Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা

সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি সওজের ঠিকাদাররা

| প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম



বিশেষ সংবাদদাতা : সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে (সওজ) ঠিকাদারীকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলছে সন্ত্রাসীদের মহড়া। সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ, একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেট একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে মহড়া দিচ্ছে।  এতে করে যেকোন মুহূর্তে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ, বাবর ও তার ভাই মাহী দীর্ঘদিন যাবত সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ঢাকা জোন, সার্কেল ও ডিভিশনের সকল ঠিকাদারী এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। ইজিপি টেন্ডার হওয়া সত্তে¡ও বাবরের নির্দেশের বাইরে কেউ কাজ পাচ্ছেনা। সাধারণ ঠিকাদাররা সমিতির সদস্য হওয়া সত্তে¡ও প্রায় দুই বছর যাবত কাজ বঞ্চিত রয়েছে। চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে তারা। এর প্রতিবাদে সম্প্রতি তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সূত্র জানায় ,ঢাকা জোনে প্রায় ৭শ’ ঠিকাদার রয়েছে। এর মধ্যে সড়ক ও জনপথ ঠিকাদার সমিতির সদস্য সংখ্যা ১৩০ জন। কিন্তু গুটিকয়েক ঠিকাদার ছাড়া ওই সিন্ডিকেট কাউকেই কাজ দেয়না। টেন্ডারে অংশ নিতে গেলে নানারকম হুমকি ধমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়। একজন ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, যেকোন কাজের নোটিস হওয়ার পরপরই ঐ এলাকার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের হুমকি দেয়া শুরু হয়। এলেনবাড়িতে সমিতি অফিসে ডেকে এনে সন্ত্রাসী ও প্রশাসন দিয়ে নানাভাবে নাজেহাল করে। সেখানে সমিতি অফিস ছাড়াও আরও দু’টি গোপন কক্ষ রয়েছে। ঐ কক্ষে সন্ত্রাসীরা দিন-রাত নেশা করে। সেখানেই সাধারণ ঠিকাদারদের ওপর চলে নির্যাতন।
চিহ্নিত ওই সিন্ডিকেট সওজ প্রকৌশলীদেরকেও একরকম জিম্মি করে রেখেছে। সিন্ডিকেটের সাথে আলোচনা করেই প্রকৌশলীদের ইস্টিমেট তৈরী করতে হয়। ঐ ইস্টিমেটের পেছনে যার নাম লিখে দেয়া হয় শুধু ঐ ঠিকাদারকেই প্রকৌশলীরা ইস্টিমেট সরবরাহ করে। অন্যরা চাইলে নানা টালবাহানা করতে থাকে এবং সমিতির অফিসে যোগাযোগ করতে বলে। যেসব ঠিকাদার প্রভাবশালীদের তদবির নিয়ে যায় তাদের ভুয়া ইস্টিমেট দেয়া হয়। এতে সে আর কাজ পায়না। ইস্টিমেট পাস হওয়ার আগেই সিন্ডিকেট ১০ পারসেন্ট নিয়ে কাজ বিক্রি করে।
শরিফুল নামে এক ঠিকাদার বলেন, গত দুই বছর ধরে ঢাকা জোন, সার্কেল ও ডিভিশনে যত টেন্ডার হয়েছে সব টেন্ডারেই একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান সিডিউল জমা দিয়েছে। এখন সাধারণ ঠিকাদারদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা আর পারছিনা। তাই আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মাঠে নেমেছি। গত ১৭ এপ্রিল প্রথম এই নিয়ম ভাঙ্গা হয়েছে। সিন্ডিকেটের  হুমকি সত্তে¡ও দুই গ্রæপ টেন্ডারে ৫টি করে ১০টি সিডিউল জমা দেয়া হয়েছে। এরপর থেকেই সন্ত্রাসী দিয়ে আমাকে এবং অন্য ঠিকাদারদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। বনানী ও এলেনবাড়িতে দিন-রাত সন্ত্রাসীরা মহড়া দিচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মিথ্যা জিডি করা হয়েছে।
জামান নামে এক ঠিকাদার বলেন, সমিতির ১৩০ জন ঠিকাদারের মধ্যে মাত্র ৪ জন ঠিকাদার কাজ পাচ্ছে। বাকিরা সবাই বঞ্চিত। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। কিন্তু এরপর থেকেই সাধারণ ঠিকাদারদের প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় এক সহকারী প্রকৌশলীকেও সন্ত্রাসীরা লাঞ্ছিত করেছে। আমরা বকেয়া বিলের জন্যও যেতে পারছিনা। বকেয়া বিল নিতেও নাকি সিন্ডিকেট ও সমিতিকে ঘুষ দিতে হবে। তা নাহলে কোন বকেয়া বিল পাওয়া যাবেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিন্ডিকেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ