Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরেকটি প্রমাণের মঞ্চে রোনালদো

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : যুদ্ধে নামার আগে সাজসোজ্জাও জানান দেয় অনেক কিছু। জানান দিচ্ছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোওÑ চুলের নতুন ছাঁট, বিশেষভাবে কারুকার্য করা বুটজোড়া। বোঝাই যাচ্ছে কনফেডারেশন কাপের চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি প্রস্তুত। পর্তুগিজ তারকার জন্যে এটি নিজেকে আরো একবার প্রমাণের বড় একটা মঞ্চও।
তাকে ভালোবাসুন আর নাই বাসুন এটা স্বীকার করতেই হবে যে, প্রতিটা আসরে এমনকি প্রতিটা ম্যাচেই নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার যে আপ্রাণ প্রচেষ্টা তা তার মাঝে দেখা যায়। আর এই বিষয়টিই তাকে পরিনত করেছে সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ে। প্রথমবারের মত দেশকে ইউরোপ সেরা করার পর এবার তার সামনে সুযোগ আরো একবার দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনার।
যে কোন আসর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্তুতে আসে তারকা খেলোয়াড়দের বদৌলতে। নিশ্চিতভাবেই এবারের কনফেডারেশন কাপের সবচেয়ে বড় তারকা হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। আছেন চিলির হয়ে টানা দুবার কোপা আমেরিকা জয়ী তারকা অ্যালেক্সিস সানচেসও। আরো তীক্ষ দৃষ্টি দিলে দেখা মিলবে জার্মান তারকা লেরয় সানের। তবে আসরের সবচেয়ে বড় গল্প যে রোনালদোকে ঘিরেই রচিত হবে তা বলাই যায়।
তার দল যখন গেল ইউরো আসর শুরু করেছিল তখন কারো ভাবনাতেই ছিল না যে পর্তুগালই হতে যাচ্ছে এবারের চ্যাম্পিয়ন। আসরজুড়ে রোনালদোও যে খুব আলো ছড়িয়েছিলেন তা বলা যাবে না। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে তো চোটের কারণে খেলতেই পারেননি। এরপরও চ্যাম্পিয়ন হয় তার দল। এর কৃতিত্ব যতটা না রোনালদোর তার চেয়েও কোচ ফার্নান্দো সান্তোসকে দেন ফুটবল বোদ্ধারা। সন্দেহ নেই আবারো তেমন কোন চমক দেখাতে চাইবেন সান্তোস। সাথে রিয়াল মাদ্রিদের সেই ফর্মে থাকা রোনালদোকে যদি তিনি পান হাতলে তার জন্যে ব্যাপারটা হবে দারুণ।
দারুন হবে রোনালদোর জন্যেও। সেই ২০০৩ সালে ১৮ বছর বয়সে দেশের ক্লাব স্পোর্টিং লিসবন থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পাড়ি দেওয়ার পর এ পর্যন্ত যতগুলো টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন তার প্রতিটাতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব গায়ে মেখেছেন রোনালদো। পর্তুগালকে ২০০৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিয়েছিলেন লুইস ফিলিপ স্কলারি। ২০১৬ ইউরো জয়ই তাই হয়ে রয়েছে পর্তুগালের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক অর্জন। এবার ফিফা আয়োজিত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দলকে আরো উপরে নেওয়ার সুযোগ রোনালদোর সামনে।
দার দলও আরো একবার প্রমাণের অপেক্ষায় উন্মুখ, ‘কনফেডারেশন্স কাপে এটা পর্তুগালের প্রথম অংশগ্রহন। ব্যাপারটা দারুণ এবং আমরাও প্রস্তুত নিজেদের প্রমাণ দিতে’, বলেন রোনালদো। জয় আর শিরোপার তীব্র ক্ষুধা যার মধ্যে সেই তিনিও মুখিয়ে আছেন দেশের জন্যে আরো একটি সাফল্য বয়ে আনতে। তবে বাস্তবতাও জানেন তিনি, ‘অবশ্যই এখানে জিততে পারা একটা স্বপ্ন। এটাও জানি এখানে জিততে পারাটা খুবই কঠিন। তবে ফুটবলে সবকিছুই সম্ভব।’ চলতি মাসেই কার্ডিফে জুভেন্টাসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতেন রোনালদো। এবার যদি কনফেডারেশন্স কাপ জিততে পারেন তাহলে পঞ্চমবারের মত বর্ষসেরার খেতাব এক প্রকার নিশ্চিতই হয়ে যাবে তার জন্যে। সেক্ষেত্রে তিনি স্পর্শ করবেন লিওনেল মেসিকে।
দেশের হয়ে শিরোপা বয়ে আনার অনেক সুযোগ পেয়েছেন মেসি। ব্রাজিল বিশ্বকাপেও দলকে নিয়েছিলেন ফাইনালে। এরপর দুই দুবার কোপার ফাইনালে দলকে নিয়েও শিরোপা জেতাতে পারেননি। পক্ষান্তরে দেশের হয়ে ইউরো জয়ের কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়েছেন রোনালদো। এরার তার সামনে সুযোগ নিজের সাফল্যাঙ্কটা আরেকটু উপরে তোলার।
ছয় মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন (এশিয়া কাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া, কোপা আমেরিকা জয়ী চিলি, কনকাকাফ জয়ী মেক্স্রিকো, ওশেনিয়া নেশনস কাপ জয়ী নিউজিল্যান্ড, আফ্রিকা কাপ অব নেশন জয়ী ক্যামেরুন, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল) এবং বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও স্বাগতিক হিসেবে রাশিয়া এই আট দলকে নিয়ে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ফিফা আয়োজিত এই টুর্নামেন্ট। প্রথম দিনে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক রাশিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
পর্তুগাল যদি ২ জুলাই সেন্ট পিটার্সবার্গের ফাইনালটা জিততে পারেন তাহলে রোনালদোর সাফল্যের মুকুটে যোগ করবে আরো একটি পালক, ক্যারিয়ারের ২১তম শিরোপা। তার নামটাও উঠে যাবে আরেক উচ্চতায়। এমন সুযোগ নিশ্চয় হাতছাড়া করতে চাইবেন না তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ