নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : ফখর জামানের ক্রিকেট জীবন যেন সত্যিই রূপকথা। নিজ গ্রামে একবার ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন এবং ভাইদের কাছে মার খেয়েছিলেন শুধুমাত্র খুব বেশি ভাল খেলার জন্য। অথচ সেই ফখর জামানই পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয়ে গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখার পর নিজ গ্রামে ফিরলেন একজন নায়ক হিসেবে।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কাটলাং-এ নিজ বাড়ীতে ফিরলে এলাকার জনগন ২৭ বছর বয়সী জামানকে ফুল দিয়ে করণ করে নেন, তার সঙ্গে সেলফি তুলতে ভিড় পড়ে যায়।
সদ্য শেষ হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই অভিষেক হওয়া জামান বলেন ফাইনালে চির প্রতিদ্ব›দ্বী ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয়ে তার ১১৪ রান বিশেষ ভূমিকা রাখলেও সব কিছুই তার কাছে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। লন্ডনে রূপকথার ফাইনালটির কথা উল্লেখ করে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফখর তুলে ধরেন নিজের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। আলোচনার শুরুতেই সেই ঐতিহাসিক মূহুর্ত, ‘সে সময় (ফাইনালের পর) আমার খুব বেশি কিছু মনে হয়নি। এরপর আমি বাড়ি এলাম এবং জনগণ এখানে আসতে শুরু করল..। সবাই আমার প্রশংসা করতে, ভালবাসতে শুরু করল। এরপর মনে হলো সত্যি আমি বীরোচিত কিছু করেছি।’
র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দল নিয়ে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে তলানীতে থাকা পাকিস্তান ফাইনালে অবিশ্বাস্য পারফরমেন্স দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ওয়ানডে ক্রিকেটে জামানের প্রথম সেঞ্চুরির সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে পাকিস্তান। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চতুর্থ ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেন বাঁ-হাতি এ ব্যাটসম্যান। তার অসাধারন নৈপুণ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ফখর বলেন সব সময় এমনটা হয়না।প্রকৃতপক্ষে তার গ্রামে স্থানীয় ক্রিকেট ম্যাচে একবার তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, ‘স্কুল জীবনে আমি কে অথবা দুটি কাঠের বলের ম্যাচ খেলেছি এবং কিছু রান পেয়েছি। এরপর পুরো এলাকায় আমি জনপ্রিয় হয়ে উঠি। তারা বলতে শুরু করে ‘সে (ফখর) কাঠের বলের খেলোয়াড় তার সঙ্গে খেলোনা।’ ক্রিকেট থেকে দূরে রাখতে এমনকি একবার তাকে মেরেছিলেন বলে এএফপিকে জানান তার বড় ভাই আসিফ। মজা করে আসিফ বলেন, ‘তবে সে কখনো ক্রিকেট ছাড়েনি এবং আজ একজন নায়ক হয়েছে। তার জন্যই আজ আমরা এখানে।’
ফখর জানান শিশুকাল থেকেই তিনি অধিকাংশ সময় ক্রিকেটের পিছনে ব্যয় করেছেন। তবে কখনোই ক্লাব পর্যায়ে খেলার স্বপ্ন দেখেননি। তার পরিবর্তে তিনি বরং একজন নৌবাহিনী কমান্ডো হতে চেয়েছিলেন, ‘পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগদান ছিল আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।’ একজন নাবিক হিসেবে যোগদানের পর তিনি বাহিনীর টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতেন এবং সেখানকার কোচ নাজিম খান তাকে ‘মেধাবী’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে চাকুরি ত্যাগ করে ক্রিকেটের প্রতি মনোনিবেশ করতে উৎসাহ যোগান। নৌবাহিনীর এ কোচের কথা পুনরুল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি (কোচ) বলেছিলেন তুমি সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলতে পার।’
পাঁচ বছর তিনি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন এবং গত বছর পাকিস্তান সুপাার লীগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের হয়ে পারফরমেন্স করে জাতীয় দলের নির্বাচকদের চোখে পড়েন জামান। এ বছর মার্চ মাসে দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জামানের টি-২০ অভিষেক হয়। শুরুটা তেমন ভাল হয়নি। দুই ইনিংসে তার মোট রান ছিল ২৬। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা পেতে সেটাই যথেষ্ঠ ছিল। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিয়মিত ওপেনার আহমেদ শেহজাদ ব্যার্থ হওয়ায় কপাল খুলে যায় ফখরের। সুযোগটা ভাল ভাবে কাজে লাগান তিনি। অভিষেক ম্যাচে ৩১ রান করার পর পরের দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি, ফাইনালে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে সেঞ্চুরি।
পাকিস্তানের নতুন এ তারকা এখানেই থেমে থাকতে চাননা। গর্বের সহিত বললেন ‘দীর্ঘ সময়’ তিনি দেশের হয়ে খেলতে চান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।