পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : এবার জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়) মাসে এ যাবত গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বর্ষণ রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটে তথা পাহাড়ি অঞ্চলেই বৃষ্টি ঝরেছে দেশের মোট বর্ষণের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ। গতকাল (মঙ্গলবার) আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্রে একথা জানা গেছে।
এ বছর গ্রীস্মকাল অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ মাসেই আন্দামান সাগর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুমালা বাংলাদেশে অনেক আগেভাগেই আগমন ও সহসা সক্রিয় হয়ে উঠে। এরফলে দেশের প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বেড়ে যায়। গত ৩০ মে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ এবং ১১ ও ১২ মৌসুমি নি¤œচাপের প্রভাবে দেশের অনেক জায়গায় ভারী বর্ষণের সাথে বৈরী আবহাওয়া জেঁকে বসে। তবে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী তথা উত্তরাঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিবর্তে খরতপ্ত ভিন্ন আরেক বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ জুন আবহাওয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এ মাসে সারাদেশে সার্বিকভাবে ‘স্বাভাবিক’ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু জুনের এ যাবত বৃষ্টিপাতের সাথে পূর্বাভাস সঙ্গতিপূর্ণ হচ্ছে না। হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত ১৯ জুন পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৯ হাজার ১৭০ মিলিমিটার। যা এ সময়ের (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় অর্থাৎ প্রাক-বর্ষা ও বর্ষারম্ভ) স্বাভাবিক হার বা পরিমাণের চেয়ে প্রায় ২২ শতাংশই বেশি। গত বছর ২০১৬ সালে একই সময়ে বৃষ্টিপাতের চেয়ে এবার প্রায় ৫০ ভাগ, আর গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বর্ষণ রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি জুনের দুই তৃতীয়াংশ সময়ের মধ্যে দেশে যা বর্ষণ হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকেই হয় পার্বত্য এলাকাগুলোতে।
সচরাচর বাংলাদেশে বর্ষার বাহক দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুমালার আগমন এবং তা সক্রিয় হতে দেখা যায় মধ্য-জুন অথবা জুনের তৃতীয় সপ্তাহে। কিন্তু এবারের ব্যাতিক্রম হলো জুনের গোড়াতেই অর্থাৎ মধ্য-জ্যৈষ্ঠেই আবহাওয়ার আগাম পালাবদলে শুরু হয় মৌসুমি বায়ুর আগমন। মোরা ও মৌসুমি নি¤œচাপ বর্ষণ জোরদার করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বৃষ্টির আবহ-রোধী আবহাওয়ামÐলের এল-নিনোর প্রভাব বলয় এখন হ্রাস পাওয়ার কারণে বর্ষারোহী মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়েছে। আর একই অভিমত প্রকাশ পেয়েছে ইতোমধ্যে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদেরও।
এদিকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৃষ্টিপাতে ব্যাপক অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা আবহাওয়া-জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন, বৈরী, অস্বাভাবিক ও এলোমেলো আচরণের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখেন বিশেষজ্ঞগণ। বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যান দৃষ্টে, বিগত মে মাসে সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা ১৬ দশমিক ১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। অথচ গত এপ্রিল মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০৬ দশমিক ২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আর গত মার্চ মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫২ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়। এপ্রিলের বর্ষণ বাংলাদেশে গত ৩০ বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
পাহাড় ধসের সতর্কতা
গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতায় বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভ‚মিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
বর্ষণের পূর্বাভাস
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। আজ বুধবার ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এর পরবর্তী ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে টেকনাফে ৩৩ মিলিমিটার। ঢাকা বিভাগে তেমন বৃষ্টি হয়নি। উত্তরাঞ্চলে বরাবরের মতো অনাবৃষ্টিতে ধুকছে। সেখানে গতকাল কোথাও কোথাও ছিঁটেফোটা বৃষ্টি হয়েছে। নেই আষাঢ়ের আমেজটুকু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।