পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচন যথাসময়েই হবে : চরমপন্থা মোকাবেলায় ৪ পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী মে’র
ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটেনে নির্বাচনের মাত্র চারদিন আগে ‘সন্ত্রাসী’ হামলায় রক্তাক্ত হলো যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন। কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েক ব্যক্তি ভুয়া সুইসাইড ভেস্ট পরে ভ্যান চালিয়ে ও ছুরি হাতে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে এ হামলাটি চালায়। ব্রিটেনের পুলিশ বলছে, লন্ডনে আবারো সন্ত্রাসী হামলার এই ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছে। একই সাথে সন্দেহভাজন তিনজন গুলিতে নিহত হওয়ার তথ্যও প্রকাশ করেছে পুলিশ।
ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশের একজন সদস্যও এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে। আহত অন্তত ৪৮ জনকে পাঁচটি হাসপাতালে নেয়ার কথা জানিয়েছে লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। ঘটনার পর লন্ডন ব্রিজ ও পরে লন্ডন ব্রিজ রেল স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়। লন্ডনের কেন্দ্রে ব্যস্ত লন্ডন ব্রিজে পথচারীদের ওপর দ্রæত গতির একটি ভ্যান উঠিয়ে দেয় সন্দেহভাজন হামলাকারীরা। একই সাথে লন্ডন ব্রিজের কাছে বারো মার্কেট এলাকায় ছুরি হাতে সাধারণ মানুষের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। বারো মার্কেট এলাকায় অনেক রেস্তোঁরা ও বার রয়েছে। ঘটনার সময় বিবিসির সাংবাদিক হলি জোন্স লন্ডন ব্রিজে ছিলেন। তিনি বলেন, একজন পুরুষ ‘ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে’ গাড়িটি চালাচ্ছিল। ঘটানাটিকে ভয়াবহ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হামলার ঘটনা।
এদিকে লন্ডনের সন্ত্রাসী হামলাকে কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মার্চের পর থেকে এটি লন্ডনে তৃতীয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা।
এদিকে লন্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সবাইকে একত্রিত হবার এখনই সময়। তিনি বলেছেন ‘উগ্রপন্থাকে অতিরিক্ত সহ্য করা হচ্ছে এদেশে, তা বন্ধ করতে হবে’। তার ভাষায় ‘যথেষ্ট হয়েছে। আর নয়। শত্রু মোকাবেলার জন্য এখনই সময়’।
লন্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে শনিবার রাতে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ জনে। আহত অন্তত ৪৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ওই হামলার পর গতকাল ডাউনিং স্ট্রিটে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, ব্রিটেনে গত তিন মাসেরও কম সময়ে এটি তৃতীয় সন্ত্রাসী হামলা। প্রথম হামলাটি হয় মার্চ মাসে ওয়েস্ট মিনস্টার ব্রিজে। দুই সপ্তাহ আগে ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। আর শনিবার লন্ডনের কেন্দ্রস্থলেই হলো আরো একটি হামলা।
‘এ হামলাগুলোতে সন্ত্রাসীদের যে পরিকল্পনা তা দেখে মনে হচ্ছে এসব হামলা পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার নতুন নতুন ধরন দেখছি আমরা। আর সন্ত্রাসী হামলা তো সন্ত্রাসী হামলাই। তারা কখনো একে অন্যের কাজ অনুকরণ করছে। আবার কখনো সবচেয়ে হিংস্র আর ভয়াবহভাবে আক্রমণ করছে’।
‘সন্ত্রাসীরা যেভাবে কাজ করছে, যেভাবে হামলা চালাচ্ছে তা ব্রিটেন যথেষ্ট সহ্য করেছে, আর নয়’ -বলেন মিস মে। সন্ত্রাসী হামলা নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনা আনার কথাও জানান তিনি।
তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের মূল্যবোধ বজায় রেখেই চলতে হবে, কিন্তু যখন চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের বিষয় আসবে তখন কিছু বিষয় পরিবর্তনের কথা ভাবতে হবে। নির্বাচনের চারদিন আগে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে হামলার ঘটনায় গতকাল নির্বাচনী প্রচারণাও বন্ধ রাখে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু মিস মে বলেছেন, ‘তাদেরকে আমাদের গণতন্ত্রের পথ রোধ করতে দেওয়া যাবে না’। (আজ) সোমবার থেকে আবার পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা চলবে এবং নির্ধারিত দিনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান থেরেসা মে।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইসলামী চরমপন্থা প্রতিরোধে ৪টি প্রস্তাবনার কথা জানিয়ে বলেন, ‘প্রথমত সা¤প্রতিক হামলাগুলো কোনো একটি নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত নয়, তারা একটি সাধারণ ধারণার অনুসারী। এককভাবে ধ্বংসাত্মক ইসলামী চরমপন্থাকে লালন করে তারা’।
‘তারা বলতে চায় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশ্চাত্য ধ্যানধারণা ইসলামের ধ্যানধারণার পরিপন্থী। এই ধারণা প্রতিরোধ করাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’।
‘তবে সেটা শুধু সামরিক শাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সম্ভব’- -বলেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
দ্বিতীয় প্রস্তাব সম্পর্কে থেরেসা মে বলেন, উগ্রপন্থার এসব ধ্যানধারণা যেন আরো ছড়িয়ে না যায়, তারা যেন কোন জায়গা না পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
ইন্টারনেটনির্ভর সেবাগুলো নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে একত্রে কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
‘ইন্টারনেটে তারা উগ্রপন্থী কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করে। এগুলো রুখতে আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে হবে যেখান থেকে এসব নিয়ন্ত্রণ করা হবে’। ‘তৃতীয়ত, এসব চরপন্থীদের শুধুমাত্র অনলাইনে বাধা দিলেই হবে না, বাস্তব জীবনেও এসব চরমপন্থীদের নিরাপদ স্থানগুলো ধ্বংস করতে হবে। সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের অবস্থান নির্মূলে সামরিক অভিযান হচ্ছে। সে ধরনের অভিযান এখানেও হতে হবে’।
প্রধানমন্ত্রী মে’র ভাষ্য অনুযায়ী ‘উগ্রপন্থাকে অনেক সহ্য করা হয়েছে এদেশে’। সেকারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজের বিভিন্ন অংশে এদের চিহ্নিত করতে সবাইকেই কাজ করতে হবে। এছাড়া চতুর্থ পরিকল্পনায় থেরেসা মে কাউন্টার টেরোরিজম স্ট্র্যাটেজির কথা উল্লেখ করেন। তার মতে, এখনকার সন্ত্রাসী হামলাগুলো আরো বেশি জটিল হয়ে উঠছে। হামলা বা হুমকিগুলোর বিষয়ে ব্রিটেনের ‘স্ট্র্যাটেজি’ নিয়ে পুনরায় ভাবার সময় এসেছে বলছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।