পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : চাকরিতে যোগদান করার পরও বেতন পাচ্ছেন না ৩৫তম বিসিএসের দেড় হাজার প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। বেতন পেতে হলে ঘুষ দিতে হচ্ছে তৃতীয় শ্রেণির অডিটরদের। ঘুষ দিলে তবেই মিলছে বেতন, না হলে ঘুরতে হচ্ছে তাদের দ্বারে দ্বারে। কর্মকর্তাদের অভিযোগ গত মে মাসের বেতন ১ থেকে ২ জুন পাওয়ার কথা থাকলেও এখনো বেতন-বোনাস কোনটাই পাচ্ছেন না তারা। চাকরিতে যোগদান করে জীবনের প্রথম বেতনেই ঘুষের লেনদেনের সাথে জড়াতে চান না বলেই এই নিয়ে সরব হয়ে ওঠেছেন অধিকাংশ কর্মকর্তা। ভূক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, বিসিএসের ২৭টি ক্যাডারের মধ্যে প্রশাসন ও পুলিশ ছাড়া বাকী ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারাই নানাভাবে এই তৃতীয় শ্রেণির অডিটরদের কাছে জিম্মি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও দুদকে অভিযোগ করেছেন তারা। এসব মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাহিসাব নিরীক্ষককে নির্দেশনা দিয়েছেন।
৩৫তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করা কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২ মে তারা তাদের স্ব স্ব পদে যোগদান করেন। সরকারের নিয়ম অনুযায়ি তাদের মে মাসের বেতন জুন মাসের ১ থেকে ২ তারিখের মধ্যে পাওয়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বেতন না পাওয়ায় সারাদেশেই কর্মকর্তারা হিসাব ব্যবস্থাপকের (এজি) অফিসে যোগাযোগ করলে তৃতীয় শ্রেণির অডিটররা তাদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করে। অনেকটা প্রকাশ্যেই তারা বলছেন, ঘুষ দিলে তবেই বেতন-বোনাস পাবেন। অন্যত্থায় তা পাবেন না। এর মধ্যে কিছু কিছু কর্মকর্তা ঘুষ দিয়ে বেতনও নিয়েছেন। তবে যাদের আত্ম-সম্মান বোধ আছে তারা জীবনের প্রথম বেতন থেকেই ঘুষ নামক কলঙ্কের সাথে জড়াতে রাজি হননি। এজন্য তারা একত্রিত হয়ে এর প্রতিবাদ স্বরূপ ঘুষের মাধ্যমে বেতন-বোনাস নিতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এখনো প্রথম বেতন পায়নি। তবে পণ করেছি যদি না খেয়েও থাকি তার পরও ঘুষ দিয়ে বেতন গ্রহণ করে ক্যাডার সার্ভিসের অপমান হতে দিব না। আরেকজন বলেন, এখনো বেতন পাই নাই। করছি করবো বলে এজি অফিস প্রতিদিনই ঘুরাচ্ছে। ফোনে বলেছি যতদিন খুশি আটকে রাখেন, যখন ক্লান্ত হয়ে যাবেন সেদিন দিয়ে দিয়েন। তবু ঘুষ দিতে রাজি না। ৩৫তম বিসিএসের একজন ডাক্তার বলেন, ৩৫তম বিসিএস ক্যাডারদের ঈদের বোনাস তো দূরের কথা বেতনও ঈদের আগে পাবো কিনা সন্দেহ। এজি অফিস থেকে একারণ সেকারণ দেখিয়ে বেতন আটকে রেখেছে। যারা ঘুষ দিচ্ছে তাদের বেতন ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর যারা ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে তাদের কে নানাভাবে হয়রানি করাচ্ছে এবং বেতন আটকে রেখেছে। মাঝে মাঝে মনে হয় ছাত্র জীবনের রূপ ধারণ করে সাবই মিলে এজি অফিস ঘেরাও করি।
কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, আমরা কেবল এই বেতনের ক্ষেত্রে যে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছি তা নয়, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের কাছে জিম্মি। প্রতিমাসে বেতনের ক্ষেত্রে দেখা যাবে তারা আমাদেরকে হয়রানি করাচ্ছে। বদলির সময় ক্লিয়ারেন্স চাইতে গেলে দেখা যাবে সেটা নিয়েও হয়রানি করাবে। এর একটি স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান তারা।
মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আবুল ফয়েজ মোঃ আবিদ অনুপস্থিত থাকায় এ বিষয়ে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কর্মকর্তাদের বেশিরভাগই ঢাকা কেন্দ্রীক। এজন্য ঢাকা অফিসের অধীনে যারা আছেন তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য স্যার ইতোমধ্যে মৌখিক নির্দেশনা দেয়ার কথা জানিয়েছেন। চাকরি জীবনের শুরুতেই এ ধরণের অনিয়মের সাথে কর্মকর্তাদের পরিচয় হওয়া কোন শুভ লক্ষণ নয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সামনে ঈদ এখনো কেউ যদি বেতন না পায় তাহলে তারা তো হতাশ হবেই। জীবনের শুরুতে এ ধরণের হতাশার মুখোমুখী হলে তাদের কাছ থেকে কিভাবে ভালো কিছু আশা করা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।