বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় কার্যকরি উদ্যোগ, গ্রিক দেবীর মূর্তি অন্যত্র স্থাপনের অপচেষ্টা এবং মূর্তির পক্ষাবলম্বনকারী অপশক্তিকে প্রতিহত করার দাবিতে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন গতকাল বায়তুল মুকাররম এলাকায় পৃথক পৃথক সমাবেশ ও মিছিল করেছে। বিভিন্ন মিছিলে নেতৃবৃন্দ উলামায়ে কেরামের তীব্র প্রতিবাদের মুখে দেরিতে হলেও সুপ্রিমকোর্টের মূল ফটকের সামনে থেকে মূর্তি অপসারণ করায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন জানান। তারা বলেন, গ্রিক দেবীর মূর্তি ন্যায় বিচারের প্রতীক নয়। সুতরাং ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে এই মূর্তি অন্যত্র স্থাপনের অপচেষ্টা কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। এদেশের ইসলামী জনতা মূর্তির পক্ষের অশুভ শক্তিকে যে কোন মূল্যে প্রতিহত করবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গ্রিক দেবীর মূর্তি ন্যায়ের বিরুদ্ধের প্রতীক। মূর্তির পক্ষে অবলম্বনকারীরাও ন্যায়ের বিরুদ্ধে অবলম্বনকারী ও বিশৃঙ্খল সৃষ্টিকারী। এ জন্যই তারা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সুপ্রিমকোর্ট অঙ্গনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর চড়াও হয়েছে। এছাড়া শুক্রবার দুপুরেও মূর্তির পক্ষ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রমজানকে সামনে রেখে একদিকে ইবাদত বন্দেগী করে অপরদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করে। মূল্যবৃদ্ধি খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করতে হবে। মাহে রমজানের সম্মানে সব ধরণের গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে ও রাখতে সরকারকে কার্যকরি উদ্যোগ নিতে হবে। গতকাল বাদ জুম’আ বায়তুল মুকাররম উত্তর গেইটে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, সকল দিক থেকে রমজানের মাহাত্ব ও গুরুত্ব অপরিসীম হলেও রমজানের মর্যাদা আমাদের দেশে চরমভাবে ভুলুন্ঠিত। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবেও কোন উদ্্েযাগ নেই। যার ফলে রমজান মাসেও একদল মুনাফাখোর ও ব্যবসায়ী রমজানকে মুনাফালুটার মুখ্যম সময় মনে করে মূল্যবৃদ্ধিসহ খাদ্যে ভেজাল দেয়া শুরু করে। নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যাদির কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি করে রমজানের গুরুত্বকে ¤øান করে দেয়া হয়। অশ্লীলতা-বেহায়াপনা, বেপর্দা-নগ্নতার ছড়াছড়ি করে রোজাদারদের পবিত্রতা বিনষ্ট করার পরিবেশ তৈরি করছে। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা সরকারও মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। মূর্তি নিয়ে কোন রাজনীতি করা হলে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সে আন্দোলনের মাধ্যমে ঈমানদার জনতা বাম-রামদের প্রতিহত করবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম অপসারিত মূতি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়া নতুবা ধোলাইখালে শ্রমিকদের কল্যাণে দিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, পুন: স্থাপনের চেষ্টা করা হলে সারাদেশে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশ-এর পূর্বে মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে বায়তুল মুকাররম উত্তর গেইট থেকে একটি বিশাল মিছিল পল্টন মোড় হয়ে পুনরায় হাউজ বিল্ডিং এসে শেষ হয়। আজ শুক্রবার বাদ জুম’আ বায়তুল মুকাররমের উত্তর গেইটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরী রমজানের পবিত্রতা রক্ষার দাবিতে আয়োজিত মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূূম, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সেক্রেটারী মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, এইচ এম সিদ্দিকুর রহমান, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, যুবনেতা মানসুর আহমদ সাকী, নুরুল ইসলাম নাঈম, ছাত্রনেতা সাইফ মুহাম্মদ সালমান প্রমুখ।
আমীরুল মুছলিহীন হযরত নেছারাবাদী হুজুর
সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে আসন্ন পবিত্র রমযানের পূর্বেই গ্রীক মূর্তি অপসারণ করে সমকালীন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আমীরুল মুছলিহীন হযরত নেছারাবাদী হুজুর।
ঝালকাঠি নেছারাবাদ দরবার শরীফের কেন্দ্রীয় মসজিদে জুম’য়ার নামাযে আগত হাজার হাজার মুসল্লীদের উপস্থিতিতে আমীরুল মুছলিহীন হযরত নেছারাবাদী হুজুর বলেন- এই গ্রীক মুর্তির সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কোন সম্পর্ক নেই।
নেছারাবদী হুজুর আরো বলেন- আমরা দলীয় রাজনীতি করি না কিন্তু ইসলামবিরোধী কাজ যেই করুক না কেন আমরা তার প্রতিবাদ করা ঈমানী দায়িত্ব মনে করি। দেশ, জাতী ও ইসলামের স্বার্থে সরকার কিংবা বিরোধীদল, মুসলিম কিংবা অমুসলিম যেই হোক আমরা তাদের ভাল কাজের স্বীকৃতি ও সমর্থন করেই যাব। সরকারের অন্ধ সমর্থন বা অহেতুক বিরোধীতাকে আমরা নাজায়েজ মনে করি।
পবিত্র মাহে রমযানকে সামনে রেখে শা’বান মাসের শেষ জুম’য়া আদায়ের জন্য গ্রীষ্মের প্রচÐ তাপদাহ উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে ৫ তলা বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় মসজিদ পূর্ণ হয়ে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে সমবেত হতে থাকে। এসময় নেছারাবাদী হুজুরের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে মুসল্লীগণ মুহুর্মুহু শ্লোগান দেয়।
বাংলাদেশে খেলাফত মজলিস
সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণ করায় প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান, অভিবাবক পরিষদের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূর্তি সরানোর আশ্বাস দিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়ন হওয়ায় আমরা তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নেতৃদ্বয় আরো বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিক হিসেবে স্থাপন করা এই মূর্তি সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে সরিয়ে অন্য কোথায়ও বসানো হলে তা দেশের ঈমানদার তাওহিদী জনতা মেনে নিবে না। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহবান জানান। নেতৃদ্বয় বলেন, কোনো মুসলমান মূর্তিকে কখনো মেনে নিতে পারে না। মূর্তির বিরুদ্ধে মুসলমানদের আন্দোলন চলবে। দেশের রাস্তায় মোড়ে মোড়ে যে সকল মূর্তি রয়েছে তা অপসারণেরও দাবী জানান এবং ভবিষ্যতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার আহবান জানান। তারা বলেন, ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে গ্রীক দেবী পুন:স্থাপন কিছুতেই মেনে নেয়া হবে না
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী
দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন তারা।
গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে মিছিলপূর্ব সমাবেশে হেফাজতের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, মূর্তি সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রæতি রক্ষা করেছেন। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দোয়া করছি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যেন সবসময় ইসলামের খেদমত করতে পারেন।
হেফাজত নেতা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনো অনেক মূর্তি রয়েছে, তা অবিলম্বে সরাতে হবে। কোনোভাবে রাস্তার পাশে মূর্তি স্থাপন মেনে নেয়া হবে না। এ দেশে মূর্তি সংস্কৃতি চলবে না।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, দেশের মাটিতে আর কোনো মূর্তি স্থাপন করা যাবে না। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে তৌহিদি জনতা দাঁতভাঙা জবাব দেবে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মুফতি ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিসের সমাবেশে সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল বলেছেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজানের পবিত্র বিনষ্টকারী যেকোন তৎপরতা থেকে সকলকে দূরে থাকতে হবে। সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণ তাওহিদী জনতার আন্দোলনের বিজয়। তাওহিদী জনতার আন্দোলনে বাধ্য সরকার সুপ্রিম কোর্ট থেকে গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণ করেছে। দাবি অনুযায়ী মাহে রমজানের পূর্বেই গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণে করায় আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই। একই সাথে আমরা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করতে চাই এ মূর্তিকে সুপ্রিম কোর্টের আশেপাশে বা অন্যকোন উন্মুক্ত স্থানে স্থাপনের চেষ্টা করা হলে আবারো আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে। আসন্ন মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার দাবীতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী আয়োজিত স্বাগত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল বাদ জুম্মা বায়তুল মোকাররম হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনে ঢাকা মহানগরী সহসভাপতি ডাঃ রিফাত হোসেন মালিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা নোমান মাযহারী, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী। উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, হাফেজ নূরুল হক, মো: জহিরুল ইসলাম, খন্দকার সাহাব উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
ইসলামী ঐক্যজোট
ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেছেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে থেমিস দেবীর নিকৃষ্ট আবর্জনা অপসারণ করায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সা¤প্রদায়িক উস্কানিমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সংবিধান বিরোধী গ্রীকদেবী থেমিসের মূর্তি অপসারণ করায় দেশবাসী প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছে। তাঁর এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী, চমৎকার এবং এর তাৎপর্য অপরিসীম। এই সিদ্ধান্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা- সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ইনসাফের পক্ষের। থেমিস দেবীর মূর্তি অপসারণের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসী অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। বিবৃতিতে মুফতী ফয়জুল্লাহ আরো বলেন, থেমিস দেবী অপসারণের দাবী শুধু হেফাজতের কিংবা ইসলামী শক্তির ছিলো না। থেমিস অপসারণ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীসহ বাংলাদেশের গণমানুষও। রাষ্ট্র ও সমাজের শৃঙ্খলা ও শান্তি নিশ্চিত করা এবং নাগরিকদের পারস্পরিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য থেমিস দেবীর মূর্তি অপসারণ অপরিহার্য ছিল। এই দাবীতে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ।
ইশা ছাত্র আন্দোলন
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন নেতৃবন্দ বলেন, তাওহিদী জনতার দাবির ভাষা উপলদ্ধি করে মূর্তি অপসারণের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে মুবারকবাদ জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, জনবিচ্ছিন্ন একদল মূর্তির পক্ষের অপশক্তি মূর্তি অপসারণের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে তা কোনভাবেই বরদাশত করা যায় না।
গতকাল বাদ জুম’আ বায়তুল মুকাররম উত্তর গেইট এলাকায় মূর্তি অপসারণের বিরুদ্ধে অপশক্তির ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জি. এম. রুহুল আমীন এ কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মূর্তি নির্মাতা মৃণাল হক ঢাকাকে মূর্তির নগর বানাতে চায় যা গতকাল রাতে তার বক্তব্য থেকে বুঝা গেছে। আমাদের প্রশ্ন এই মূর্তি নির্মাণ ও স্থাপনে দেড় কোটি টাকার উৎস কোথায় তা বের করতে হবে। সে যে উৎস থেকে টাকা পেয়েছে সে উৎস থেকে জঙ্গিবাদের টাকা দেয় কিনা তা তা খুঁজে বের করে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঢাকা শহরে যত মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে তার মূল নায়ক মৃনাল হককে এদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। বক্তারা বলেন, মূতি পুন:স্থাপন, মূর্তির পক্ষে যারা কথা বলবে তাদের প্রতিহত কর হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শাইখ ফজলুল করীম মারুফ, সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুহা. হাছিবুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম. এমদাদুল্লাহ ফাহাদ, তথ্য-গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক মুহা. ইলিয়াস হাসান প্রমুখ। আজ ২৭ মে সারাদেশে মূর্তির পক্ষের অশুভ শক্তির ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
গ্রীক দেবীকে অন্য জায়গাতেও স্থান দেয়া যাবে না -আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
হাটহাজারী উপজেলা সংবাদদাতা : সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে গ্রীক দেবি থেমিসের মূর্তি অপসারিত হওয়ায় মহান আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, গণমানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী গ্রীক দেবী থেমিসকে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার পর লাগাতার প্রতিবাদী আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণ নানা কর্মসূচীর পর গত মধ্যরাতে অপকৃষ্ট এই আবর্জনা অপসারিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। এতে করে আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউরোপের ইতিহাসকে বাংলাদেশে আত্মীকরণ করানোর অপচেষ্টা পরাজিত হয়েছে। থেমিস অপসারণে বাংলাদেশের উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতাসহ সর্বস্তরের গণমানুষের ন্যায় ভিত্তিক লড়াইয়ের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে থেমিসের ভাস্কর্য অপসারণের পর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এই প্রতিক্রিয়া জানান।
বিবৃতিতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরো বলেন, হেফাজতে ইসলামের থেমিস সরানোর দাবীর সাথে বাংলাদেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বহু মানুষ ও সংগঠন একাত্ম হয়ে স্বকীয় বিশ্বাস, আদর্শ ও চিন্তার ভিত্তিতে থেমিসের অপসারণ চেয়েছে। আমরা রাজপথের লড়াইয়ের সকল সহযোদ্ধাদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।
বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, গত রাতে গ্রীক দেবীকে সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে অপসারণের কোন কোন খবরে আমরা দেখলাম, উৎপাটিত থেমিসকে নাকি আদালতের এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হবে।
এ পর্যায়ে হেফাজত মহাসচিব বলেন, এ বিষয়ে সকল মহলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে, এই গ্রীক প্রতীক, যেটা আমাদের দেশে একটা আবর্জনার মতোই, সেটাকে চিরতরে পরিত্যাগ করতে হবে। এই ভাস্কর্য যা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্থাপিত হয়েছিল, তাকে বাংলাদেশের কোথাও কোনভাবেই স্থান দেয়া যাবে না। এমন ভুল পদক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, সংশ্লিস্টদের এমন পুনঃআত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে হেফাজত জোরালোভাবে নিরুৎসাহিত করতে চায়।
বিবৃতির শেষ দিকে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, থেমিস উৎপাটনে যারা রাজপথে লড়াই করেছেন, ভার্চুয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন, তাঁদের সকলকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই। ইসলাম, দেশ ও জাতির স্বার্থে যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে ভবিষ্যতে আমাদের ঐক্য এবং সংহতি আরো দৃঢ় হোক, আল্লাহ্র দরবারে এই কামনা করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।