Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এপেক) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু

বিশ্ববাণিজ্যের পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন এপেক

| প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদ, নাফটার ভবিষ্যত্ ও টিপিপি নিয়ে শঙ্কার মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমন্বয় বিষয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এপেক) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে গত শনিবার বৈঠক শুরু হয়। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিয়াল দায়িত্ব গ্রহণের পর বাণিজ্য-বিষয়ক সবচেয়ে বড় বৈঠক এটি। বৈঠকের প্রথম দিন বিশ্ব বাণিজ্যের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে এপেকের সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রীরা। বৈঠকের উদ্বোধন করেন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন হুয়ান ফুক। তিনি তিন দশকে এপেকের প্রবৃদ্ধির পেছনে এ অঞ্চলের দেশগুলোর উদারীকরণ প্রচেষ্টার অবদান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এবারের বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্যের প্রতি সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে। সভার খসড়া বিবৃতিতে বলা হয়, বেশকিছু গোষ্ঠী বিশ্বায়ন ও মুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন তুলে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারা সংরক্ষণবাদী প্রবণতার প্রচার করছে। এ প্রেক্ষাপটে মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উদারীকরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে এপেক। এদিকে প্রথমবারের মতো এপেক বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটিজার। মার্কিন কর্মসংস্থান সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ওয়াশিংটনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (নাফটা) পুনর্বিবেচনার কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। স¤প্রতি নাফটা নিয়ে পুনরায় পর্যালোচনা ও সংস্কারের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নাফটার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে এশিয়ার সরকারগুলো। হ্যানয়ে এক সাক্ষাত্কারে মালয়েশিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী মোস্তফা মোহামেদ বলেন, আমেরিকা একটি অবাধ, উদার বাণিজ্য পরিবেশের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কিনা, আমরা সবাই তা জানতে আগ্রহী। প্রথম বৈঠকেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছ থেকে সংরক্ষণবাদ এবং ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট বাকি বিশ্বকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, সে বিষয় নিয়ে পরিষ্কার ধারণা আশা করছেন। গত বৃহস্পতিবার নাফটা পুনরালোচনা শুরুর জন্য কংগ্রেসকে ৯০ দিনের নোটিস পাঠিয়েছেন লাইটিজার। নির্বাচনী প্রচারণার সময় নাফটার বাকি দুই অংশীদার মেক্সিকো ও কানাডা চুক্তির অন্যায্য সুবিধা ভোগ করছে বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের মতে, নাফটার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ কর্মসংস্থান ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি নাফটা থেকে নাম প্রত্যাহারের হুমকিও প্রদান করেন ট্রাম্প। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম কাজগুলোর মধ্যে একটি ছিল ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) নামে পরিচিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১২ জাতির বাণিজ্য চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনা। হ্যানয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি টিপিপি চুক্তি নিয়ে বাকি ১১টি দেশের মধ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই টিপিপি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া টিপিপি এগিয়ে নিতে আগ্রহী নয় মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ান বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, টিপিপি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার হতে চায় তার দেশ। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশ দুটির মধ্যে কোনো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নেই। টিপিপি নিয়ে বাকি দেশগুলোর আগ্রহের বিষয়ে মোহামেদ জানান, চুক্তি নিয়ে দেশগুলোর আগ্রহের ভিন্নতা রয়েছে। কিছু দেশ টিপিপি নিয়ে অতি উত্সাহী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। দেশগুলোর টিপিপি চুক্তিতে অংশগ্রহণের পেছনে একটি বড় কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ায় এমনটি আর হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক দেশই চুক্তির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া টিপিপি এগিয়ে নিতে চুক্তির শর্তের উল্লেখযোগ্য সংশোধন প্রয়োজন পড়বে। এজন্য টিপিপি স্বাক্ষরকারী অন্তত ছয়টি দেশের অনুমোদন প্রয়োজন হবে, যেগুলোর ৮৫ শতাংশ অবদান রয়েছে সামষ্টিক জিডিপিতে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যেখানে জিডিপির ৬০ শতাংশে অবদান রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একার। রয়টার্স, এএফপি, বøুমবার্গ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ