পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719571819](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, ফটিকছড়ি থেকে : গত ক’দিনের ভারি বৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও বন্যার পানিতে ভেসে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ৩ জন নিহত হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৩ জুন উপজেলার দূর্গম এলাকা জঙ্গল খিরামে কালেন্দী রাণী চাকমা (৪০) নামের এক উপজাতীয় নারী নিহত হয়। এ সময় নিহত’র স্বামী পাতল্য চাকমা (৪৫) ও তার মেয়ে কিরণা চাকমা গুরুত্বর আহত হয়। খবর পেয়ে ১৪ জুন সকালে ফটিকছড়ি’র ইউএনও দীপক কুমার রায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নিহত’র পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ৩০ কেজি চাল সাহায্য দেন। এদিকে বন্যার পানিতে উত্তর ফটিকছড়ির রামগড় চা বাগানের শ্রমিক ধণা কর্মকার (২৫) গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেনী নদীর ¯্রােতে ভেসে গেলে গত বুধবার তার লাশ বাগান বাজার ইউপির আন্ধারমানিক এলাকায় পাওয়া গেছে। এছাড়া জাফতনগর ইউপির তেলপারই গ্রামের জনৈক নাসির উদ্দিনের ছেলে মহিউদ্দিন ইমতিয়াজ (২০) পানির ¯্রােতে নিহত হয়। একই ভাবে গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় উপজেলার লেলাং ইউপির হাদি বাদশা আউলীয়ার মাজারের দক্ষিণে কালভার্টের সন্নিকটস্থ জমি থেকে পানির ¯্রােতে ভেসে যাওয়া মফিজুর রহমান নামীয় এক যুককের লাশ পাওয়া যায়। সে উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বড়বিল গ্রামের কোব্বাত হাজী বাড়ীর জনৈক নুরুল আলমের ছেলে। পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত মফিজ বিগত ৭ বছর ধরে দক্ষিণ রাঙ্গামাটিয়া জুলাভিটাস্থ তার শশুর বাড়িতে ঘরজামাই থাকে। গত ১৩ জুন মঙ্গলবারে ঘর থেকে বের হলেও আর ফিরে আসেনি। বন্যার পানি নেমে যাবার বেলায় স্থানীয় হাবিবুল্লাাহ সকালে মাছ ধরতে গেলে পানিতে তার লাশ দেখতে পায়। এ সময় উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভীড় করতে থাকে। পরে নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম খবর পেয়ে লাশ সনাক্ত করে।
সরেজমিনে দেখা গছে, পাহাড়ী ঢলে হালদা নদী ও সত্তা খালের ভাঙনে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকায় এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। বৃষ্টি কমলেও প্লাবিত হচ্ছে উপজেলা নতুন নতুন এলাকা। উপজেলার উত্তরাঞ্চল তুলনামূলক উঁচু হওয়ায় ধীরে ধীরে পানি দক্ষিণাঞ্চলের দিকে নামতে শুরু করায় প্লাবিত হচ্ছে এসব এলাকা। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার দাঁতমারা, নারায়ণহাট, ভূজপুর, পাইন্দং, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, সুন্দরপুর, কাঞ্চননগর, লেলাং, ধর্মপুর, বখতপুর, নানুপুর, জাফতনগর, রোসাগিংরী, সমিতিরহাট, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নসহ ফটিকছড়ি ও নাজিরহাট পৌরসভা এলাকার বহু গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। অবরুদ্ধ হয়ে আছে এসব এলাকার প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ। বন্যায় বিভিন্ন সড়ক ডুবে যাওয়ায় এখানকার বহু গ্রামের মানুষ নৌকায় চলাচল করছে। সে সাথে এখানকার অনেক বীজতলাসহ বহু গ্রামীণ রাস্তাঘাট, মৎস্য খামার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাটবাজার ডুবে রয়েছে। বানবাসীদের কাছে সরকারীভাবে এখনো কোন ত্রাণ সামগ্রী যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে, তবে এলাকা ভিক্তিক বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বানবাসীদের পাশে দাড়িয়েছে। তারা নৌকা করে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ প্রদান করছে।
এছাড়া সম্প্রতি (গত ২ জুন) বন্যায় নারায়ণহাটের দক্ষিণে ফটিকছড়ি-হেঁয়াকো সড়কে ভেঙ্গে যাওয়া বালুখালী বেইলী ব্রীজটি মেরামত না হওয়ায় ওই সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফের বন্যায় হেঁয়াকো সড়কের শান্তিরহাট, নারায়ণহাট, দাঁতমারা এলাকায় আটকা পড়ে আছে শত শত পন্যবাহী যানবাহন। বন্যাগ্রস্থ এলাকাগুলো ইউএনও পরিদর্শন করলেও অন্যান্য অনেক জনপ্রতিনিধি এলাকায় অনুপস্থিত। স্থানীয় এমপি ওমরা হজ করে দেশে ফিরেই গতকাল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ফটিকছড়ি’র ইউএনওকে পর্যাপ্ত ত্রাণ, সাহায্য সামগ্রী প্রেরণের নির্দেশনা দিয়েছেন। স্থানীয় উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা কেউ কেউ এলাকায়ও নেই। ইউপি চেয়ারম্যানরা অধিকাংশ এলাকায় রয়েছেন। তবে রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যান শোয়েব আল সালেহীন গলা পরিমাণ বন্যার পানির মধ্যে নেমে পড়ে বানবাসীদের পাশে দাড়িয়েছেন ও ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ প্রদান করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।