বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
টিসিবি’র ৪টি পণ্য বিক্রী কার্যক্রমে বাজারে কোন প্রভাব নেই অর্ধেক ডিলারই পণ্য তোলেনি
নাছিম উল আলম : রামজান ঘনিয়ে আসার সাথে দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে চালসহ নিত্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির দামামা বাজতে শুরু করেছে। অথচ রোজার মাসে চালের চাহিদা কম থাকে। উপরন্তু বাজার এখন নতুন বোরো চালে সয়লাব। কিন্তু গত তিন মাসে মাঝারী থেকে সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫টাকা থেকে ১৫টাকা পর্যন্ত। একইসাথে মাছ-গোশত, সবজি থেকে শুরু করে রোজার ইফতার সামগ্রীর সব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রবনতাও লক্ষনীয়। ফলে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নির্ধারিত আয়ের মানুষের কষ্ট ক্রমশ বাড়ছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য সংস্থা-টিসিবি মাত্র সিমিত কিছু ডিলারের মাধ্যমে ৪টি পণ্য বিক্রী কার্যক্রম শুরু করলেও তা পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তেমন কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না। অর্ধেক ডিলারও টিসিবি’র পণ্য না তোলায় তা ভোক্তাদের কাছে পৌছছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৫ মে থেকে সিমিত কিছু ট্রাকের মাধ্যমে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় ছোলাবুট, মুশুর ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো বেশীরভাগ এলাকাতেই সরকারী এ বাণিজ্য সংস্থাটির পণ্য পৌছেনি। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় এ বাণিজ্য সংস্থাটি সুগার মিল করপোরেশনের যে চিনি বিক্রী করছে তা অত্যাধিক মাত্রায় ভেজা হওয়ায় ক্রেতারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। সংস্থাটি বরিশাল বিভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৮টি জেলায় ১২১জন ডিলার নিয়োগ করলেও তার অর্ধেকও এখন পর্যন্ত কোন সাড়া দেয়নি। বরিশাল মহানগরী হাতে গোনা কয়েকজন ডিলার ছাড়াও ৫টি ট্রাকে করে টিসিবি’র ৪টি পণ্য বিক্রী করার কথা। কিন্তু ডিসি অফিস ও নিকট দুরের নগর ভবনও সংলগ্ন জজকোর্টরে সামনে দুটি ট্রাক ছাড়া অন্যগুলোর দেখা মিলছে না। বাণিজ্যমন্ত্রীর নিজ জেলা ভোলাতে মাত্র ১টি ট্রাকে পণ্য বিক্রী চলছে। বরগুনা সদরসহ অন্য উপজেলাগুলোতে কোন ডিলার পন্য উত্তোলন করেনি। শুধুমাত্র বেতাগীতে একজন ডিলার কিছু পণ্য বিক্রি করছেন। এছাড়া ঝালকাঠী ও পটুয়াখালীতেও ১ জন করে ডিলার ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করছেন।
এসব কারণেই এবারো দক্ষিণাঞ্চলে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য সংস্থাটি বাজার নিয়ন্ত্রণে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। গত বছরের মত এবারো দক্ষিণাঞ্চলে খেজুর বিক্রি করছে না টিসিবি।
এবার শবে বরাতের আগে থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র নিত্য পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। চিনির দাম বেড়ছে আরো ছয় মাস আগে থেকেই। বর্তমানে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে খোলা চিনি বিক্রী হচ্ছে ৬৮-৭০টাকা কেজি দরে। প্যাকেটজাত চিনির দাম আরো ৫টাকা বেশী। খোলা বাজারে ছোলাবুটের কেজি ৮৫Ñ৯০টাকা কেজি। গত ২০ এপ্রিল থেকে ৪ দিনের লাগাতর ভয়াবহ বর্ষনে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন সবজি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বাজারে সরবারহ ঘাটতির সাথে মূল্যবৃদ্ধিও ঘটে। বাজারে এখন ৪০টাকা কেজির নিচে কোন ধরনের সবজি মিলছে না। কাকরোল সহ অনেক নতুন সবজি ৬০টাকা কেজি দরেও বিক্রী হচ্ছে। বেগুন ইতোমধ্যে ৫০টাকা ছুয়েছে। রোজার শুরুর সাথে এ মূল্যবৃদ্ধি কোন পর্যায়ে যাবে তা বলতে পারছেন না বাজার পর্যবেক্ষকগন। শসার কেজিও ৩০টাকার ওপরে।
রোজাকে সামনে রেখে গত দুমাসে দক্ষিণাঞ্চলের পাইকারী বাজারে পেয়াজ, আদা ও রসুনের দামও বেড়েছে । বরিশালের বাজারে এখন দেশী পেয়াজ ২৮টাকা এবং আমদানীকত পেয়াজ ২৪-২৫টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৮০টাকা কেজীর দেশী রসুন ইতোমধ্যে ১২০টাকা ছুঁয়েছে। আদার দামও গত এক মাসে কেজিতে ২০টাকা বেড়েছে।
অপরদিকে গত কয়েকমাস ধরে গরুর গোশত ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে। আসন্ন রমজা থেকে ঈদে তা কেজিতে আরো অন্তত ৫০টাকা বৃদ্ধির আশংকা করছেন পর্যবেক্ষকগন। মাছের দামও ক্রমশ আকাশ ছয়েছে। দেশী জিয়ল মাছ উধাও হয়েছে আরো মাস দুয়েক আছে। গত এক মাসে খুচরা পর্যায়ে মাছের দাম বেড়েছে ৫০-৭০ভাগ পর্যন্ত। ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগীর দামও ক্রমশ বাড়ছে।
সব মিলিয়ে গোটা দক্ষিণাঞ্চল জুড়েই নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রবনতা সাধারণ মানুষকে চরম দূর্ভোগে ফেলেছে। নিত্য পণ্যেও দাম নিয়ে এ অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ এখন যথেষ্ঠ কষ্টে আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।