোলাম ফারুক হেলাল, আ’লীগ নেতা শাহ আলম পাটোয়ারী, খোরশেদ আলম, শাহাদাৎ হোসেন শামীম, ফয়েজ আহমেদ ভুঁইয়া সেলিম, সানা উল্যাহ ভুঁইয়া। বিএনপির আ.ন.ম সলিমুল্লাহ টিপু, মাস্টার লুৎফর রহমান মানিক। এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগ ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন ফরম নিলেও দলে কোন কোন্দল নেই। বরং দলীয় প্রধান যাকেই মনোনীত করবেন, অন্যরা তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।