Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খরস্রোতা রক্তদহ বিল এখন পানিশূন্য

বিলের মুখে বরেন্দ্র প্রকল্পের বাঁধ নির্মাণ

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে : বিলের মুখে বরেন্দ্র প্রকল্পের বাঁধ নির্মাণ। পানি নিস্কাশন না হওয়ায় কুচুড়িপানায় ছেয়ে গেছে এককালের খড়স্রোতা বগুড়ার সান্তাহারের রক্তদহবিল। দিন দিন এর বিস্তার লাভকরায় গোটা বিল এলাকার কোথাও বিন্দমাত্র খালি না থাকায় এ বিল থেকে দেশী প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। আগের মত আর নুনা পবা, কানোছ, মাগুর পুটি ট্যাংরা সহ দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় যাচ্ছে না। আগে এই বিলের মাছ দিয়ে সান্তাহার শহরসহ পার্শ্ববর্তী রাণীনগর, আদমদীঘিসহ আশপাশের এলাকায় আমিষের চাহিদা মিটতো। এছাড়াও দেশের বিভন্ন জেলায় এই বিলের মাছের চাহিদা থাকায় রাজধানীসহ বেশকিছু জেলাতে এই বিলের শুস্বাধু মাছ সরবরাহ করা হত। কালের বির্বতনে এবং রানী নগর উপজেলার ঝিনা গ্রামের পার্শ্বে বিলের মুখে অপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু ¯øুইসগেটও বাঁধ নির্মাণ করায় এবং জেলেদের পলিথিনের দেওয়া বানার কারনে বর্ষা মৌসুমেও স্রোত না হওয়ার গত কয়েক বছর যাবত পানির নীচে কাশ্যাল এবং গোটা বিল জুড়ে কুচুড়ি পানায় ছেয়ে গেছে। এতে হারিয়ে যাচ্ছে বিলের দেশী প্রজাতির মাছ। বিলটি সংস্কার অভাবে দিন দিন মড়াখালে পরিণত হচ্ছে। ফলে একদিকে এলাকায় মাছের সংকট বারছে অন্যদিকে বিলপারের প্রায় ২৫ গ্রামের জেলে পরিবারের আগের মত আর ভালভাবে দিন কাটছেনা, তারা আভাব অনটনের সাথে যুদ্ধ করে দিন পার করছে। এক সময় বিল পারের ওই গ্রামগুলোর জেলেরা বেড়া, টানা তোড়া, খয়রা জাল, খলষান পলি, প্যাঁচা ও বরশিসহ ইত্যাদি দিয়ে মাছ ধরে স্থানীয় হাট বাজারে বেঁচাকেনা করে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দে দিন কাটাত। বর্তমানে বিলের চিত্র পাল্টে যাওয়ায় জেলেদের জালে আর মাছের দেখা মিলে না। তাই জেলে পরিবারের অনেকে তাদের এ আদি পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। বিল পাড়ে সান্দিড়া গ্রামের হজরত আলী (৭০) বলেন এ বিলে আমি আমার দাদার সাথে মাছ ধরেছি এবং মাছ ধরে হাট বাজারে বিক্রি করে সুখে শান্তিতে সংসার চলত। আমার বয়স হয়েছে এখন আমার ছেলেরা মাছ ধরে। বর্তমান বিলে আগের মত আর পানি থাকে না। খড়া মৌসুম আসার আগে শকিয়ে যায়, হাটু পানিও থাকে না। এ পরিস্থিতির কারণে আমাদের সংসারে অভাব অনোটন লেগেই আছে। সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কার বা বিলটি খনন করলে সারা বছর মাছ পাওয়া যাবে তাতে এলাকায় মাছের চাহিদা ও মিটবে আমাদের সংসারও ভাল ভাবে চলবে। বোদলা গ্রামের আবু মুসা বলেন সরকার প্রতি বছর এই বিলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ অবমক্ত করে। এর পাশাপাশি খনন করে ¯øুইসগেটের মাধ্যেমে পানি বৃন্ধ করে রাখলে সারা বছর পানি থাকবে। তাতে কৃষকদের ফসল নিয়ে চিন্তা থাকবেনা এবং মাছ বৃদ্ধি পাবে, সেই মাছগুলো জেলেরা ধরে দেশের আমিষের চাহিদা মিটাবে। সান্তাহারের মৎস্য ব্যবসায়ী লোকমান হাকিম বলেন, এই বিলে সারা বছর পনি রাখা সম্ভব, যদি ¯øুইস গেট বন্ধ করে রাখা হয়। বিলের জমির অবৈধ দখল দারেরা সুইজ গেট খুলে দিয়ে পানি ছেড়ে দিয়ে বিলের জমিতে ধান চাষ করার কারণে বিলের এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলার আইন শৃঙ্খলা কমিটির আলোচনা সভায় স্থানীয় সাংবাদিকরা বিলের কচুড়ি পানা সংস্কার নিয়ে মৎস্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে বিলটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ