পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এবার প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশে ২০১৯ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ আগামী অর্থবছরের জন্য অর্থনীতিতে ছয়টি ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে বিশ্ব ব্যাংক। এরমধ্যে তিনটি অভ্যন্তরীণ ও তিনটি বৈশ্বিক। একই সঙ্গে কাক্সিক্ষত ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ রিপোর্টে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে বিশ্ব ব্যাংক। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক কার্যালয়ে রিপোর্টটি প্রকাশ উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান, লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন ও সিনিয়র ডাইরেক্টর কার্লোস ফিলিপে হ্যারমিলো উপস্থিত ছিলেন।
রিপোর্টে বলা হয়, আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও সরকার ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী বছর অর্থনীতিতে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঝুঁকির মধ্য রয়েছে, আর্থিক খাতের অস্থিতিশীলতা, আর্থিক খাতের সংস্কার ও ২০১৯ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা।
এ ছাড়া বাহ্যিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, আমেরিকা ও ইউরোপীয় অঞ্চলে বাণিজ্যনীতি নিয়ে অনিশ্চিতা, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কঠোরতা।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে তুলে ধরে বলা হয়, মূলত রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হ্রাস এবং রেমিটেন্সের পতনের কারণে এবার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি গতবছরের তুলনায় কম হবে।
জাহিদ হোসেন বলেন, “সার্বিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমি বলতে চাই, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রতিকূল হাওয়া বইছে। তবে স্থিতিশীলতা বজায় আছে।”
বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের এই মূল্যায়নকে বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ মূল্যায়ন হিসেবে মত দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল এনইসি সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের প্রক্ষেপণ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এমন বক্তব্য দেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) যেখানে বাংলাদেশ রপ্তানিতে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল, এবার একই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। আর ওই সময়ে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স কমেছিল ২.৫ শতাংশ; এবার কমেছে ১৬ শতাংশ।
গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করে। এরপর গত জুনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করা হয়।
অনুষ্ঠানে চিমিয়াও ফান বলেন, জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আদায়ের হার বাংলাদেশে কম। সেদিক থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব আয় বাড়বে এবং রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি অনেক কমেছে। গত বছর আড়াই শতাংশের মতো কমলেও চলতি অর্থবছর সেটি কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশের মতো। তা ছাড়া গত বছর মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স কমলেও চলতি অর্থবছর আমেরিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকেও রেমিট্যান্স কমেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে কমেছে। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়লেও সেটি ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না, সেটি দেখার বিষয়। কেননা, বিনিয়োগ কোথায় গেছে তা দেখা যাচ্ছে না।
মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল ও স্বস্তিদায়ক হলেও চালের দাম বাড়ায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। যা কিছুটা অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। রিজার্ভের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, রিজার্ভে স্বস্তি আছে। কিন্তু তুষ্টির কোনো কারণ নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনটি বিষয়ে উদ্যোগ নিলে আগামী ১৫ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এগুলো হলো- প্রথমত, শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ ৪৫ শতাংশে উন্নীত করা। এতে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়বে। দ্বিতীয়ত, সরকারি বিনিয়োগে দক্ষতা বাড়ানো এবং অপচয় রোধ করা। এতেও ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়বে। তৃতীয়ত, বিদ্যমান সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বাড়ানো। এতেও ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
প্রতিবেদনে শ্রম খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রতিবন্ধকতা হিসেবে তিনটি কারণের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো- পারিবারিক দায়িত্বের আধিক্য, মানবসম্পদের দক্ষতার ঘাটতি, বিভিন্ন পেশার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত বৈষম্য।
প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত শ্রম খাতে নারীর অংশগ্রহণ ৩৫ শতাংশ হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০ সালের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ ৪৫ শতাংশ হতে পারে যা সার্বিকভাবে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।