Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঘুষের স্বর্গরাজ্য তিতাস!

অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্সবিহীন সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

দুদকের অনুসন্ধানে ২২টি খাতে দুর্নীতি চিহ্নিত করে ১২ দফা সুপারিশ করলেও তা কার্যকর হচ্ছে না

খোলা বাজারে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার প্রি-পেইড মিটারের দাম নেয়া হচ্ছে ২৩ হাজার টাকা, গ্রাহকরা সুফল পাচ্ছে না বাড়ছে হয়রানি

রাজধানীর বাসাবাড়িতে গ্যাসের তীব্র সঙ্কট। চুলা জ্বলছে টিমটিম করে, অনেক এলাকায় চুলা জ্বলছে না। গ্যাসের সঙ্কট দূর করতে মাসের পর মাস গ্যাস সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ তিতাস গ্রাহকদের আশ্বস্ত করলেও সুফল আসছে না। ঘুষ না দিলে তিতাস কোনো কাজই করে না। অথচ লাইসেন্সবিহীন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ করে সমঝোতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ বিতরণ কোম্পানিটির অধীনে অবৈধ সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন রয়েছে। অবৈধ সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের সঙ্গে ঘুষ নিয়ে বাণিজ্য করছে তিতাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। অবৈধ ওই বাণিজ্য বন্ধে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন থেকে ৮ দফায় চিঠি দিলেও কোনোই ব্যবস্থা নেননি তিতাসের এমডি। বিইআরসির আদেশ ছাড়াই প্রি-পেইড মিটারের মাসিক ভাড়া ৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করেছেন। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা মূল্যে যে প্রি-পেইড মিটার পাওয়া গেছে, সেই মিটার ২৩ হাজার টাকা করে ক্রয় করা হয়েছে। তিতাস গ্যাসের অনৈতিক আবদার অবহেলা করে, আইন দেখাতে গিয়েছেন তো আপনি শেষ। শিল্প কারখানা চালানো তো দূরের কথা নিজের মূলধন রক্ষা করা কঠিন। তিতাসের এমনি গ্যাড়াকলে পড়ে অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ রোষানলে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছেন। তিতাস গ্যাসে সেবার মান বাড়েনি। বাড়ছে শুধু গ্রাহকদের হয়রানি। তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হারুনুর রশীদ মোল্লাহ আইনের তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়ালখুশি মতো চলছেন। তিনি আবারো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে পেট্রোবাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানিটির দুর্নীতির বিষয়ে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) সার্বিক অনুসন্ধান পরিচালনা করে। দুদকের এপ্রিলে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে তিতাসের দুর্নীতির ২২টি খাত চিহ্নিত করে এর মধ্যে ১২ দফা সুপারিশ প্রদান করে। তারপরও থেমে নেই দুর্নীতি। সবকিছু জানার পরও রহস্যজনক কারণে মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা তাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে বিইআরসির সদস্য মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, বিইআরসি আইন-২০০৩ ও গ্যাস আইন-২০১০ অনুযায়ী বিইআরসির লাইসেন্স ছাড়া সিএনজি স্টেশন পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই। লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে শতাধিক ফিলিং স্টেশন। ওইসব সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২০১৪ সালে প্রথম চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তিতাসের সাড়া মিলছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমত উল্লাহ বলেন, ক’দিন আগেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। পরিবহনে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর বাসাবাড়িতে গ্যাসের তীব্র সঙ্কট। চুলা জ্বলছে টিমটিম করে, অনেক এলাকায় চুলা জ্বলছে না বললেই চলে। গ্যাসের সঙ্কট দূর করতে মাসের পর মাস গ্যাস সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের আশ্বস্ত করলেও সুফল আসছে না। অথচ লাইসেন্সবিহীন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ করে সমঝোতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তিতাসের কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, আমরা চিঠি দিয়েছি সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে। তাদের ১০ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে লাইসেন্স না নিলে লাইন কেটে দেয়া শুরু হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ৮ দফায় চিঠি দিয়েছে। বিইআরসি তো লাইন কাটতে পারে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চিঠিতে বলা হয়, আপনাকে সর্বশেষ চিঠি দেয়া হয় চলতি বছরের ২০ জুন স্মারক-২৭১৯-তে বলা হয়, এর আগে একই ইস্যুতে ২০২১ সালে ৩ দফায় চিঠি গত ২৭ জানুয়ারি, ২১ জুন ও ২১ সেপ্টেম্বর দেয়া হয়েছিল তারও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। গত ২০২০ সাল ২০১৮ ও ২০১৫ সালেও চিঠি দেয়া হয়। এরপরও তিতাস গ্যাস কোনো উদ্যোগ নেয়নি। যে কারণে বেআইনিভাবে শতাধিক সিএনজি ফিলিং স্টেশন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্যাসের সবচেয়ে বড় বিতরণ কোম্পানিটির অধীনে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন রয়েছে ৩৯৬টি। রেগুলেটরি কমিশনের আইন ২০০৩ এর ধারা ২৭(১) অনুযায়ী সিএনজি মজুদকরণ ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিইআরসি হতে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক। তাছাড়া গ্যাস আইন ২০১০-এর ধারা ৮(১) অনুযায়ী কমিশনের নিকট থেকে লাইসেন্স গ্রহণপূর্বক সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের ব্যবসা শুরু করতে পারবে মর্মে নির্দেশনা রয়েছে। ফলে অনেক সিএনজি ব্যবসায়ী লাইসেন্স গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসায়ী লাইসেন্স গ্রহণ করেননি, যা বিইআরসি ও গ্যাস আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যা একই আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চিঠির সঙ্গে ঢাকার ৪০টি, নারায়ণগঞ্জের ১৫টি, নরসিংদীর ১০টি, গাজীপুরের ১০টি, মুন্সীগঞ্জের ২টিসহ তিতাসের মোট ৭৯টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের নাম উল্লেখ করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তারপরও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে বিইআরসির কর্মকর্তারা। তিতাস গ্যাস এখন দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। ক্যাপটিভ পাওয়ারে গ্যাস সংযোগ বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। পূর্বের সংযোগে ঢালাওভাবে লোড বৃদ্ধিসহ নতুন নতুন সংযোগ প্রদান করে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তিতাসের বিরুদ্ধে। এতে করে সরকার দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, দুই গ্যাসের অপচয়। ক্যাপটিভে ১ মিলিয়ন গ্যাস দিয়ে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। একই পরিমাণ গ্যাস কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা গেলে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব।
আয়মান টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারী লিমিটেড। গ্যাস বিল বকেয়ার কারণে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। তিতাস ১২ শতাংশ সারচার্জসহ বিলম্ব মাশুল ৬ কোটি ৪১ লাখ একবারে দেয়ার নির্দেশ দেয়। আমরা বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর একটি আদেশ জারি করে, এতে প্রথম কিস্তিতে ১ কোটি টাকা ও অবশিষ্ট বকেয়া প্রতি মাসের বিলের সঙ্গে ২০ লাখ টাকার কিস্তিতে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। আমরা পরদিনই টাকা দেয়ার জন্য তিতাসের কাছে গেলে তারা গ্রহণ করেনি। উল্টো তারা আপিল করে, সেখানে প্রায় বছরখানেক বিষয়টি পড়ে থাকে। পরে আপিল বিভাগ প্রথম কিস্তি ১ কোটি টাকা অপরিবর্তিত রেখে মাসিক কিস্তির অংক ৪০ লাখ টাকা করে দেয়।
আয়মান টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাহাউদ্দিন মাহমুদ ইউসুফ বলেন, বলার ভাষা নেই। আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়া হয়েছে। কোর্টের মীমাংসিত বিষয়ে আবার প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। একজন শিল্প গ্রাহক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তার মিটারে সমস্যা দেখা দিলে তিতাস গ্যাসকে অবহিত করেন। একাধিক দফায় যোগাযোগ করার পর ২ মাস পর তারা এসে মিটার খুলে নিয়ে যান। আর সেই মিটার পরীক্ষা করতে সময় নেন আর ৬ মাস। তাহলে বুঝতে পারছেন তাদের সেবার নমুনা।
গ্যাস বিতরণের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় এই কোম্পানিটির এমন সব দুর্নীতি সামনে এসেছে, যা পুরোপুরি অভিনব ও কল্পনাতীত। বৈধ সংযোগ বন্ধ, তখন সংযোগ দেয়া হয়েছে, আবার সেসব গ্রাহকের আস্থা সৃষ্টি করার জন্য ভুয়া কাগজপত্র তুলে দেয়া হয়। ভুয়া ওই গ্রাহকরা যথারীতি পে-স্লিপের মাধ্যমে ব্যাংকে ১০০ কোটি টাকা জমা করেন। তিতাসের আবাসিক গ্রাহকেরা যেসব ব্যাংকে প্রতি মাসে গ্যাসের বিল জমা দেন, সেই ব্যাংকগুলো থেকে ওই বাড়তি টাকার হিসাব কোম্পানির কেন্দ্রীয় হিসাব বিভাগে আসে। কিন্তু এই টাকা তিতাসের হিসাবে জমা দিতে না পেরে পোস্টিং না হওয়ায় বেকায়দায় পড়ে তিতাস। আরেকটি অভিনব ঘটনা ঘটে, গভীর রাতে সার্ভারে ঢুকে অবৈধ গ্রাহককে বৈধ করার। রাতের আঁধারে কোম্পানির সার্ভারে এন্ট্রি দিয়ে বৈধ করার দায়ে ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী ধরা পড়ে। আবার এমন ঘটনা ঘটেছে গ্রাহকরা বিল জমা দিয়েছেন কিন্তু সেই বিল জমা হয়নি লেজারে। কিছু অসাধু কর্মকর্তা গ্রাহকদের এসব টাকা মেরে দিয়েছেন। গত ২৫ মে পাঠানো সেই বিজ্ঞপ্তিতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর বাঘাবন্দি (বাঘাইয়াকান্দি) গ্রামের নাম লেখা হয়। কিন্তু গ্রামবাসী দাবি করেছেন তাদের এলাকায় কখনও লাইন ছিল না। তাহলে কাটল কিভাবে। এ ঘটনায় বেশ হাস্যকর ঘটনার জন্ম দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিতাসের এক কর্মকর্তা ইনবিলাবকে বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া বর্তমান এমডি হারুনুর রশীদ মোল্লাহ যোগদানের পর থেকে কোম্পানির সেবার মান শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এখন চলছে ঘুষের স্বর্গরাজ্য। প্রি-পেইড মিটার খোলা বাজারে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও তিতাস প্রত্যেকটি মিটার কিনেছে ২৩ হাজার টাকা দিয়ে। কয়েক লাখ মিটার কিনতে তিতাস গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Nurun Nabi ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩২ এএম says : 0
    সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি বন্ধ কল্পে বেসরকারি খাতে দেওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Rafique ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩১ এএম says : 0
    শয়তানের অশেষ কর্ম তৎপরতায়, সরকারী প্রত্যেক সংস্থা,১০০% অনৈতিক কাজে নিয়োজিত। সবগুলি প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী র মাধ্যমে চালালে, দেশ ও জাতি উপকৃত হতো।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahin Ahmed ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩০ এএম says : 0
    Not only titas but also all sector in this country
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nazrul Islam ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩১ এএম says : 0
    সরকারি সব জায়গাতে এমন হাজার হাজার দুরনিতি
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Rahim Abdur Rahim ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৩০ এএম says : 0
    এরকম হাজারো অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে আজকে গ্যাসের এই পরিনতি?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘুষের স্বর্গরাজ্য তিতাস!

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ