Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্দান্ত আলভেস, অজেয় জুভেন্টাস

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাসের ফাইনাল ভাগ্যটা বলতে গেলে লেখা হয়ে গিয়েছিল সেমিফাইনালের প্রথম লেগেই, মোনাকোর মাঠ থেকে ২-০ গোলের জয় ছিনিয়ে আনার পর। পরশু ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে ফ্রেঞ্চ ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেটা দাপ্তারিক নিয়মে শেষ করলো ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। গত তিন বছরে এটি তাদের দ্বিতীয় ফাইনাল।
দুই লেগ মিলে জুভাদের জয়টা ৪-১ ব্যবধানের। বিজয়ী দলের চার গোলেরই উৎসমুখ ছিলেন সাবেক বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাক দানি আলভেস। প্রথম লেগে গঞ্জালো হিগুয়েইনকে দিয়ে করিয়েছিলেন দুই গোল। এবার ঘরের মাঠে মারিও মানজুকিচকে দিয়ে করালেন প্রথম গোলটি। পরে বিরতির আগেই ২৫ গজ দুর থেকে দুর্দান্ত ভলিতে নিজেই স্কোর বোর্ডে নাম লেখান আলভেস। বিরতির পর মোনাকোর হয়ে একটি গোল শোধ দেন ১৮ বছর বয়সী তরুন তুর্কী স্ট্রাইকার কাইলিয়ান এমবাপ্পে। এই মৌসুমে এটি তার ষষ্ঠ গোল। এই গোলের মাধ্যমে আসরের সেমিফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সী গোলদাতাও বনে যান এমবাপ্পে।
চলতি মৌসুমে ঘরের মাঠে অজেয় জুভেন্টাস, গড়েছে টানা ৫১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড। বিশ্বের সেরা আক্রমণ নিয়েও কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেনি বার্সেলোনা। আসরে টানা ৬২১ মিনিট গোল না খাওয়ার রেকর্ডও চোখ রাঙ্গাচ্ছিল মোনাকেকে। তারুণ্য নির্ভর মোনাকোর অভিজ্ঞ জুভাদের বিপক্ষে দুই গোলের ঘাটতি পুরণ করা নিয়ে তাই শংশয় ছিলই। এমবাপ্পের গোল জুভেন্টাসের ৬৯০ মিনিট গোল না খাওয়ার রেকর্ডে তাই কেবল যতি চিহ্নই বসাতে পেরেছে, নিজেদের ভাগ্য নতুনভাবে লেখা যায়নি।
এই নিয়ে রেকর্ড নবমবারের মত ইউরোপের সর্বোচ্চ লীগ আসরের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো দুইবারের চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী ৩ জুন কার্ডিফের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষের নামটিও নিশ্চয় জেনে গেছেন ইতোমধ্যে। গত রাতেই দ্বিতীয় লেগের সেমিফাইনালের অপর ম্যাচে মাদ্রিদের দুই দল রিয়াল ও অ্যাটলেটিকো মুখোমুখি হয়েছিল ভিসেন্তে ক্যালডেরনে। তার মানে আবারো স্প্যানিশ প্রতিপক্ষের সামনেই পড়তে হচ্ছে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে।
ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিট দুর্দান্তই খেলেছে মোনাকো। এরই মধ্যে অবশ্য সফরকারীদের দর্শক বানিয়ে একের পর এক আক্রমন চালায় জুভেন্টাস। মোনাকো গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সুবাসিচ ওমন দেয়াল হয়ে না দাঁড়ালে এরই মধ্যে দলকে সহজেই এগিয়ে নিতে পারতেন মানজুকিচ, পাওলো দিবালা ও তার আর্জেন্টাইন সতীর্থ গঞ্জালো হিগুয়েইন। তবে ৩৩ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। বুফনের থ্রো থেকে দিবালা বল বাড়িয়ে দেন ডানি আলভেসকে। ডান দিক থেকে আলভেসের মাপা ক্রস খুজে নেয় মানজুকিচের মাথা। তার হেডার আবারো ফিরিয়ে দেন সুবাসিচ, কিন্তু ফিরতে বল দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় জালে পাঠান ক্রোয়েশিয়ান তারকা। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পরই মোনাকোর তরুন দলটির শারিরীক ভাষায় পরিশ্রান্ত ভাব ধরা পড়ে। বিরতির ঠিক আগে আলভেসের বুলেট গতির ভলি ফেরানোর কোন উপায় ছিল না সুবাচিচের। ওভানেই ঠিক হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। ৬৯তম মিনিটে পর্তুগীজ মিডফিল্ডার হুয়াও মোটিনহোর সহায়তায় এমবাপ্পের একমাত্র গোল মোনাকোর জন্য কেবল সান্তনা হয়েই থাকলো।
স্বপ্নের শিরোপা আর মাত্র এক থাপ দূরে। এই অবস্থা থেকে আর খালি হাতে ফিরতে চায় না জুভেন্টাস। জুভা কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রিও দাবি করেছেন শিরোপা জেতার যথার্থ যোগ্যতা রয়েছে তার দলের, ‘আমার মনে হয় এটাই শিরোপা জেতার মোক্ষম সময়। জুভেন্টাসের সেটা করার ক্ষমতা অবশ্যই আছে।’ একই সুরে কথা বললেন অধিনায়ক বুফনও। ফুটবলের সম্ভব্য প্রায় সব বড় শিরোপা যার সোকেসে, নেই কেবল ছ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি! ১৫ সালের ফাইনালে বার্সার কাছে হারে অনেকেই তার সেই স্বপ্নের শেষ দেখে ফেলেছিলেন। কিন্তু আবারো সেই আক্ষেপ ঘোঁচানোর সামনে দাঁড়িয়ে কিংবদন্তি গোলকিপার। এবার আর তাই খালি হাতে ফিরতে চান না বুফন, ‘আমরা ফাইনালে, কিন্তু শিরোপা জিততে না পালে ফাইনালে পৌঁছানো কিছুই না।’ শেষ চারের নায়ক আলভেসও বলেছেন, ‘এখনো তো আমরা কিছুই অর্জন করিনি।’
শেষ ১৯৯৬ সাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল জুভেন্টাস। -বাসস

একনজরে ফল
জুভেন্টাস ২ : ১ মোনাকো
দুই লেগ মিলে ৪-১ গোলে জয়ী জুভেন্টাস



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ