Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪ হাজার বেল পাট ভিন্ন এজেন্সির নামে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলে বিল প্রতারণা

| প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদী ইউএমসি জুটমিলে পাটের বিল নিয়ে নজীরবিহীন এক অর্থ কেলেংকারীর ঘটনা ফাঁস হয়ে গেছে। মিলের উপ-ব্যবস্থাপক এসএএইচ মনোয়ার আলী ও মুগুরিয়া পাট ক্রয় কেন্দ্রের পার্চেজার মোজাম্মেল হক পারস্পরিক যোগসাজসে মো: সহিদুল্লাহ সরকার ও মনোয়ার হোসেন মনু নামে দুই পাট ব্যবসায়ীর ৩ হাজার ৯১৬ বেইল পাট অন্য এজেন্সির নামে জমা দেখিয়ে মোট ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯২ টাকা আত্মসাৎ করার ষড়যন্ত্র করছে। এই ঘটনার পর এসএএইচ মনোয়ার আলী রুপগঞ্জে জুট ফাইবার গøাস ইন্ড্রাস্ট্রিতে বদলী হয়ে গেছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন ও সহিদুল্লাহ মহাব্যবস্থাপকের নিকট এ মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সরকারী প্রতিশ্রæতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলী এমপি ঘটনা প্রতিকার তথা ব্যবসায়ীদের বিল প্রদানের জন্য পাট মন্ত্রীকে একটি ডিও লেটার ইস্যু করেছেন।
রাজবাড়ী সদর থানা ধুঞ্চি মহল্লার মৃত নবিজ উদ্দিনের পুত্র ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন মনু এবং নারায়গঞ্জের মেসার্স কুমিল্লা জুট ট্রেডার্সের মালিক মোঃ সহিদুল্লাহ সরকার জানিয়েছেন, নরসিংদী ইউএমসি জুটমিলের পাট বিভাগীয় প্রধান এসএএইচ মনোয়ার আলী এবং একই মিলের মুগরিয়া পাট ক্রয় কেন্দ্রের মোজাম্মেল হকের সাথে তাদের পূর্ব পরিচয় ছিল। তারা অন্য মিল থেকে নরসিংদী ইউএমসি জুট মিলে বদলি হয়ে তাদেরকে ডেকে এনে পাট সরবরাহের জন্য অনুরোধ জানান। তারা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে বিল পরিশোধের প্রতিশ্রæতিও প্রদান করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি অর্থ বছর ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন ও সহিদুল্লাহ সরকার ২ জনে মিলে বিভিন্ন সময়ে ৫১টি ট্রাকের মাধ্যমে ৩ হাজার ৯১৬ বেল পাট ইউএমসি জুট মিলে সরবরাহ করেন। যার মূল দাঁড়ায় ২ কোটি ৮২ লক্ষ ১৫ হাজার ৬০৬ টাকা। এর মধ্যে ইউএমসি কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেনকে ৩ দফায় ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহ সরকারকে পরিশোধ করেন ৯৩ লাখ ৭৭ হাজার ২১৪ টাকা। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সহিদুল্লাহ’র বকেয়া থেকে যায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ ৫১ হাজার ২৬৭ টাকা এবং ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেনের বকেয়া থেকে যায় ৫২ লক্ষ ৩২ হাজার ১২৫ টাকা। এই বিলের টাকার জন্য ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন ইউএমসি জুট মিলে গিয়ে পাটের ওজন ও চালান বুঝে নিতে গেলে পাট গ্রহণকারী গোডাউন ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম জানান যে, মুগরিয়া পাট ক্রয় কেন্দ্রের পার্চেজার মোজাম্মেল হক তার নিকট থেকে সমস্ত ওজন ও চালান বুঝে নিয়ে গেছেন। এব্যাপারে পার্চেজার মোজাম্মেল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যবসায়ীদ্বয়কে জানান, সকল বিল পরিশোধ করে দেয়া হবে। তবে আপনি পাট বিভাগের প্রধান মনোয়ার আলীর সাথে যোগাযোগ করুন।
পার্চেজার মোজাম্মেল হকের কথা অনুযায়ী ব্যবসায়ীদ্বয় বর্তমানে রুপগঞ্জে জুট ফাইবার গøাস ইন্ড্রাস্ট্রির উপ-ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত মনোয়ার আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাদেরকে কোন প্রকার পাত্তা দেননি। পরে আবার পার্চেজার মোজাম্মেল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন। পরবর্তীতে জানা যায় যে, তাদের এসএএইচ মনোয়ার আলী ও মোজাম্মেল হক ষড়যন্ত্র করে তাদের পাটগুলো চরমুগরিয়া পাট ক্রয় কেন্দ্রের ব্রোকার দিপক কংশ বনিকের নামে সরবরাহ দেখিয়ে তারা টাকাগুলো আত্মসাৎ করার ষড়যন্ত্র করছেন। এব্যাপারে ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন মনু বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ