পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আজ রমযানের শেষ শুক্রবার আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস। বায়তুল মুকাদ্দাস ইসলামের প্রথম কিবলা এবং মক্কা মুআয্যামাহ ও মদিনা মুনাওয়ারার পরে তৃতীয় পবিত্র স্থান। হজরত রাসুলে কারিম সালালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কার মসজিদুল হারাম, মদীনার মসজিদুন্নবী ও বায়তুল মুকাদ্দাস মসজিদের উদ্দেশে সফরকে বিশেষভাবে সওয়াবের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যা অন্য কোন মসজিদ সম্পর্কে করেননি।
হিজরতের পর বায়তুল মুকাদ্দাস ইসলামের প্রথম কিবলা। বায়তুল মুকাদ্দাস দুনিয়ার জন্য অসংখ্য ভূখন্ডের মত কোন সাধারণ ভূখন্ড নয়। এ পবিত্র ঘর থেকেই খাতামুন্নাবীয়ীন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ’র দিদারে মিরাজে গমন করেছিলেন। বায়তুল মুকাদ্দাস মসজিদ এবং তার আশে-পাশের এলাকা বহু নবীগণের স্মৃতি বিজড়িত। এই পবিত্র নাম শুধু একটি স্থানের সাথে জড়িত নয় বরং এই নাম সকল মুসলমানের ঈমান ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসূলের মাজার। হজরত ইবরাহীম (আ.) পবিত্র কা‘বা ঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর হজরত ইয়াকুব (আ.) জেরুজালেমে আল আকসা মসজিদ নির্মাণ করেন। অতঃপর হজরত সুলায়মান (আ.) এই পবিত্র মসজিদের পুনঃনির্মাণ করেন। ৬৩৮ ঈসায়ী সালে দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) এর খিলাফতকালে পুরো বাইতুল মুকাদ্দাস এলাকা মুসলমানদের দখলে আসে। ১০৯৬ সালে খ্রিস্টান ক্রুসেডারগণ সমগ্র সিরিয়া ও ফিলিস্তিন দখল করে নেয়ার পর বাইতুল মুকাদ্দাস মসজিদের ব্যাপক পরিবর্তন করে একে গীর্জায় পরিণত করে। এরপর ১১৮৭ সালে মুসলিম বীর ও সিপাহসালার সুলতান সালাহ উদ্দীন আইয়ুবী জেরুজালেম শহর মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর হাতে পরাজিত হওয়ার পর খ্রীস্ট শক্তি পিছু হটলেও ইয়াহুদী চক্র বায়তুল মুকাদ্দাসের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি রাখে।
১৯১৭ সালে ইংরেজরা ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে ও ১৯২০ সালে সেখানে পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং স্যার হার্বাট স্যামুয়েল নামক একজন ইয়াহুদীকে সেখানে বৃটিশ কমিশনার নিযুক্ত করে। ফলে জমি কেনায় বহিরাগত ইয়াহুদীদের জন্য ফিলিস্তিনের দুয়ার খুলে যায়। যার ফলে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে যায়নবাদী অবৈধ ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভের পর ইয়াহুদীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং মুসলানদের কচুকাটা করতে থাকে। তাদের অত্যাচারে জর্জরিত আরবরা জীবন বাঁচাতে দলে দলে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। এ সত্তে¡ও তখনও বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের দখলে ছিল। কিন্তু আরবদের দুর্বলতার মুখে ১৯৬৭ সালের আরব ইসরাঈল যুদ্ধের মাধ্যমেও তা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। যায়নবাদী অবৈধ রাষ্ট্রের ধূর্ত ইহুদীরা পশ্চিমা প্রভুদের গোপন সহায়তায় তাদের ঘৃণ্য চক্তান্ত চালু রাখে এবং একের পর এক নিরীহ নিরস্ত্র মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যেতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় জারজ ইসরাইলের বিমান হামলায় আজ গাজার অর্ধ সহস্রাধিক মুসলিম নারী শিশু বৃদ্ধ ও সাধারণ নাগরিক শহীদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার আহত ও পঙ্গু হয়ে মরণযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
কর্মসূচি
আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস (পবিত্র রমযানের শেষ শুক্রবার) উপলক্ষে আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে ১৫/২, তোপখানা রোড (জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীতে) ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে আল কুদ্স দিবস উদযাপনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও আল কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর সভাপতি প্রফেসর ড. শাহ কাউছার মোস্তফা আবুল উলায়ী’র সভাপতিত্বে এতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুল আলম ব্যাপারী সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।