মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে চলছে জমজমাট গরু-রাজনীতি। মোদি সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীদল ও কয়েকটি রাজ্য সরকার। শুক্রবার কেন্দ্র সরকার এক গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে হত্যা বা জবাইয়ের উদ্দেশ্যে পশু কেনাবেচা নিষিদ্ধ করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতায় সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে মমতা বলেছেন, গরু কেনাবেচায় কেন্দ্র সরকারের জারি করা নির্দেশ অসাংবিধানিক। এই নির্দেশ আমরা মানব না এবং মানতে বাধ্যও নই। এর আগে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন গরু কেনাবেচা নিয়ে মোদি সরকারের জারি করা ফরমানের বিরুদ্ধে কঠোর আক্রমণ করে বলেন, আমরা কী খাব আর কী খাব না, তা দিল্লি, নাগপুর ঠিক করে দিতে পারে না। দিল্লি বলতে তিনি বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এবং নাগপুর বলতে বিজেপির আদর্শিক পথপ্রদর্শক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদরদপ্তর মহারাষ্ট্রের নাগপুরকে বুঝিয়েছেন। গরু কেনাবেচার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করে কংগ্রেস কালো দিবস পালন করেছে এবং কেরালার ক্ষমতাসীন দল সিপিএম ২০০ স্থানে গরুর মাংসের উৎসব করেছে। তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল ডিএমকের নেতা এমকে স্টালিনের নেতৃত্বে চেন্নাইয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, জবাইয়ের জন্য গরু-মহিষ বিক্রি নিষিদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে দেশটির ছয়টি রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সরব দক্ষিণের রাজ্য কেরালার পর এবার আওয়াজ তুলেছেন পূর্বাঞ্চলের রাজ্য পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মততা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের এই খামখেয়ালী সিদ্ধান্ত মানবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞাকে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক বলে বর্ণনা করে মমতা বলেন, এর বিরুদ্ধে পশ্চিম বঙ্গ সরকার আদালতে যাবে। এটা ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা খর্ব করা। কারণ, প্রাণীসম্পদ রাজ্যের এখতিয়ারভুক্ত। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাজ্য সরকারের হাতে। আমরা এই নিষেধাজ্ঞা মানছি না। আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং কেন্দ্রীয় কাঠামো ধ্বংস না করার অনুরোধ করছি। পশু বাণিজ্য নিয়ে গত শুক্রবার নতুন আইন ঘোষণা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, অনিয়ন্ত্রিত ও নজরদারিবিহীন পশু বাণিজ্য প্রতিরোধে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও সমালোচকরা বলেছেন, হিন্দু ধর্মে গরু পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়। হিন্দু অধ্যুষিত ভারতে ভোটের রাজনীতির অংশ হিসেবে বিজেপি সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত পশু খামারিদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এছাড়া দেশটির খাদ্য ও চামড়া শিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৪ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর দেশটির কয়েকটি রাজ্যে গোহত্যা নিষিদ্ধ করা হয়। পশ্চিমের রাজ্য গুজরাটে গত মার্চে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাশ হয়। সেখানে গোহত্যার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ভারতে গোরক্ষার নামে অনেক মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজায়ান বলেন, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় সংবিধানের লঙ্ঘন। সেইসঙ্গে এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির স্বাধীনভাবে নিজের খাবার বেছে নেওয়ার মৌলিক অধিকার হরণ। ওই দুইটি রাজ্য ছাড়াও ইউনিয়ন টেরিটরি অব পন্ডিচেরি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করার কথা জানানো হয়েছে। কর্নাটক, তেলেঙ্গানা এবং মেঘালয় রাজ্য সরকারও এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বলে জানিয়েছে। বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।