Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবাক ব্রিজের রাস্তা তৈরি করতে বিরোধী দলীয় নেতার নির্দেশ

| প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো: শামসুল আলম খান : মাত্র ২৫০ গজ দুরত্বে দু’টি বাজার। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া চৌরাস্তা বাজার থেকে সুহিলা নতুন বাজারের মাঝখানেই সুতিয়া নদীর ওপর একটি ব্রিজ। ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বপ্নপূরণের এ ব্রিজ নির্মাণ হলেও সামনের সড়কে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে যাতায়াত আটকে দিয়েছেন এক বিএনপি নেতা।
ঠিক পাশের সরকারি জায়গাতেও অবৈধ স্থাপনা। ফলে ব্রিজ হলেও যাতায়াতের কোন কাজেই আসছে না স্থানীয় সুহিলা নতুন বাজারের আশেপাশের মাঝিহাটি, গোপালনগর, সোনাখালি, দলিরপাড়সহ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দাদের।
স্থানীয় জনসাধারণের এসব ভোগান্তির চিত্র উঠে আসে ইনকিলাবসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে। গত শুক্রবার ‘পরিকল্পনায় গলদ, ৫৪ লাখ টাকার সড়কবিহীন অবাক ব্রিজ!’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি দৃষ্টিতে আসে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য বেগম রওশন এরশাদের।
তিনি দ্রæত সেই ব্রিজের রাস্তা তৈরি করে পাবলিকের চলার পথ মসৃণ করতে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিরোধী দলীয় নেতার তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মামুন হাসান গতকাল  বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, ঘাগড়া চৌরাস্তা বাজারের সঙ্গে সুহিলা নতুন বাজার ও আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০১৬ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের এপ্রিলে এ নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
এরপরই গোল বাঁধিয়ে বসেন স্থানীয় ঘাগড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক। তিনি ব্রিজের সামনে যাতায়াতের রাস্তাকে নিজের জমি দাবি করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। স্থানীয়দের কথাতেও তিনি কান দেননি। মূলত ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান কবির সাজুর সঙ্গে বিরোধের জের ধরেই তাকে শায়েস্তা করতেই এমন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে বসেন।  
স্থানীয় গ্রামের ফজর আলী ও কৃষক আব্দুল আউয়াল অভিযোগ করে বলেন, ওই বিএনপি নেতার না কী অনেক বড় হাত আছে। স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটকে তিনি টাকা দিয়ে হাত করেছেন। পরে ২০ থেকে ২৫ দিন আগে পাবলিকের চলাফেরা আটকে দিতে বাউন্ডারি ওয়াল দিয়েছেন। তার পাওয়ারে আ’লীগ নেতারাও কিছু বলে না, প্রশাসনও বলে না।’
অবশ্য ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা মঞ্জুরুল হক নিজের জন্য সাফাই গেয়ে বলেন, আমার সাফকাওলা জমিতে আমি বাউন্ডারী দিয়েছে। সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হোক, আমি আমার বাউন্ডারী ওয়াল ভেঙে দিবো। সরকারের কাছ থেকে এক টাকাও নিবো না। সরকারকে জমি দান করে দিবো।’ এসব বিষয়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম আহমদ বলেন, আমি ব্রিজ দেখতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। যারা সেখানে অবৈধ স্থাপনা গড়েছেন তাদের উচ্ছেদ করা হবে। আর ওই ব্যক্তিকে বলে বাউন্ডারী ওয়ালও ভাঙানো হবে। পাশাপাশি শিগগির ব্রিজের জন্য রাস্তা তৈরি করা হবে।’



 

Show all comments
  • রিফাত ১১ জুন, ২০১৭, ৩:৪০ এএম says : 0
    দয়া করে খুঁজে বের করুন কার দাবি সত্য ।
    Total Reply(0) Reply
  • S. Anwar ১১ জুন, ২০১৭, ২:৩৫ পিএম says : 0
    অপরিকল্পিত নয়, বরং উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ব্রীজটি নির্মান করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। প্রথমতঃ প্রকৌশল বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা ও সরকার দলীয় চেলা কর্তৃক সরকারী বাজেটের সিংহ ভাগ (৬০%) উদরস্থ করা। দ্বিতীয়তঃ ব্রীজ সংলগ্ন বিএনপি নেতা মঞ্জুরুল হকের মুল্যবান জমি অধিগ্রহণ করে তাঁকে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ ও হেয় করা। ওই ব্রীজের পরিকল্পনাকারী প্রকৌশলীর আক্কেলে কি বলে দেয়নি যে, সংযোগ সড়ক ছাড়া কোন ব্রীজ হতে পারে না.?? যে যা-ই বলুন না কেন, আসলে সব কিছুই হয়েছে পরিকল্পনা মাফিক। তবে তা শুধু স্বীয় স্বার্থ সিদ্ধির জন্য, জাতীয় স্বার্থে নয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ