পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি : শব-ই-বরাত থেকে শুরু হয় খুলনাঞ্চলের চোরাচালানের গোড়াপত্তন। বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাদের গোডাউনে চোরাচালানের মাল মজুদ করে রাখে। আর রমজানের পূর্ব থেকেই গোটা বৃহত্তর খুলনাঞ্চল ছেয়ে যায় চোরাচালান পণ্যে। আর ঈদকে টার্গেট করে সাথে রয়েছে বিপুল অংকের মাদকের চালান। এখন এ ব্যবসা রমরমা। বৃহত্তর খুলনাঞ্চল ও সীমান্ত অঞ্চলে র্যাব কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা পুলিশ ও বিডিআর চোরাচালানী পণ্য উদ্ধার অভিযান চলছে। তবুও চোরাচালান সিন্ডিকেট চক্র আপন মহিমায় সক্রিয়। থামানো যাচ্ছে না যেন কিছুতেই। কোন দোকানে চোরাচালানি পণ্য নেই, সে প্রশ্ন এখন বিজ্ঞজনের।
সূত্রমতে, খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার অভিজাত বিপনী বিতান থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর দোকানে ভারতীয় চোরাচালানী পণ্যে সয়লাব। সাতক্ষীরার মার্কেটগুলো সরজমিন পরিদর্শনকালে মনে হয় এটি কলকাতার কোন একটি জেলা। ভারতীয় সব মালামালাই এখানে সহজলভ্য। বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ক্যাশিয়ার পরিচয় দানকারী ব্যক্তিরা সাপ্তাহিক মাসোহারা নিচ্ছে হরহামেশা। ব্যবসায়ীদেরও কোন আতঙ্ক বা ভীতি নেই। এ যেন ভারতের করদ রাজ্য।
এদিকে চোরাকারবারীরা প্রতি মুহূর্তে রুট বদলাচ্ছে। স্মাগলিং মালামাল আসছে বর্ডার এলাকা থেকে বিভিন্ন কায়দায়। কখনও ট্রাক ভর্তি ভারতীয় মালামালের ওপরে কাঁঠালের বহর কিম্বা শাক সবজির ঝুড়ি। কখনও কভার্ড ভ্যানে আসছে মালামাল আবার কখনও ত্রিপল দিয়ে ঢেঁকে আনছে এসব ভারতীয় পণ্য। এছাড়া বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী কমিউটার ট্রেনে ব্যাপক হারে প্রতিদিন চোরাচালানী পণ্য ও মাদক আসছে। কিন্তু সবসময় গোয়েন্দা নজরদারী এড়াতে পারে না। তিন কোটি কখনও সাত কোটি টাকার মাল ধরা পড়ার পরেও চোরাকারবারীরা বেপরোয়া। সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত খুলনাঞ্চলে ভারতীয় শাড়ি, থ্রি-পিস ও কাপড়-চোপড় এবং গরম মসলাসহ বিভিন্ন মালামাল আসছে। নগরীর বিপণী বিতানগুলোতে ভারতীয় শাড়ি কাপড়ে সয়লাব। তাদের গোডাউনে রয়েছে লাখ লাখ টাকার মালামাল।
অপরদিকে ঈদকে সামনে রেখেই কথিত ফিলিংসের জন্য ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাজা, হেরোইন আর বাংলা মদ ঢুকছে। চোরাকারবারীরা ফুলেফেঁপে কোটিপতি হচ্ছে। আর যুব সমাজ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মাদকের কারণেই বৃহত্তর খুলনার অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। চারিদিকে খুন রাহাজানি চাঁদাবাজি সংঘাত চরম আকার ধারণ করেছে। ঈদের পূর্বমুহূর্তে নেশার টাকা যোগাতে মাদক সেবীরা তৎপর হয়ে উঠেছে।
সা¤প্রতিককালে খুলনাসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় অবৈধ ভারতীয় কাপড়ের চোরাচালানী বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা এলাকাসমূহে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের টহল জোরদার করা হয়েছে। তাছাড়া পবিত্র ঈদ উপলক্ষে চোরাচালানীর আনাগোনা ও কার্যক্রম তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশনের এক কর্মকর্তা জানান, একটি চক্র অবৈধ ভারতীয় কাপড়ের চোরাচালানী করে আসছে। চোরাচালানী বন্ধে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।
এদিকে, সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে খুলনা ও সীমান্ত অঞ্চলের চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত শাড়ি কাপড় ও মাদকদ্রব্য চোরাচালান করছে। জানা গেছে, পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছে এই বাণিজ্য। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে একটি চক্র একের পর এক কালোবাজারী করলেও কেন তাদের আইনে সোপার্দ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাচ্ছে না তা জনগণের বোধ্যগম্য নয়। বর্তমান সরকার চোরাচালান রোধে খুবই আন্তরিক। অথচ ফাঁক ফোকর দিয়ে প্রতিনিয়ত খুলনাঞ্চলে চোরাচালান চলছে। সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য বেমালুম চেপে যাচ্ছে। বøাকিং রুট ওপেন করে দিচ্ছে। সূত্রমতে, শাড়ী কাপড় স্মাগলিং এর পাশাপাশি যদিও মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে খুলনাঞ্চলকে মুক্ত করতে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে ওঠা ফেনসিডিল কারখানা বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে চোরাচালান সিন্ডিকেট খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট অঞ্চলে ভারতীয় পণ্য ও ফেনসিডিল, বিয়ার, মদ, ইয়াবা ও গাঁজা সরবরাহ করছে।
জানা গেছে, এই সিন্ডিকেট চক্রের রয়েছে চার ও ছয় সিলিন্ডার উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিনের ট্রলার। যা ভারতের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের ইন্টারন্যাশনাল নৌ রুট দিয়ে রাতের অন্ধকারে খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন ঘাটে পৌঁছায়। বন বিভাগের বেশ কয়েকটি স্টেশন ও টহল ফাঁড়িকে চুক্তির মাধ্যমে ম্যানেজ করে চক্রটি এ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে।
অপরদিকে, গোটা বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ স্মাগলিং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে ঈদ মার্কেট। এই চক্রের ঈদের পূর্বে অন্যতম আয়ের আকর্ষণ হচ্ছে ফেনসিডিল ইয়াবা মদ বিয়ার ও গাঁজা। বিভিন্ন সংস্থা মাঝে মধ্যে ছিটে ফোঁটা আটক করলেও বৃহৎ অংশ এখন খোলা বাজারে। ঈদের পূর্বে তরুণ সমাজের কাছে এই মাদক হট কেক। আর সীমান্ত দিয়ে পার হয়ে আসা মাদকদ্রব্যের মধ্যে সামান্য ধরা পড়েছে র্যাব ও পুলিশের হাতে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে চোরাচালানি পণ্যের মালিকরা ধরা পড়ছে না। ক্ষেত্র বিশেষ দু’একজন যারা ধরা পড়ছে তারা দিন মজুর। আটক ব্যক্তিরা নিজেরাই হয়তো এই চোরাচালান সম্পর্কে ভালোভাবে কিছুই জানে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।