পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বøুমবার্গ : ইসলামিক স্টেট (আইএস) ইরাক ও সিরিয়ায় ক্রমেই তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা হারাচ্ছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে দু’রাষ্ট্র জুড়ে আইএসের প্রতিষ্ঠিত স্বঘোষিত খিলাফতের ধ্বংস ঘটা এখন সময়ের ব্যাপার। তবে আইএস ও সমমনা উগ্রপন্থীদের সম্পূর্ণ পরাজিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আইএস বার বার দেখিয়েছে যে তারা কেন্দ্রীয় সদর দফতরে বসে পরিকল্পনা না করেই বিশ^ব্যাপী সন্ত্রাসী হামলা চালাতে পারে। জিহাদি গ্রুপগুলো দেখিয়েছে যে তাদের সম্প্রসারণের এবং পুনরুজ্জীবিত হওয়ার ক্ষমতা আছে। বিশেষজ্ঞদের কারো কারো কথা যে আই এস লড়াইয়ে হারছে, তবে যুদ্ধে নাও হারতে পারে।
পরিস্থিতি
জুন মাসে মার্কিন সমর্থিত সিরীয় বাহিনী ইসলামিক স্টেটকে সিরিয়ার রাক্কায় তাদের কার্যত রাজধানী থেকে বিতাড়িত করার বহুকাক্সিক্ষত অভিযান শুরু করে। ইরাকে আইএসের শেষ শক্তঘাঁটি মসুল পুনর্দখলের যুদ্ধ শেষপর্যায়ে বলে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানান, আইএস যে পরিমাণ এলাকা দখল করেছিল তার ৫৫ শতাংশ এলাকা পুনর্দখল করা হয়েছে। আইএস বিরোধী অভিযানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে সরকারীভাবে ৬০টি দেশ যুক্ত রয়েছে। তারা আইএসের বিরুদ্ধে স্থলে লড়াইরত ইরাকি সামরিক বাহিনী ও সিরিয়ার বিদ্রোহী সৈন্যদের বিমান হামলার চালিয়ে সমর্থন দিচ্ছে। প্রধান শক্তিগুলো এ লড়াইয়ে কিছু স্থল সেনা নিয়োগের প্রতিশ্রæতি দেয়। রাশিয়া ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে ও সিরিয়ার সরকারী বাহিনীকে সমর্থন দেয়। জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উগ্রপন্থী ইসলামী সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে এক নতুন পরিকল্পনার অঙ্গীকার করেন। সামরিক কর্মকর্তারা মে মাসে বলেছিলেন, যে ট্রাম্পের আইসএস বিরোধী অভিযান পর্যালোচনার ফলে দু’টি পরিবর্তন হয়ঃ ফিল্ড কমান্ডারদের হাতে আরো ক্ষমতা দেয়া হয় এবং আইএস যোদ্ধাদের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে না যেতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইএস এখন বিস্তীর্ণ এলাকা হারালেও তারা এখনো বড় হুমকি হয়ে আছে। তারা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও মুসলিম বিশে^র বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে বা চালাতে উৎসাহিত করছে। মে ও জুন মাসে তারা ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে একটি কনসার্টে ও লল্ডনে এবং তেহরানে একই সাথে দু’টি বোমা হামলা চালায়।
পটভূমি
যে গ্রুপটি ইসলামিক স্টেটে পরিণত হয় তা প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। প্রকৃতপক্ষে এটি আল কায়েদার একটি শাখা সংগঠন। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আগ্রাসন চালায়। এ দখলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী ্রাকিদের এ গ্রপ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের সংখ্যালঘু সুন্নীরা ইরাকে তাদের প্রাধান্য হারায়। আল কায়েদার মত ইসলামিক স্টেটেরও লক্ষ্য ছিল একটি বিশুদ্ধ ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা, কিন্ত পন্থা ছিল ভিন্ন। তারা প্রকাশ্যে বেসামরিক মুসলমান, বিশেষ করে শিয়াদের লক্ষ্যবস্তু করে যাদেরকে তারা অমুসলিম মনে করে। কিন্তু যে সব সুন্নী আইএসের বিরোধিতা করে তারাও তাদের টার্গেট হয়। ২০০৭ সালে মার্কিন সৈন্যশক্তি বৃদ্ধি ও সংগঠিত সুন্নী বিরোধিতার ফলে গ্রুপটি দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু ইরাক থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে গ্রæপটি আবু বকর আল বাগদাদির নেতৃত্বে পুনরুজ্জীবিত হয় ২০১১ সালে। তারা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে যুদ্ধের দক্ষতা লাভ করে। ২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেট ইরাকি ও সিরীয় শহরগুলো জয় করতে শুরু করে। বিজিত এলাকা নিয়ে তারা ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় যেখানে সকল মুসলমানকে বসবাসের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা ইন্টার নেট ব্যবহার করে বিশে^র নানা স্থানের হাজার হাজার মুসলমানকে তাদের আদর্শ ও লক্ষ্যের যোদ্ধা হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করত সক্ষম হয়। আইএস তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ধারাবাহিক সহিংসতা ঘটায় যার মধ্যে ছিল অপহরণ, যৌনদাসী বানানো, নির্যাতন ও হত্যা। জাতিসংঘের একটি প্যানেল ইয়াজিদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের জন্য তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছে।
যুক্তি
আইএসের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের যুদ্ধ পরিকল্পনা বদলে ইরাক ও সিরিয়ায় ব্যাপক মাত্রায় সৈন্য ব্যবহার ঘটেছে যার ফল হয়েছে ভালো ও খারাপ দুই-ই। সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, এমনকি কৌশলগত পদক্ষেপের ক্ষেত্রেও ফিল্ড কমান্ডারদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নেয়া থেকে মুক্ত করে দেয়ায় রণাঙ্গনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভালো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বারাক ওবামার আমলে চালু এই বাধ্যবাধকতার অবসানে বেসামরিক লোকদের হতাহতের সম্ভাবনা বেড়েছে। জিহাদিদের পলায়নের সুযোগ বন্ধ করা প্রসঙ্গে সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, এর ফলে বিদেশী যোদ্ধারা সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ড ঘটানোর জন্য আর তাদের দেশে ফিরে যেতে পারবে না। তারপরও এ নীতি বেসামরিক লোকদের বিপদাপন্ন করতে পারে। ওবামার সময়ে বেসামরিক লোকদের রক্ষার জন্য জোটের সামরিক কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল, বিশেষ করে তারা যখন পলায়নপর জিহাদিদের সাথে মিশ্রিত হয়ে পড়ত। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলায় বেসামরিক লোক নিহতের সংখ্যা তাপর্যপূর্ণ ভাবে বেড়ে গেছে। ট্রাম্পের পন্থা হয়ত দ্রæত ফল বয়ে আনতে পারে , কিন্তু তার ফলে মুসলিমদের মধ্যে অশুভ ইচ্ছার সৃষ্টি হতে পারে যা জিহাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্ম দিতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।