নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড যেখানে পেসারদের স্বর্গ, ঠিক তার উল্টোরুপ ইংল্যান্ডে। গতি তারকাদের দুঃস্বপ্নের যবনিকাপাত হয় এখানেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য প্রথমে দল গোছাতে গিয়ে যখন পেসারদের উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন, এখন তারাই স্পিন বোলার আর ব্যাটসম্যানদের দলে ভিড়িয়ে ছুটছেন জয়ের খোঁজে। ওভাল আর এজবাস্টনে হওয়া ম্যাচগুলোর বদৌলতে যার প্রমাণ গত চারদিন ধরে পেয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। গত ৪টি ম্যাচে (পাক-ভারত ম্যাচ চলছিল) সবমিলিয়ে (রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত) ৩১টি উইকেটের পতন দেখেছে এবারের আসর। তবে এরমধ্যে ১০ ওভার বল করে ৪-৬ উইকেট পেলেও প্রতিটি পেসারকে খরচ করতে হয়েছে কমপক্ষে ৫০-৬০ রান! গেলপরশু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পার্থকটা আরো স্পষ্ট করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার ইমরান তাহির। ৮.৩ ওভার বল করে মাত্র ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন সাফল্যের পথ।
উদ্বোধোনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হারের ম্যাচে মাত্র দুটি উইকেটের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে- যার একটি মাশরাফির অন্যটি গেছে সাব্বিরের ঝুলিতে। ওই অভিজ্ঞতা থেকেই আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। পেসারদের জন্য যে কঠিন এক পরীক্ষাই অপেক্ষা করছে তারই ফিস্তি তুলে ধরলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দলের দলনেতা তো বটেই, পেসারদেরও নেতা তিনি। পেসারদের দুঃখটা ভালোই পোড়াচ্ছে দেশের সফলতম ওয়ানডে বোলারকে। আগের দিন বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ছিল লন্ডন শহরের বাইরে, বেরিল্যান্ডে লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের স্পোর্টস গ্রাউন্ডে। ফুলহ্যাম ফুটবল ক্লাবের একাডেমি মাঠও এটি। এখানকার নেটে খানিকটা ঘাসের ছোঁয়া। তবে ওভালে এর ছিঁটে ফোটাও নেই বলে হতাশ ম্যাশ। আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটিও এই ওভালেই। শুধু ওভাল নয়, মাশরাফির মতে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডে পেসাররা এখন এরকমই অসহায়, ‘এজবাস্টনে দেখুন, মিচেল স্টার্ক সুবিধা করতে পারেনি। হেইজেলউড শেষ ওভারে ৩টি নিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছেন বটে, তবে শুরুতে রান দিয়েছেন অনেক। দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড সিরিজে কত কত রান হলো। ওদের পেস আক্রমণ তো আমাদের চেয়ে কত ভালো। তবু পারছে না। ইংল্যান্ডে সাড়ে তিনশও এখন নরম্যাল হয়ে গেছে। আমি অপেক্ষায় আছি ভারতীয় পেসারদের দেখতে। ওদের পেস আক্রমণ দুর্দান্ত। সবাই খুব স্কিলফুল পেসার। দেখব ওরা কতটা কি করতে পারে।’
ইংল্যান্ড ম্যাচে পেছন ফিরে তাকিয়ে অধিনায়ক বোলারদের দায় খুব বেশি দিতে পারছেন না, ‘বোলাররা সবাই চেষ্টা করেছে। মুস্তাফিজের বলেই কিছু হচ্ছিল না। ২-৩টা বল মাত্র একটু গ্রিপ করে। আর কিছু করেনি। রুবেল খারাপ বল করেনি, আমি চেষ্টা করেছি। রান আরও বেশি হলে হয়ত রান রেটের চাপ ওরা অনুভব করত, তখন কিছু হতে পারত। সেটা হয়নি। এমনকি সাকিব পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেনি। বারবার বলেছেন, ‘এই উইকেটে কিছুই হচ্ছে না।’
উইকেট অন্যরকম হওয়ার সম্ভাবনা সামান্যই। বাংলাদেশ অধিনায়ক এই ম্যাচেও বোলারদের কঠিন সময় দেখতে পাচ্ছেন, ‘বড় রানের ম্যাচ হলে আমাদের জন্য কাজটা কঠিন। যদি উইকেট একটু গ্রিপ করত, কিংবা যদি স্পোর্টিং হতো, ২৮০ বা ৩০০ রানের উইকেট হলে আমাদের দারুণ সম্ভাবনা থাকত। আমরা ওদের আটকে রাখতে বা তাড়া করতে পারতাম। কিন্তু সাড়ে তিনশর খেলা হলে আমাদের জন্য অনেক কঠিন।’
তাহলে কি অসহায় বসে থাকা ছাড়া কিছু করার নেই? নেই কোনো সমাধান? পেসারদের নেই কোনো উপায়? মাশরাফি দেখালেন মন্দের ভালো, ‘উপায় আছে, ১০ ওভারে ৬০ বলের ৪০টিই ইয়র্কার করতে হবে! তবু দেখা যাবে ৫০ রান হয়ে গেছে। এসব উইকেটে আসলে ৫০ কেন, ৬০ রানও বেশ ভালো। ৫ বোলার ৬০ রান করে দেওয়া মানে ৩০০ রান, যেটি বেশ ভালো বোলিং। আমাদেরও সেটিই করতে হবে। একটু বৈচিত্র দিয়ে, ব্যাটসম্যান বুঝে জায়গামত বল ফেলে রানটা যত সম্ভব আটকে রাখতে হবে।’
ওভারপ্রতি ৬ রান দেওয়াও এখন বেশ ভালো বোলিং! মাশরাফির কথায় ফুটে উঠল সময়ের বাস্তবতা। ক্রিকেট খেলাটাই বদলে গেছে অনেক। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে বদলাতে হবে বাংলাদেশকেও!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।