Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রেকর্ডের সামনে জিদানের রিয়াল

| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : কয়েক দিন ধরে দুই শিবিরেই চলছে প্রতিপক্ষ বন্দনা। তবে এটা যে প্রতিপক্ষকে মনঃস্তাত্তিকভাবে ঘায়েল করার একটা সু² প্রায়াস তাও জানেন দুই পক্ষই। এ থেকে মুক্তির পথও জানা রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদানের। শিষ্যদের তাই দিয়েছেন অফুরন্ত ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। ঘাম ঝরানোর মাঝে রামোস-নাভাস-মড্রিচদের তাই দেখা যাচ্ছে বান্ধবীসহ সমুদ্রপাড়ে ঘুরে বেড়াতে। জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রির মনস্তত্ত¡ অবশ্য বুঝে উঠায় দায়। তবে শিষ্যদের কানে তিনিও নিশ্চয় একটি মন্ত্রই জপে দিচ্ছেন বার বারÑ জয়, জয় এবং জয়।
৫ বছর পর ঘরোয়া লিগ জিতেছে রিয়াল, রেকর্ড টনা ষষ্ঠ সেরি আ জিতে উজ্জিবিত জুভেন্টাসও। দুই দলই সেরা নিজ নিজ শক্তির জায়গায়Ñ আক্রমণে রিয়াল মাদ্রিদ আর রক্ষণে জুভেন্টাস। উজ্জিবীত দুই দলই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কার্ডিফের মহাকাব্যিক ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে আজ।
দুদলের সামনেই যেমন আছে প্রেরণার জায়গা তেমনি আছে শঙ্কাও। রিয়ালের প্রেরণনা প্রথম দল হিসেবে ইউরোপিয়ান শিরোপা ধরে রাখার। সেটি সম্ভব হলে রেকর্ড ১২তম শিরোপা জিতবে মাদ্রিদের দল। ১৯৯২ সালের ইউরোপিয়ান ক্লাব কাপ প্রাতিযোগীতা ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ’ নাম নেয়ার পর মোট ৫ বার আসরের ফাইনালে খেলেছে রিয়াল। একমাত্র দল হিসেবে ফাইনালে হারের কোন রেকর্ড নেই তাদের। শেষ চার বছরেই এ নিয়ে তৃতীয় বারের মত ফাইনালে খেলছে তারা।
তবে একটা পরিসংখ্যান চোখ রাঙাচ্ছে জিদানের দলকে। এ পর্যন্ত কোন দলই টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতেনি। এর আগে চ্যাম্পিয়নের খেতাব নিয়ে ফাইনালে উঠেও এসি মিলান (১৯৯৪, ১৯৯৫), আয়াক্স (১৯৯৫, ১৯৯৬), জুভেন্টাস (১৯৯৬, ১৯৯৭) ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (২০০৮, ২০০৯)Ñ এর কেউই শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি। এবার এই গেরো কাটাতে পারলে আরো অনেক প্রথমের সাথেই পরিচয় হবে রিয়ালের। প্রথম কোচ হিসেবে টানা দুই মৌসুম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতা, প্রথম অধিনায়ক হিসেবে সার্জিও রামোসের অর্জন, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিন ফাইনালে গোল করার অবিশ্বাস্য সুযোগ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও সার্জিও রামোসের সামনেও।
জুভেন্টাসের প্রেরণাটা জ্বলুনি থেকে। ফাইনালে সবচেয়ে বেশিবার ব্যর্থ হওয়া দলের নাম জুভেন্টাস। এক মৌসুম আগেও আরেক স্প্যানিশ দল বার্সেলোনার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। আসরের দুই শিরোপার শেষটি আবার জিতেছিল সেই ১৯৯৬ সালে। সেই দীর্ঘ্য অপেক্ষার অবসান ঘটাতে এবার বদ্ধ পরিকর তারা। তুরিনের দল ইউরোপ সেরার খেতাব জিততে চায় আরো একটি কারণেÑ তা হল, ইতালিয়ান কিংবদন্তিতুল্য গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফন। ফুটবলের সম্ভব্য সব দলীয় শিরোপায় আছে তার শোকেসে, একমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা ছাড়া।
রক্ষণ আর আক্রমনের লড়াইয়ের আড়ালে ম্যাচের নিয়ামক হতে পারেন আরো অনেকেই। রিয়ালে যেমন রয়েছে ফাইনালে জ্বলে ওঠাটা অভ্যেসে পরিণত করা সার্জিও রামোস, তেমনি জুভা দলে আছে দুই আর্জেন্টাইন পাওলো দিবালা, গঞ্জালো হিগুয়েইনের মত স্ট্রাইকাররা। ফাইনালে সাবেক ক্লাবের মুখোমুখি হতে পেরে রোমাঞ্চিত হিগুয়েইন ঘোষনা দিয়েই রেখেছেন এই ম্যাচে বন্ধুত্বকে এক পাশে রাখার।
এমন লড়াইয়ে সামনে চলে আসে দুটি নামÑ রোনালদো ও বুফন। লড়াইটা তাই সেরা গোলস্কোরার বনাম সেরা গোলরক্ষকেরও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলপোস্ট অক্ষত রাখার রেকর্ডে পিয়েতর চেকের সাথে যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে ইতালির হয়ে বিশ্বকাপজয়ী বুফন। ৩৯ বছর বয়সে এখনো সময়ের সেরা গোলরক্ষকদের একজন তিনি। চলতি আসরে ১১ ম্যাচের আটটিতেই জালে বল জড়াতে দেননি।
কিন্তু প্রতিপক্ষ রোনালদো হলে বার বারই থমকে গেছে বুফনের গø্যাভস। বুফনের বিপক্ষে গোল বরাবর ছয়টি শট নিয়ে পাঁচবারই সফল রোনালদো। পর্তুগিজ তারকার সাম্প্রতিক ফর্মও হুমকি দিচ্ছে বুফনকে। প্রথম আট ম্যাচে মাত্র ২ গোল করা রিয়াল তারকা স্বরুপে ফেরেন কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেই। বায়ার্নের বিপক্ষে দুই লেগে ৫ গোলের পর সেমিফাইনালের প্রথম লেগে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে করেন হ্যাটট্রিক। আসরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা অপেক্ষা করছেন আরো একবার জ্বলে ওঠার। ফাইনাল ম্যাচকে সামনে রেখে আত্মবিশ্বাসী রোনালদোর আশাও তেমনি, ‘তারা (জুভেন্টাস) দুর্দান্ত একটা দল, আমরাও তাই। আমার মনে হচ্ছে, আমরা দুর্দান্ত একটা ম্যাচ খেলব এবং আমরাই জিতব।’

জুভেন্টাস : রিয়াল মাদ্রিদ
 প্রথম দল হিসেবে টানা দুই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সুযোগ রিয়াল মাদ্রিদের সামনে।
 প্রথম দল হিসেবে আসরের ৫০০তম ম্যাচ খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ।
৩১তম খেলোয়াড় হিসেবে আসরে ১০০তম ম্যাচে অংশ নেবেন দানি আলভেস।
এসি মিলানের পর যৌথ দ্বিতীয় দল হিসেবে সর্বোচ্চ ছয়বার আসরের ফাইনালে খেলবে রিয়াল ও জুভেন্টাস।
ফাইনালে হারের রেকর্ড নেই রিয়াল মাদ্রিদরে।
জুভেন্টাসের সামনে পঞ্চম ক্লাব হিসেবে ‘ট্রেবল’ জয়র সুযোগ। যে রেকর্ড নেই স্বয়ং রিয়াল মাদ্রিদের। একমাত্র দল হিসেবে বার্সেলোনা এই কীর্তি দেখিয়েছে দুইবার।
আসরে ১৮ বারের সাক্ষাতে দু’দলই জয় সমান ৮টি করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ