পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া গতির কারণে গতকাল যশোরে ঘটে গেল মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনা। দ্রæতগামী যাত্রীবাহী বাসটি ওভারটেক করতে গিয়ে রাস্তা ছেড়ে গাছে ধাক্কা খেয়ে নিহত হলো ৬ জন। আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। হাসপাতাল সুত্র জানায়, আহতদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। নিহত ৬ জনের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন, মাগুরার সদরের রামচন্দ্রপুর গ্রামের অরবিন্দু কুমার রায় (৫২) ও তার স্ত্রী ইতি রানী রায় (৪৫), ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বাদুরগাছা গ্রামের তারাপদ বিশ্বাসের ছেলে রামপ্রসাদ বিশ্বাস (৪২) ও যশোর সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের লোকমান হোসেনের স্ত্রী রিজিয়া খাতুন (৩৫)। আহতদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত হয় বলে আহত বাসযাত্রীরা জানিয়েছেন।
কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আজমল হুদা প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের বারীনগর বাজারের কাছে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়াগামী রূপসা পরিবহন ওভারটেক করতে গিয়ে ডানপাশে কড়াই গাছে ধাক্কা খায় খায়। বাসটি দুমডে মুচড়ে হেগছে। দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ও বাসের সবযাত্রীই আহত হন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা হতাহতদের উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বাসের যাত্রী তানভীর হোসেন জানান, ওই বাসে তারা পরিবারের ছয়জন সদস্য ছিলেন। তারা জীবনে বেঁচে গেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তানভীর হোসেন জানান, বেলা ১২টার দিকে আমরা ছয়জন রূপসা পরিবহনের ওই বাসে উঠি। যশোর থেকেই চালক বেপারোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সাতমাইল এলাকায় পৌঁছলে মেট্রোপলিটন ও জিএম পরিবহনের দুটি বাসকে ওভারটেক করেন। এসময় ওই দুই পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সামনে যেতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় রূপসা পরিবহনের বাসটি। এসময় বাসটি হালকা উঁচু হয়ে রাস্তার ডান পাশে গ্রাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর সবাই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফরিদা ও নাহারের স্বজন কামাল হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় বাস দুমড়ে মুচড়ে গেছে। স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি তার ভাবি ও ভাতিজিকে উদ্ধার করেছেন। ভাতিজি নাহারের পা কেটে ফেলতে হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, চালক বেপরোয়া গতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মহেশপুরের সালাউদ্দিনের অবস্থা আশংকাজনক। তার বোন জানান, তার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সালাউদ্দিন। বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
যশোরের সিভিল সার্জন গোপেন্দ্রনাথ আচার্য জানান, আহতের সার্বিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন রকমের ঘাটতি নেই। হাসপাতালে অন্তত ৪৫জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েজনের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক। হাসাপাতাল পরিদর্শনে এসে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, আহতদের খোঁজ খবর নিয়েছি। তাদের চিকিৎসায় যাতে কোন ত্রæটি না হয়। সেই বিষয়টি দেখছি। ওষুধপত্রের প্রয়োজন হলে আমরা দিচ্ছি। আতংকের কোন কারণ নেই। রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা পাবে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের সেবায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বজন, বাঁধন, সন্ধানীসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্র্মীরা কাজ করছে। এদিকে, দুর্ঘটনার পর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু। তারা রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।