Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাঁদা না দেয়ার জের মির্জাপুরে সংখ্যালঘুর দোকানে তালা দিয়েছে যুবলীগ কর্মীরা

প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মির্জাপুর উপজেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চাঁদার দাবিতে এক নিরীহ সংখ্যালঘুর দোকানে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছে যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। না জানিয়ে জমি বিক্রির অপরাধে ওই নিরীহ পরিবারের দোকান ঘরে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
পরিবারটি ওই সন্ত্রাসীদের ভয়ে আইনী ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকী ধমকী দিচ্ছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। শুক্রবার ঘটনাস্থল মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের ছাওয়ালী বাজারে গিয়ে জানা গেছে, ওই বাজারের বাসিন্দা জীতু রবি দাস পূর্ব পুরুষের আমল থেকেই নগর ছাওয়ালী মৌজার ১৩৪ নম্বর খতিয়ানের ২৬০ দাগের ৫ শতাংশ জায়গায় বসবাস করছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রায় পাঁচ বছর আগে তাঁর মেয়ের ঘরের নাতি বিপুল রবি দাসের নামে পাঁচ শতাংশ জায়গা লিখে দিয়ে সেখানেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এর মধ্যে দোকান পজেশনে থাকা প্রায় এক শতাংশ জায়গা পার্শ্ববর্তী ভাতকুড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম কাপড়ের দোকান দিতেন। সিরাজুল সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর নাতনীর বিয়ের কারণে প্রায় তিন মাস আগে জীতু রবি দাস পার্শ্ববর্তী ভাতকুড়া গ্রামের হুমায়ুন কবিরের কাছে দোকান পজেশনের প্রায় আধা শতাংশ (৯ ফুট বাই ১০ ফুট) জায়গা দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া সিরাজুলকে পুরাতন টিনের ঘরের মূল্য বাবদ এক লাখ টাকা দেওয়া হয়।
এদিকে স্থানীয় যুবলীগ নামধারী বাবু, আফছার, শাহীন, মহেড়া ইউনিয়ন আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী নবীন ও আফছারের বাবা আশ্রম মিলে তাঁদের না জানিয়ে জায়গা বিক্রির অপরাধে জীতুর দোকান ঘরে তালা ঝুঁলিয়ে দেন। এছাড়া তারা তাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
জীতুর মেয়ে মায়া রবি দাস ও তাঁর স্বামী বাবুল রবি দাস জানান, জায়গা বিক্রির দিন থেকেই সন্ত্রাসীরা তাদের নানাভাবে হুমকী দিচ্ছে। ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। সন্ত্রাসীদের ভয়ে বড় মেয়েকে টাঙ্গাইলের আদালতে নিয়ে বিয়ে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে হুমায়ুন কবির জানান, তিনি দুই লাখ টাকায় জমি কিনেছেন। সেই সাথে সিরাজুলকে ঘর বাবদ এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি দীর্ঘ দিন ওই জমিতে ঘর তুলে কাপড়ের দোকান করেছেন। জায়গাটি জীতুর হওয়ায় জায়গা ছেড়ে দিয়েছি এবং ঘর বাবদ এক লাখ টাকা নিয়েছি। যারা ঘরে তালা দিয়েছে তারা অন্যায় কাজ করেছেন। শাহীন ও ইউসুফ আলী নবীন জানান, তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তবে ওই পরিবারের বিপদে আপদে আমরা সব সময় তাদের পাশে ছিলাম। আমাদের না জানিয়ে জমি বিক্রি করায় ক্ষোভে ছেলেরা তালা দিয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
মির্জাপুরের মহেড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিভাস চন্দ্র সরকার নুপুর জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তিনি সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে বলেছেন। তাছাড়া সামনে নির্বাচন থাকায় আমি এ মুহুর্তে কিছু করতে পারছিনা বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে তিনি কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাঁদা না দেয়ার জের মির্জাপুরে সংখ্যালঘুর দোকানে তালা দিয়েছে যুবলীগ কর্মীরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ