Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খানের অপসারণ দাবি জুয়েলার্স সমিতির

রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা

| প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পকে ধ্বংসের জন্য নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খান। এজন্য তার অপসারণ দাবি করেছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক খান।  একই সাথে তিনি আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সোনা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফেরতের দাবি জানিয়ে বলেছেন, এটা মানা না হলে আগামী রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। গতকাল বুধবার বায়তুল মোকাররমে সমিতির কার্যালয়ে দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর সংগঠনের সহ সভাপতি এনামুল হক খান দোলন সাংবাদিকদের সামনে এই ঘোষণা দেন। অন্যদিকে, আপন জুয়েলার্স থেকে জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে প্রকৃত গ্রাহকদের দাবি করা স্বর্ণালঙ্কারের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে একটি ‘মধ্যস্থতা কমিটি’ গঠন করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সফিউর রহমানকে ওই কমিটির প্রধান করায় প্রশ্ন তুলেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, আপন জুয়েলার্সে অভিযানের শুরু থেকেই এই কর্মকর্তার আচরণ শোভনীয় ছিল না।
আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সোনা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিয়ে সোনা আমদানির নীতিমালা ঘোষণা না করলে  আগামী রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। পাশাপাশি এই সংগঠনের পক্ষ থেকে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খানের অপসারণও দাবি  করা হয়েছে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পকে ধ্বংসের জন্য নীল নকশা হয়েছে। তা বাস্তবায়ন করছে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খান। তিনি বলেন, এ শিল্পকে ধ্বংসের জন্য কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীদের স্বর্ণ আটক করা হয়েছে। সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে মহাপরিচালক (মইনুল খান) আশ্বাস দিয়েছিলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের হয়রানি করবেন না। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। তিনি বলেছেন, সুনির্দষ্ট অভিযোগ পেলেই অভিযান চালাবেন। এনামুল হক খান বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মুখে এক ধরণের কথা বলেন কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। মঈনুল খানের সমালোচনা করে এনামুল হক বলেন, সকাল হলেই মিডিয়ার সামনে এসে উনি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা এতো সময় পান কোথায়? এ কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ সভাপতি বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপন জুয়েলার্স যেভাবে ব্যবসা করেছে, সেরকম সারাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা একইভাবে ব্যবসা করেন। আপনি অভিযোগ দিবেন আর স্বর্ণের দোকানে অভিযান চালাবেন- এভাবে হতে দেব না। যতদিন পর্যন্ত না স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা হয় ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব। তিনি বলেন, আগামী ১১জুনের মধ্যে কমিটি করতে হবে এবং কমিটির কার্যক্রম শুরু করতে হবে। তা না হলে আন্দোলন চলবে।
বনানীর এক হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধুদের নাম আসার পর শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ আন জুয়েলার্সের ৫টি শোরুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ মণ সোনা জব্দ করে। এরপর মালিক দিলদার আহমেদ ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ দুই দফায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে গিয়ে শুনানিতে অংশ নেন। শুল্ক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, তারা এসব সোনা ও হীরা আমদানি বা মালিকানার বিষয়ে কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এ কারনে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুম থেকে আটক করা ৫৬৭ দশমিক ৫৪ কেজি (১৫ দশমিক ১৩ মণ) সোনা এবং সাত হাজার ৩৬৯ টি ডায়মন্ডখচিত স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
এদিকে, আপন জুয়েলার্স থেকে জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে প্রকৃত গ্রাহকদের দাবি করা স্বর্ণালঙ্কারের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে একটি ‘মধ্যস্থতা কমিটি’ গঠন করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সফিউর রহমানকে ওই কমিটির প্রধান করায় প্রশ্ন তুলেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, আপন জুয়েলার্সে অভিযানের শুরু থেকেই এই কর্মকর্তার আচরণ শোভনীয় ছিল না। বরাবরই বিমাতাসুলভ আচরণের মাধ্যমে এই কর্মকর্তা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আতঙ্কের মধ্যে রেখেছেন। গত মঙ্গলবার অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিদপ্তরের যুগ্ম-পরিচালক মোহাম্মদ সফিউর রহমানকে প্রধান করে গঠিত পাঁচ সদস্যের এই কমিটি আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রস্তাবনা প্রতিবেদন জমা দেবে। ‘সাময়িকভাবে আটক’ এই সোনার বিষয়ে গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য এই মধ্যস্থতা কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটিতে শুল্ক গোয়েন্দাদের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির প্রতিনিধি এবং আপন জুয়েলার্সের  প্রতিনিধি থাকবেন। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকির হোসেনকে সদস্য সচিব করে গঠিত এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এইচ এম শরিফুল হাসান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ