Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরও সংঘর্ষের আশঙ্কা

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলাজুড়ে টানা ১০ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে জিজেএম

| প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শনিবারের ঘটনায় বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের আলামত দেখছেন মমতা
ইনকিলাব ডেস্ক : রক্তাক্ত শনিবারের পর দার্জিলিংয়ে আরও সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনাকে রাজ্য সরকার ষড়যন্ত্রের আলামত হিসেবে দেখছে। প্রসঙ্গত, পৃথক রাজ্যের দাবিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলাজুড়ে টানা ১০ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (জিজেএম)। গত শনিবার দার্জিলিংয়ের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে পুলিশের সঙ্গে দলটির কর্মী সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম। সংঘর্ষে সিংমারি এলাকায় একজন নিহত এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অন্তত ৩৫ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে জিজেএম-র দাবি, পুলিশের গুলিতে তাদের তিন সমর্থক নিহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে ব্যাপক প্রতিবাদ সংঘটিত করার আহŸান জানিয়েছে দলটি। গত শনিবারের সংঘর্ষের পর জিজেএমের প্রধান বিমল গুরুং অজ্ঞাত স্থান থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে কর্মী সমর্থকদের দার্জিলিংয়ের কেন্দ্র চক বাজারে রোববার সকাল ১০টায় কালো ব্যাজ পরে জড়ো হওয়ার আহŸান জানিয়েছেন। এরপরই কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় চারজন বা তার বেশি মানুষের একত্রিত হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দুইপক্ষের এই মুখোমুখি অবস্থান নতুন করে সংঘর্ষের সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শনিবারের সংঘর্ষে ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের একজন এসিসট্যান্ট কমান্ডান্ট কিরণ তামাং গুরুতর আহত হয়েছেন বলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত করেছেন। এর আগে কর্তৃপক্ষ ছুরিকাহত তামাংয়ের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল। এসব ঘটনার পর মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দার্জিলিংয়ের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজনাথকে রাজ্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। শনিবারের ঘটনায় বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের আলামত দেখছেন মমতা। বাংলাকে কোনোভাবেই ভাগ হতে দেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের প্রধান মমতা। আজ (শনিবার) যা হয়েছে তা এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এত বোমা এত অস্ত্র একদিনে জড়ো করা সম্ভব নয়। আমি আমার জীবন দিয়ে দিতে প্রস্তুত, কিন্তু বাংলাকে ভাগ হতে দেব না, বলেছেন তিনি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জানিয়েছে, তারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না, তবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেবে। পুলিশ বলছে, জিজেএমের কর্মীরা বেশ কয়েকটি স্থানে তাদের দিকে পেট্রোল বোমা, পাথর ও বোতল ছুড়ে মেরেছে। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তারাও কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়তে ও লাঠিপেটা করতে বাধ্য হয়েছে। আন্দোলনকারীরা দার্জিলিংয়ের পার্শ্ববর্তী কালিম্পংয়েও দুটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রাজনৈতিক এই অস্থিরতা পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত দার্জিলিং ও পার্শ্ববর্তী কালিম্পংয়ের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা দীর্ঘদিন ধরে নেপালিভাষী গোর্খাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আলাদা রাজ্যের দাবি জানিয়ে আসছে। গত মাসে মমতা বন্দোপাধ্যয় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস দার্জিলিং জেলার পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী হয়। এরপর গত সপ্তাহে রাজ্যের মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে দার্জিলিংয়ের সব স্কুলে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করার পর গোর্খাজনমুক্তি মোর্চা নতুন করে আন্দোলনের ডাক দেয়। এরই অংশ হিসেবে ৮ জুন দার্জিলিং ও এর আশপাশের কয়েক জেলায় ‘বনধ’ ডাকে তারা। এরপর সেদিনই পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আ্ন্দোলনরত জিজেএম। ওইদিনের পর থেকে কয়েক বছর পর নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে দার্জিলিং। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আড়াইশ’ সেনা সদস্যকে তলব করা হয়েছে। এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ