মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাÐের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০-এ দাঁড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১টার এ আগুনের ঘটনায় অপরাধমূলক কর্মকাÐের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা। গতকাল লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমান্ডার স্টুয়ার্ট কান্ডি এ কথা জানান। তিনি বলেন, গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছি আমরা।
এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়ে কান্ডি বলেন, হাসপাতালে এখনও ২৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।
লন্ডন পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেনফেলের আগুনের নেপথ্যে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাÐ রয়েছে কি না তা বিবেচনাধীন রয়েছে।
এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে গ্রেনফেলে আগুনের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গ্রেনফেলের বেশিরভাগ বাসিন্দাই ছিলেন মুসলিম। অগ্নিকাÐের ঘটনায় প্রথমেই মারা যান সিরীয় শরণার্থী মো. আল-হাজালি (২৩)। তাই অনেকের সন্দেহ, এটি কোনো ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ নাশতকা কি না। থেরেসা মে বলেন, মানুষ জানতে চায়, আগুন এতো দ্রæত ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়লো কেন?
কান্ডি জানান, সবার আগে যে লাশটি উদ্ধার করা হয় তা ছিল সিরীয় শরণার্থী মো. আল-হাজালির। এরপর যে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের শরীর পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। চেনার কোনো উপায় নেই। গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে বহুতল ভবনটির তিন তলায় প্রথম আগুন লাগে বলে জানিয়েছেন দমকল কর্মীরা।
মধ্যরাতের ওই সময়টায় অধিকাংশ বাসিন্দাই ঘুমিয়েছিলেন। ফলে আগুন লাগার বিষয়টি বুঝতেই খানিক সময় পেরিয়ে যায়। উপরন্তু ১২০টি ফ্ল্যাটের ওই আবাসনে আগুন লাগার পরে কোনো বিপদ সংকেত শুনতে পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন বাসিন্দাদের অনেকেই।
দমকল বাহিনীর কাছে খবর যাওয়ার ছয় মিনিটের মধ্যে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু আগুন যে এত মারাত্মক চেহারা নেবে, ভাবতে পারেননি দমকলের লোকজনও।
গ্রেনফেল টাওয়ারের ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর জানতে গতকাল একটি আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন নাতি প্রিন্স উইলিয়াম।
ওয়েস্টওয়ে স্পোর্টস সেন্টারে স্থাপিত ওই শিবিরে রানি আশ্রিত, স্বেচ্ছাসেবক ও ত্রাণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় গ্রেনফেলবাসীকে ভালোমতো সাহায্য করায় সন্তোষ জানান তিনি।
নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক
লন্ডনে বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে আসলে ঠিক কত মানুষ নিহত হয়েছে?
পুলিশের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত সেখানে নিহতের সংখ্যা তিরিশ। আরও বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। কিন্তু তাদের সংখ্যা কত, তার সঠিক হিসেব কর্তৃপক্ষ দিতে পারছে না। কিন্তু ব্রিটেনের একজন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী লিলি অ্যালেন দাবি করেছেন, লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আসলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আরেক শিল্পী র্যাপার আকালা দাবি করছেন, নিহতের সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা চলছে যে, গ্রেনফেল টাওয়ারে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা যে অনেক বেশি সেটি মিডিয়া জানে, তারপরও তারা প্রকৃত সংখ্যা প্রচার করছে না। বিবিসি বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছে যে, এই ঘটনায় অন্তত ৭৬ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একটি পরিবারের পাঁচ সদস্য। নিহতের প্রকৃত সংখ্যা কত, তা জানানোর দায়িত্ব লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের। তাদের দিক থেকে অবশ্য এখনো পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা কত হতে পারে তার কোন পরিস্কার ধারণা দেয়া হয়নি।
এ অগ্নিকাÐের ঘটনা নিয়ে ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সরকার প্রচÐ সমালোচনার মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে গতকাল ঘটনাস্থলে গেলেও কেন ঘটনার শিকার পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। সূত্র : বিবিসি। (এর আগের খবর পৃষ্ঠা-৬)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।