পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিট্যান্স প্রবাহের ক্ষেত্রে ২০২০ সালে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন সদর দপ্তর থেকে গত শুক্রবার প্রকাশিত ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস থ্রো মাইগ্রেশন লেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, এ বছর করোনার মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশের রেমিট্যান্স বাড়বে। যার মধ্যে বাংলাদেশের বাড়বে ৮ শতাংশ। মূলত ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক থেকে প্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় কোভিডের মধ্যেও রেমিট্যান্স বাড়বে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসবে ২০ বিলিয়ন ডলার। পরিমাণের দিক থেকে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অষ্টম। প্রথমে রয়েছে ভারত ৭৬ বিলিয়ন ডলার, দ্বিতীয়তে চীন ৬০ বিলিয়ন ডলার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে মেক্সিকো ৪১ বিলিয়ন ডলার। শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের আগে দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি দেশ রয়েছে। সেটি হলো ষষ্ঠ অবস্থানে পাকিস্তান। দেশটির রেমিট্যান্সের পরিমাণ হতে পারে ২৪ বিলিয়ন ডলার।
ভারত পরিমাণের দিক থেকে শীর্ষে থাকলেও এ বছর দেশটির রেমিট্যান্স ৯ শতাংশ কমবে। আর সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার রেমিট্যান্স কমবে ৪ শতাংশ। অবশ্য দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি দেশ পাকিস্তানের ৯ শতাংশ বাড়বে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০২০ সালে সামগ্রিকভাবে বিশ্বে রেমিট্যান্স কমবে সাত শতাংশ। তবে, মোট দেশজ উৎপাদনের জিডিপির অনুপাতে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স আহরণের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ। যা জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। এক্ষেত্রে প্রথমে রয়েছে নেপাল ২৩ শতাংশ, দ্বিতীয়তে পাকিস্তান ৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং তৃতীয়তে শ্রীলংকা ৮ দশমিক ২ শতাংশ।
এদিকে, রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে একের পরে এক রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। প্রথমবার ৪১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৪১ দশমিক শ‚ন্য ৩ বিলিয়ন বা চার হাজার ১০৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ তিন লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা ছাঁড়িয়েছে (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে)। এর আগে গত ৮ অক্টোবর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন অতিক্রম করেছিল।
প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুত রাখা হয়। এই বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে ১০ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়।
চলমান করোনাভাইরাসের তান্ডবে বড় ধাক্কা খেয়েছে দেশের আমদানি খাত। ব্যবসা, ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশীদের বিদেশ যাত্রাও প্রায় বন্ধ। অন্যদিকে রেমিট্যান্সে বড় উল্লম্ফনের পাশাপাশি রফতানি খাত ঘুরে দাঁড়ানোয় ক্রমেই বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। একই সময়ে রফতানি আয়ে ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুটি উৎস ইতিবাচক ধারায় থাকলেও ব্যয়ের খাত সংকুচিত হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় কম হওয়ায় সরকারের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ৩৫৩ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত থেকেছে। যদিও কয়েক বছর ধরে চলতি হিসাবে বড় ঘাটতি ছিল।
গত ৩ জুন দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২৪ জুন সেই রিজার্ভ আরো বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ৩০ জুন রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২৮ জুলাই রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরও অতিক্রম করে। তিন সপ্তাহ পর গত ১৭ আগস্ট রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। পরে তা আরো বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ বিলিয়ন ডলারে। ৮ অক্টোবর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকও ছাড়িয়ে যায়। উন্নতির এ ধারাবাহিকতায় অক্টোবর শেষ হওয়ার আগেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। রফতানিও বেড়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে। তবে সামনে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করলে রিজার্ভ কিছুটা কমে যাবে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইরান ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।