হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির খড়গ : আসামের এনআরসি এবং বাংলাদেশ
কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক দাবীর আন্দোলনে ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছিল,
কে. এস সিদ্দিকী
ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম রোজা। পুরো রমজান মাস রোজা পালন করা মুসলমানদের ওপর ফরজ হয়েছে। হিজরতের পর দ্বিতীয় বর্ষে মদীনায় রোজা ফরজ করা হয়। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (স.) শাবান মাসের শেষ তারিখে রমজান মাসের আগমন উপলক্ষে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দান করেন, যাকে রমজানের মাসের পহেলা ভাষণ নামে অভিহিত করা হয়। ভাষণে রমজানের প্রথম দশককে রহমত, দ্বিতীয় দশককে মাগফিরাত, তৃতীয় দশককে দোজখ হতে মুক্তির দশক বলা হয়েছে। রমজান মাসের রাতগুলোতে তারাবীহর নামাজ এবং শেষ দুই দশকে এতেকাফের বিধান সুন্নাত করা হয়েছে। শেষ দশকের কোনো বেজোড় রাতে রয়েছে শবে কদর। চান্দ্র ইসলামী হিজরি ক্যালেন্ডারের নবম মাস রমজান। এটি নুজুলে কোরআনেরও তাৎপর্যমÐিত মাস। রাসূলল্লাহ (স.) এর মক্কী ও মদীনা জীবনের ২৩ বছর মুদ্দতের মধ্যে সমগ্র কোরআন প্রত্যেক রমজান মাসে অল্প অল্প করে প্রয়োজন অনুযায়ী নাজেল হয়েছে। প্রথমবার একই সঙ্গে লাওহে মাহফুয হতে প্রথম আসমানে নাজেল করা হয়। সেখান হতে ফেরেশতা হযরত জিবরাঈল (আ.) রাসূলুল্লাহ (স.) এর নবুওয়াত রেসালাত জীবনের ২৩ বছর সময়কালের মধ্যে কোরআন নাজেল করেন। এটাই হচ্ছে নুজুলে কোরআনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। লওহে মাহফুয হচ্ছে রমজান ও কোরআনের মূল উৎস। অতএব বলা যায়, এলাহীবিধান রমজান ও কোরআন লওহে মাহফুযের নিদর্শন। সূরা তওবার ৩৬নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনার মাস বারোটি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’ আয়াতে বারোটি মাসের মধ্যে চারটিকে সম্মানিত বলা হয়েছে। এ চারটি ধারাবাহিকভাবে যিলকদ, যিলহজ্ব, ও মহররম এবং অপরটি এককভাবে রজব। তবে রজব সম্পর্কে আরববাসীদের কতিপয় গোত্রের মতে, রজব হলো রমজান। আর মুযার গোত্রের মতে, রজব হলো জমাদিউস সানী ও শাবানের মধ্যবর্তী মাসটি। অর্থাৎ রমজান মাস। রাসূলুল্লাহ (স.)ও তাঁর ঐতিহাসিক খোতবায় মাসটি রমজান বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে আসমান-জমিন সৃষ্টি লগ্নে যে বারোটি মাস সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে রমজান সেগুলোর একটি। লওহে মাহফুজে যার উল্লেখ রয়েছে। বর্ণিত চারটি মাসকে সম্মানিত বলার ভিন্ন প্রেক্ষাপট রয়েছে। প্রাচীন আরবদের মধ্যে এই রীতি প্রচলিত ছিল যে, বছরে বারো মাসের মধ্যে উল্লেখিত চার মাসের প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করতো এবং এগুলোর প্রতি আদব বজায় রাখতো। এসব মাসে তারা রক্তপাত, খুনা-খুনি, ঝগড়া-বিবাদ এবং ফিতনা-ফ্যাসাদে একেবারেই লিপ্ত হতো না। হজ্ব-ওমরা পালনে নিরাপত্তা বিধান কল্পে এবং তেজারতি বাণিজ্যিক কাজ কারবারে শান্তি রক্ষার স্বার্থে এবং নিরাপদ সফরের জন্য ওই সব কাজ হতে বিরত থাকতো। এমনকি কোনো ব্যক্তি প্রতিশোধ গ্রহণেও উদ্যত হতো না। এমনকি বলা হয়ে থাকে যে, মিল্লাতে ইবরাহিমীর মূলে বর্ণিত চার মাসকে সম্মানিত গণ্য করা হয়েছিল। ইসলাম পূর্ব জাহেলি যুগের স্বতন্ত্র আলোচনার অবকাশ এখানে নেই। উক্ত বার মাস ধরনের ভিন্ন প্রকৃতির। পক্ষান্তরে রমজান মাসের বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং মাহাত্ম্য ইত্যাদি ভিন্ন প্রকৃতি, যা কোরআনে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স.) রমজান উপলক্ষে তাঁর প্রদত্ত ভাষণে বিশদ বিবরণ প্রদান করেছেন। আল্লাহতায়ালা কোরআনে এই মর্মে বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর যেন তোমরা পরহেজগারী অর্জন করতে পারো।’ (সূরা বাকারা : আয়াত-১৮৩)। এ আয়াতে পূর্ববর্তী লোকদের বলতে হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত সকল উম্মত এবং শরীয়তকেই বোঝানো হয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে, রোজার সময়সীমা, সংখ্যা এবং কখন তা রাখা হবে, এসব ব্যাপারে আগেকার উম্মতদের রোজার সাথে মুসলমানদের রোজার পার্থক্য হতে পারে বাস্তব ক্ষেত্রে হয়েছেও তাই। বিভিন্ন সময় রোজার সময়সীমা এবং সংখ্যার ক্ষেত্রে পার্থক্য হয়েছে।
এ পার্থক্যসহ নবীগণের রোজা রাখার বিধান সম্পর্কে বলা হয় যে, হযরত আদম (আ.) থেকে রাসূলুল্লাহ (স.) পর্যন্ত আম্বিয়ায়ে কেরাম রোজা রাখতেন। সহি বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত নূহ (আ.) সর্বদা রোজা রাখতেন এবং তিনি এক দিন রোজা রাখতেন, এক দিন আহার করতেন। যাকে বলা হয় সওমে বেছাল। হযরত ঈসা (আ.) একদিন রোজা রাখতেন, দুইদিন রাখতেন না। হযরত মোহাম্মদ (স.) এর উম্মতের সুবিধা ও সহজ করার জন্য বছরে মাত্র একমাস (রমজান) রোজা ফরজ করা হয়েছে। কোনো কোনো উম্মতের জন্য রোজা ফরজের পরিবর্তে ওয়াজিব ছিল বলে বর্ণিত হয়ে থাকে। বলা হয়, হযরত নূহ (আ.) এর কওম ছিল খুবই বলিষ্ঠ ও শক্তিশালী। তাদের এ দৈহিক ও শারীরিক বলিষ্ঠতার কারণে তাদের প্রতি সর্বদা রোজা রাখার নির্দেশ ছিল এবং যখন মানবীয় শক্তি হ্রাস পেতে থাকে রোজার সংখ্যাও হ্রাস পেতে থাকে। এমনকি রাসূলুল্লাহ (স.) এর উম্মতের আসানির জন্য বছরে মাত্র এক মাস রোজা রাখার বিধান আছে। মাহে সিয়ামের বা সিয়াম সাধনার মাস রমজান। এ মাসের বিশেষ গুরুত্ব তাৎপর্য এবং মাহাত্ম্যের বিষয়টি কোরআনের বিভিন্ন আয়াত দ্বারা প্রমাণিত এবং সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। এ মাসের রোজা ফরজ হওয়ার কারণটি সূরা বাকারার উল্লেখিত আয়াতে ‘যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পারো’ বাক্যের মাধ্যমে ব্যক্ত করা হয়েছে। এ বরকতময় পবিত্র মাসে নুজুলে কোরআনের ঘোষণা মাসটির আরো একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। যেমন একই সূরায় বলা হয়েছে, ‘রমজান মাসই হলো সে মাস যাতে নাজেল করা হয়েছে কোরআন যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী, কাজই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে সে এ মাসের রোজা রাখবে।’ (আয়াত : ১৮৫)
রমজানের পবিত্র দিবসগুলোর মধ্যে অতি বরকতময় এমন একটি রাত আছে যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম ও মর্যাদার অধিকারী। এ রাতে ফেরেশতাগণও রুহ এর নুযূল হয়ে থাকে। রাতটির নাম লাইলাতুল কদর যা শবে কদর নামে সুবিখ্যাত। কোরানের ৩০তম পারায় কদর নামক একটি স্বতন্ত্র সূরায় এ রাতের মাহাত্ম্যগুলো বর্ণিত হয়েছে।
কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী আল্লাাহতায়ালা ৬ দিনে জমিন-আসমান সমূহ এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। এ সময় বারোটি মাসও সৃষ্টি করেছেন। যাতে বেশ কম করার ক্ষমতা কারো নেই। এগুলোর মধ্যে রমজান মাস একটি। এ মাসকে আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করেছেন। সকল আসমানি কিতাব অবতরণ করার জন্য। তাই আসমানি কিতাবগুলোর ইতিহাস তালাশ করতে গেলে এ তথ্য জানা যায়। এ সময়েরই উত্তম হচ্ছে লওহে মাহফুয। সেখান থেকে যুগে যুগে আম্বিয়ায়ে কেরামের প্রতি আসমানী গ্রন্থ ও সহিফাগুলো নাজেল হতে থাকে বিক্ষিপ্তভাবে রমজান মাসে। সর্বশেষ নবী রাসূল হযরত রাসূলুল্লাহ (স.) এর প্রতি সর্বশেষ আসমানি কিতাব কোরআন কারীমের নুজুলের সূচনা হয়েছিল। লওহে মাহফুয হতে রমজান মাসের ২৪ তারিখে।
রোজা রাখার সময় ও সংখ্যা সবসময় এক ও অভিন্ন ছিল না। কোরআনের আয়াত ‘তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল’ এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে কোরআনের বিখ্যাত ভাষ্যকার আল্লামা ইবনে কাসির লিখেছেন, ‘জেহাকের মত হচ্ছে হযরত নূহ (আ.) এর যুগ থেকে প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোজা রাখার নির্দেশ ছিল। মহানবী (স.) এর উম্মতের জন্য তা পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং তাদের ওপর এ পবিত্র মাসের (রমজানের) রোজা ফরজ হয়ে যায়।’
হযরত ইমাম হাসান বসরী (রা.) বলেছেন যে, পূর্ববর্তী উম্মত বা জাতিগুলোর প্রতিও রোজা ফরজ ছিল। এ সম্পর্কে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেছেন, পূর্ববর্তী উম্মতগণের প্রতি এইরূপ নির্দেশ ছিল যখন তারা এশা এর নামাজ আদায় করত শুয়ে পড়তো, তখন তাদের ওপর পানাহার করা ও স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করা হারাম বা নিষিদ্ধ ছিল। অপর বিখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন যে, পূর্ববর্তী লোকগণের দ্বারা আহলে কিতাব অর্থাৎ গ্রন্থধারীদের বোঝানো হয়েছে। (তাফসীরে ইবনে কাসির )
আল্লাহতায়ালা যখন হযরত মূসা (আ.)কে তুর পর্বতে ডেকে তওরাত গ্রন্থ দান করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন তখন তাকে ৩০ রাত তথায় অতিবাহিত করার এবং এতেকাফ অবস্থায় কাটাবার হুকুম দেন। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘এবং সেই সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন আমি মূসার সঙ্গে ৩০ রাতের ওয়াদা করেছিলাম। উহাতে দশ রজনী আরো বর্ধিত করেছেন। অতএব, তার প্রভু পরওয়ার দেগারের সাক্ষাতের সময় চল্লিশ রজনী পূর্ণ হলো।’ (সূরা আরাফ: রুকু-১৭)
এ সময়কালে হযরত মূসা (আ.) রোজাব্রত পালন করেছিলেন। পÐিতগণের বর্ণনা মোতাবেক যখন ৩০তম রজনী শেষ হবার পর আল্লাহতায়ালার সাথে হযরত মূসা (আ.) এর সাক্ষাতের কথা ছিল, তখন তিনি রোজা পালনের ফলে মুখে যে দুর্গন্ধ হয়েছিল, তা দূর করার জন্য মেসওয়াক ব্যবহার করেন। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার নিকট মূসা (আ.) এর এ আচরণ পছন্দ হলো না। তিনি আরো দশ দিনের রোজা বৃদ্ধি করে দিলেন। আল্লামা শাব্বীর আহমদ উসম (রা.) আলোচ্য আয়াতটির ব্যাখ্যায় বলেন, বনি ইসরাইল যখন নানা প্রকার দুঃখ দুর্দশা হতে মুক্তি লাভ করে, তখন তারা হযরত মূসা (আ.)এর নিকট অনুরোধ জানায় যে, তাদের জন্য যেন তিনি আসমানি শরীয়তের ব্যবস্থা করেন অথবা তাদের আবেদন আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করেন। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে কমপক্ষে ৩০ দিন এবং বেশির বেশি ৪০ দিনের প্রতিশ্রæতি দান করলেন যে, তোমরা যখন এই সময়কাল অনবরত রোজা পালন করবে এবং তূর পর্বতে এতেকাফ অবস্থায় থাকবে তখন তোমাদেরকে তওরাত গ্রন্থ দান করা হবে। (তাফসীরে উসমানী)
বলা হয়ে থাকে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের ওপরও রমজান মাসের ৩০ রোজা ফরজ ছিল। কিন্তু খ্রিস্টানরা এতে কিছু পরিবর্তন আনয়ন করে এভাবে যে রমজানের রোজা যখন গরমকালে হতো তখন তারা একে শীতকালে পরিবর্তন করে নিতো এবং এর পরিবর্তে তারা অতিরিক্ত দশটি রোজা বাড়িয়ে দিতো। এভাবে তাদের রোজার সংখ্যা দাড়াতো ৪০ দিন। অপর পক্ষে ইহুদীরা তাদের ২৯ তারিখে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে সন্দেহে সংশয়ে তারা পড়ে রইলো। এমনকি তাদের রোজার সংখ্যা পঞ্চাশে পরিণত হয়ে গেলো। (খাজেন)
একটি হাদীস অনুযায়ী ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি সহিফাসমূহ এবং তাওরাত ও ইঞ্জিল (বাইবেল) সমস্তেরই নাজিল হয় রমজান মাসে এবং কোরআন শরীফও রমজান মাসে ২৪ তারিখ লওহে মাহফুয হতে সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গরূপে একই সঙ্গে আসমানে প্রেরণ করা হয়। অতঃপর অল্প অল্প করে প্রয়োজন অনুযায়ী তার প্রতি নাজেল হতে থাকে এবং প্রতি রমজান মাসে হযরত জিব্রাইল (আ.) নাজেলকৃত কোরআন বারবার তাকে শুনাতে থাকেন। (তাফসীরে উসমানী)
লওহে মাহফুজ হতে রমজান মাসে কোরআন সহ সকল আসমানী গ্রন্থ নাজেল হওয়ার একটি প্রামাণ্য দলিল উল্লেখিত হাদীস। তা ছাড়া আরো বিভিন্ন বর্ণনায় বিষয়টি অধিক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- আল্লাহ তায়ালা এ মাসটিকে স্বীয় ওহী এবং আসমানি কিতাব নাযিল করার জন্য নির্বাচিত করেছেন। কোরআনও (প্রথম) এ মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে। মুসনাদে আহমদ গ্রন্থে হযরত ওয়াশেলা ইবনে আসকা থেকে রেওয়াত করা হয়েছে যে, রাসূল করীম (স.) বলেছেন, হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি সহিফা সমূহ (কারো কারো মতে ২০টি) রমজান মাসের ১ তারিখে নাজেল হয়েছিল। একই মাসের ৬ তারিখে তাওরাত মূসা (আ.) এর প্রতি এবং ১৩ তারিখ ইঞ্জিল (বাইবেল) নাজেল হয়েছিল হযরত ঈসা (আ.) এর প্রতি, যবুর নাজেল হয় হযরত দাউদ (আ.) এর প্রতি রমজানের ১২ তারিখে। ইঞ্জিল ১৮ রমজানে নাজেল হয় বলেও বর্ণনা রয়েছে। সর্বশেষ কোরআন অবতরনের সূচনা হয় সর্বপ্রথম লওহে মাহফুজ হতে ২৪ রমজানে অর্থাৎ কোরআন সর্বশেষ আসমানি কিতাব হিসেবে সর্বশেষ নবী রাসূল হযরত মোহাম্মদ (স.) এর প্রতি তার নবুওয়াতকালীন ২৩ বছর মুদ্দতে পূর্ণাঙ্গ নাজেল হলেও এর সূচনা হয়েছিল ২৪ রমজান লওহে মাহফুজ হতে। যেখানে আল্লাহর পাকের সাথে তাঁর নাম অংকিত রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে সৃষ্টিলগ্নে সর্বশেষ নবী রাসূলের নাম লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং তাঁর প্রতি কোরআন অবতরণ হয় লওহে মাহফুয হতে ২৪ রমজানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।