পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রেজাউর রহমান সোহাগ : মানুষ যখন ভয় পায় তখন সে হয় বাকরুদ্ধ হয়ে যায় নতুবা প্রলাপ বকে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে পাওয়ার পর ভারতের ওপাশ থেকে একের পর এক যেসব মন্তব্য ভেসে আসছে তাতে মনে হতেই পারে তারা আক্রান্ত দ্বিতীয়টিতে! সেমিফাইনালের আগে ফাইনালের ছক কষতেই তারা ব্যাস্ত। তার মানে বাংলাদেশকে তারা ধর্তব্যের মধ্যেই রাখছে না। ভারত অধিনায়ক তো বলেই দিয়েছেন, ‘দর্শকরা ভারত-ইংল্যান্ড ফাইনাল দেখতে চাই।’ জবাবে মাশরাফিরা যদি বলতেন ‘দর্শকরা বাংলাদেশকেও ফাইনালে দেখতে চায়’?
আসরের টপ ফেভারিট ও একমাত্র অপরাজিত দল ইংল্যান্ডের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জেনে গেছেন ইতোমধ্যেই। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ বার্মিংহামের এসবাস্টনেও কি একই ভাগ্য অপেক্ষা করছে ভারতের জন্যে? আর এমন শঙ্কা থেকে তৈরী চাপ সামলাতে বা ঢাকতেই কি এই প্রলাপ? স্বীকৃত শক্তিশালী কোন প্রতিপক্ষ হলে হারলে হয়তো কথা ছিল না কিন্তু ‘দুর্বল’ বাংলাদেশের বিপক্ষে ‘জিততেই হবে’ ধরণের এক প্রকার বাধ্যবাধকতাই কঠিন চাপের মধ্যে ফেলেছে ভারতকে।
এটা স্বীকার করতেই হবে খাতা-কলমে ভারতই এগিয়ে। তবে কিছু পরিসংখ্যান তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ঠ। এক্ষেত্রে সবার আগে আসবে ২০০৭ বিশ্বকাপের কথা। বাংলাদেশের কাছে হেরেই সেবার গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল শেবাগ-গাঙ্গুলিদের। সেই ম্যাচে মাশরাফির বলে মিডিল স্ট্যাম্প হারানো বীরেন্দ্র শেবাগই ফাইনালের অগ্রীম অভিনন্দন বার্তা দিয়ে রেখেছেন ভারতকে। এর পাঁচ বছর পর ২০১২ এশিয়া কাপ থেকেও বাংলাদেশের কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল শক্তিশালী ভারতকে। ২০১৫ বিশ্বকপেও একই ঘটনার কাছাকাছি গিয়েও তৎকালীন আইসিসি চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসনের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপে বেঁচে যায় ভারত। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের মনে এখনো দাগা দেয় সেই ম্যাচের পক্ষপাতিত্বমূলক আম্পায়ারিং। এবারো কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য একই ট্রাজেডি? আর এমন শঙ্কা থেকেই কি ‘কোন ভয় নেই’ বলে মনের ভয়কে দুর করতে চাইছে তারা?
আগের দুই ঘটনাকে এতদিন ‘অঘটন’ বলে চালিয়ে দেওয়া গেলেও ২০১৫ বিশ্বকাপের পর চিত্রটা পাল্টেছে। আগে ক্রিকেটের পরাশক্তি হিসেবে পাকিস্তান-ভারতকে মনে করা হলেও সময়ের ফেরে বাংলাদেশ আজ তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্ব›দ্বী। ভারত আর ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’-এর লড়াইটাও এখন রুপ নিয়েছে দ্বৈরথে। বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের সেই ম্যাচ যতটা না টাইগার ভক্তদের পিড়া দেয় তার চেয়েও তাদের মনকে উস্কে দেয় ‘পক্ষপাতিত্ব আম্পায়রিং’ এর রিরুদ্ধে। ‘রোহিতকে ক্যাচে পরিনত করা রুবেলের সেই বল কি নো ছিল?’ কিংবা ‘বাউন্ডারি থেকে নেওয়া মাহমুদউল্লাহ’র সেই ক্যাচটি কি আদৌ বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করেছিল?’ এমন প্রশ্ন এখনো খেলে যায় বাংলাদেশী ক্রিকেট রোমান্টিকদের মনে। এক প্রকার ‘এমন বিতর্ক থেকে তৈরী ক্ষেভের কারণে’ সেসময় আইসিসি’র সভাপতির পদ থেকে পর্যন্ত পদত্যাগ করেছিলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি।
এর পরের গল্পটা সবার জানা। ঐ বছরই বাংলাদেশ সফরে এসে সিরিজ হেরে দেশে ফেরে ভারত। এরপর থেকে রূপকথার মত বদলাতে থাকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের গল্প। একে একে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দেয় বাংলাদেশ। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন বাইরেও মিলতে শুরু করেছে সফলতার দেখা। সেই ধারাবাহিকতায় আসরের শেষ চারে পা রাখা। তাহলে কেন ফাইনালে নয়?
সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-মাশরাফিরা কি করতে পারেন তা আর আলাদাভাবে বলার দরকার পড়ে না। শুধু একটা যায়গাতেই পিছিয়ে মাশরাফিরা। তা হলো অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের কাছে সেমিফাইনাল নতুন হলেও ভারতের কাছে তা নিত্তনৈমেত্তিক ব্যাপার। যার প্রমাণ গত এশিয়া কাপে দিয়েছিল বাংলাদেশ। নিশ্চিত জেতা ম্যাচ শেষে এসে তালগোল পাকিয়ে হেরেছিল মাত্র ২ রানে, শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার অভাবেই। সেই অভিজ্ঞতাই এবার পথ্য হতে পারে বাংলাদেশের। কোচ হাতুরোসিংহেও শিষ্যদের মনে জপে দিয়েছেন গোপন মন্ত্রÑ ‘সুযোগ এসছে, সেটাকে লুফে নাও’।
ব্যাট হাতে তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা যদি ধারাবাহীকতা ধরে রাখতে পারেন, সাব্বির-সৌম্য-মোসাদ্দেকরা যদি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পতাকা ধারণ করতে পারেন, মাশরাফি যদি সামনে থেকে মুস্তাফিজ-রুবেল-তাসকিনদের পথ দেখাতে পারেন, তাহলে দিনটা বাংলাদেশের হতেই পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও পারে গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ‘দাদাগিরি’র জবাব দিতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।